<p>গাজা সিটির পশ্চিমে জাতিসংঘ পরিচালিত দুটি স্কুলে রবিবার ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত ও অনেক আহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাসপাতালের পরিচালক ডা. মারওয়ান আল-হামস সর্বশেষ এ মৃতের সংখ্যা জানিয়েছেন। অন্যদিকে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার তথ্য অনুসারে, হাসান সালামা ও আল-নাসর স্কুলে হামলায় হতাহতদের ৮০ শতাংশই শিশু। আলজাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।</p> <p>দেইর এল-বালাহ থেকে আলজাজিরার হানি মাহমুদ জানান, বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত স্কুলগুলো হামলায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গাজায় বাস্তুচ্যুতদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত অধিকাংশ ভবনই স্কুল। কারণ এগুলোই এখন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক লোকের থাকার জন্য একমাত্র বড় জায়গা। আর ইসরায়েল কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই এসব জায়গায় হামলা চালাচ্ছে।</p> <p>এর আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শনিবার একটি স্কুলে বোমা হামলা চালায়। এতে গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান এলাকায় হামামা স্কুলে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়। সেখানেও বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিয়েছিল।</p> <p>রবিবারের হামলার পর প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (পিআরসিএস) নেবাল ফারসাখ আলজাজিরাকে বলেন, হামলাগুলো ‘আবার আরেকটি প্রমাণ, গাজায় কোনো নিরাপদ স্থান নেই। এই দুটি স্কুলে বাস্তুচ্যুত বেসামরিক লোকদের আবাসন রয়েছে, যারা একাধিকবার চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। এখন এমনকি এই হামলার পরও তারা আবার পালাতে বাধ্য হচ্ছে। ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করছে।’</p> <p>এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী প্রমাণ সরবরাহ না করেই দাবি করেছে, ‘স্কুলগুলোকে হামাসের আল ফুরকান ব্যাটালিয়ন তাদের সদস্যদের লুকানোর জায়গা এবং হামলার পরিকল্পনা ও কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করেছিল।’ এ বিষয়ে আম্মান থেকে আলজাজিরার হামদাহ সালহুত বলেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এই দাবিগুলো ‘বারবার’ দেখা গেছে। ‘সামরিক বাহিনী বলে ও দাবি করে, হামাস এই জায়গাগুলো ব্যবহার করছে। কিন্তু আমরা কখনো কোনো প্রমাণ দেখিনি।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘সামরিক বাহিনী দাবি করে, তারা হামলার মাধ্যমে বেসামরিক নাগরিকদের ন্যূনতম ক্ষয়ক্ষতি হবে তা নিশ্চিত করার জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে...কিন্তু আপনি বারবার ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের আহত বা ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ তুলতে দেখেছেন। কোনো সতর্কতা দেওয়া হয় না।’ </p> <p>অক্টোবরে ইসরায়েল গাজা উপত্যকাজুড়ে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কমপক্ষে সাড়ে ৩৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলায় কমপক্ষে এক হাজার ১৩৯ জন নিহত হওয়ার পর যুদ্ধ শুরু হয়েছিল।</p>