<p>ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরের কাছে একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৩০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই খবর দিয়েছে।</p> <p>এ ঘটনায় ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) টেলিগ্রামে বলেছে, খাদিজা স্কুলের ভিতরে হামাসের একটি কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র ছিল। আইডিএফ আরো যোগ করে বলেছে,  হামাস হামলার নির্দেশনা ও পরিকল্পনা এবং অস্ত্র মজুদ করার জন্য একটি গোপন স্থান হিসেবে এ কম্পাউন্ড ব্যবহার করেছিল। </p> <p>তবে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে নিহতরা বেসামরিক নাগরিক এবং তাদের বেশিরভাগই শিশু। বিবিসিও একটি ভিডিও যাচাই করেছে যাতে আহতদের মধ্যে শিশুও ছিল। গাজার সিভিল ডিফেন্স সার্ভিসও জানিয়েছে, স্কুলটিতে বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল।</p> <p>এদিকে টেলিগ্রামে বিবৃতিতে হামাস বলছে, স্কুলটি সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে এমন প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ ‘মিথ্যা’ এবং হামলায় নিহতের মধ্যে বাস্তুচ্যুত, অসুস্থ এবং আহত মানুষ যারা আছেন তারা অধিকাংশই নারী ও শিশু।</p> <p>প্রত্যক্ষদর্শী মোস্তফা রাফাতি বিবিসিকে বলেন, বিস্ফোরণে তার শরীর কেঁপে ওঠে এবং তিনি আঘাত পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তিনি আবার উঠে স্কুলের ভিতরে দৌড়ে গিয়ে ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখতে পান। মানুষের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চারদিকে ছড়িয়ে আছে। তিনি বলেন , ‘আমি হতবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম।’</p> <p>বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে যাচাইকৃত ভিডিওতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নজরে এসেছে। যেখানে দেখা যায়, লোকজন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দিয়ে কম্পাউন্ডের চারপাশে দৌড়াচ্ছে। দুটি রক্তাক্ত শিশুকে কোলে তুলে দৌড়াতে দেখা যায় কিছু পুরুষকে। নারীরা একে ওপরকে ভয়ে জড়িয়ে ধরে রয়েছেন এবং একদল মানুষ আহত ব্যক্তিকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাচ্ছে। আবার কম্বলে ঢাকা একটি লাশ মাটিতে পড়ে থাকতেও দেখা যায়। তবুও আইডিএফর দাবি, হামলার আগে উপযুক্ত ব্যবস্থাসহ বেসামরিক নাগরিকদের ঝুঁকি কমাতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।</p> <p>গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল শনিবার সকাল থেকে দেইর আল-বালাহ এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে আইডিএফ বোমা হামলায় ৫৩ জন নিহত ও ১৮৯ জন আহত হয়েছে।</p> <p>তারা আরো জানিয়েছে, ইসরায়েল গাজায় মাসব্যাপী সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার সময় ৩৯ হাজারের এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করার সময় এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। যুদ্ধ শুরু হয় যখন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েল আক্রমণ করে, প্রায় এক হাজার ২লোককে হত্যা করে।</p> <p>ইইউ পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক্স-এ দেইর আল-বালাহ হামলা নিয়ে লিখেছেন,  ভঙ্গুর জনসংখ্যাকে বারবার স্থানান্তর করতে বলা হচ্ছে, এর মধ্যেই আবার হামলা করা হচ্ছে। এর শেষ দেখা যাচ্ছে না।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘এখনই যুদ্ধবিরতি ঘটতে হবে।’ </p> <p>আইডিএফ আল-মাওয়াসিতে কিছু মানবিক এলাকার মানচিত্র প্রকাশ করেছে। ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযানের আগে মানবিক এলাকার কিছু অংশ খালি করার নির্দেশ দেয়। সরিয়ে নেওয়ার আদেশের পর গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, খান ইউনিসের আশেপাশে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছে।</p> <p>এ ছাড়াও শনিবার পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী নাবলুসের বালাতা শরণার্থী শিবিরে ১৭ বছর বয়সী এবং ২৪ বছর বয়সীকে হত্যা করে। এ ছাড়া সেখানে আরো ২২ জন আহত হয় বলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। </p> <p>সূত্র : বিবিসি<br />  </p>