ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২০ মহররম ১৪৪৭
চট্টগ্রাম বই মেলার সমাপনী আজ

‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি এ দেশের অমূল্য সম্পদ’

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি এ দেশের অমূল্য সম্পদ’
চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে অমর একুশে বই মেলা মঞ্চে নৃগোষ্ঠী উৎসবের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধান অতিথি সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন। ছবি : কালের কণ্ঠ

বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি এ দেশের অমূল্য সম্পদ বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. অনুপম সেন। তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক নানা উপাদান এসব জাতিগোষ্ঠীর সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। জাতীয় উন্নয়নের জন্যই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতির বিকাশে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দরকার। দেশের সংখ্যাগুরু মানুষের উচিত সংখ্যায় কম মানুষের সংস্কৃতির বিকাশে এগিয়ে আসা।

ভাষা যদি না থাকে, তবে সংস্কৃতি বিলুপ্ত হবে। তাই প্রয়োজন বাংলাদেশের অনেক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতির সঠিক লালন।

গতকাল সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম সংলগ্ন মাঠে অমর একুশে বইমেলা মঞ্চে নৃগোষ্ঠী উৎসবের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ক্ষুদ্র সংস্কৃতির বিকাশে সামপ্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতা বড় অন্তরায়।

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও জাতিসত্তাসমূহের অধিবাসীদের মধ্যে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চগ্যা, ম্রো, লুসাই, বোম, পাংখোয়া, খুমি, চাক, খেয়াং প্রভৃতি উপজাতি রয়েছে। অসামপ্রদায়িক সংস্কৃতির উপাদান মানুষে মানুষে বিভাজন রুখতে পারে। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর আন্তরিকতা ও উদারতার ধারা অব্যাহত ছিল। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর শাসনামলেই পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বৈদেশিক বৃত্তি মঞ্জুর করা হয়।

অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক ড. আজাদ বুলবুলের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজুরী চৌধুরী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পুরস্কারপ্রাপ্ত গুণীজন মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা, নাবিক ও প্রবাসী কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক সুমন বড়ুয়া, ড. মাসুম চৌধুরী, কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বই মেলা কমিটির আহ্বায়ক কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা কর্মকর্তা উজালা রাণী চাকমা।

অধ্যাপক ড. অনুপম সেন আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ১৯৯৬ সাল থেকে একটি নীতিমালার আলোকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে ‘বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত)’ শীর্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা শুরু করা হয় এবং কর্মসূচিটি চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা পূরণে সর্বদা সচেষ্ট।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্যতম অঙ্গীকার হচ্ছে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১৭টি লক্ষ্য থেকে কোনো জাতি গোষ্ঠীই বাদ পড়বে না।

গতকাল এই উৎসবে পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের নৃগোষ্ঠীর গান ও নৃত্যশিল্পীরা অংশগ্রহণ করেন।

এদিকে অমর একুশে বইমেলার সমাপনী অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে আজ মঙ্গলবার। এই উপলক্ষ্যে আজ বিকেল ৪টায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী সুবর্ণা মুস্তাফা। এতে সভাপতিত্ব করবেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

আলোচনার পাশাপাশি বইমেলা মঞ্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চিত্রাঙ্কনসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ, অমর একুশ বইমেলা ২০২৩-এ অংশগ্রহণকারী ঢাকা ও চট্টগ্রামের প্রকাশকদের মাঝে সনদ প্রদান ও সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ স্টলকে পুরস্কার প্রদান করবেন প্রধান অতিথি তথ্য ও সমপ্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। এ সব অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হতে যাচ্ছে এবারের অমর একুশের চট্টগ্রাম বই মেলা। শেষ দিনে বই বিক্রি বেশি হতে পারে বলে বিক্রেতারা আশা প্রকাশ করেছেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ