<p>ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সোমবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার প্রশংসা করেছেন এবং তাদের সাধারণ শত্রু ইসরায়েলের ‘ধ্বংস’ ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির মৃত্যুর ৩৫ বছর স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় ৮৫ বছর বয়সী খামেনি এসব কথা বলেন। খোমেনি ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা, যা মার্কিন সমর্থিত রাজতন্ত্র প্রতিস্থাপন করেছিল।</p> <p>আলী খামেনি বলেন, ফিলিস্তিনি ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলা ছিল ‘জায়নবাদী শাসনের জন্য একটি সিদ্ধান্তমূলক ধাক্কা’। এটি ইসরায়েলকে সে পথে নিয়েছে, ‘যে পথের সমাপ্তি ঘটবে শুধু তাদের ধ্বংসে’।</p> <p>১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে প্রধান শিয়া শক্তি ইরান ইসরায়েল ও সেই দেশের পশ্চিমা মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের তিক্ত শত্রু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ইরান তার প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছে। তবে তেহরান জোর দিয়ে তাদের এই কর্মসূচিকে বেসামরিক উদ্দেশ্যের বলে থাকে। এ ছাড়া ইসরায়েল ও ইরান দীর্ঘকাল ধরে হত্যা ও নাশকতার ছায়া যুদ্ধে লিপ্ত। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইরানের সশস্ত্র মিত্ররা একটি তথাকথিত ‘প্রতিরোধের অক্ষ’ জোট গঠন করেছে।</p> <p>গাজা যুদ্ধের কারণে ইরান ও ইসরায়েল এপ্রিলের মাঝামাঝি যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছিল। তেহরান ইসরায়েলে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল, যার অধিকাংশই বাধা দেওয়া হয়েছে।</p> <p>ইরান বলেছে, তারা ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলার বিষয়ে আগে থেকে অবগত ছিল না। কিন্তু হামলার পর থেকে তারা এর প্রশংসা করেছে।</p> <p>খামেনি বলেছেন, হামলাটি ‘সঠিক সময় ঘটেছে’ এবং ‘মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি বড় আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকে ধ্বংস করেছে’। তার এ বক্তব্য সম্ভবত ইসরায়েল ও আরব শক্তির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের মধ্যস্থতার জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন পদক্ষেপের দিকে ইঙ্গিত করে।</p> <p>তেহরানের কাছে খোমেনির সমাধিতে জড়ো হওয়া হাজার হাজার মানুষের উদ্দেশে বক্তৃতাকারী খামেনি আরো বলেন, ‘জায়নবাদী শাসন বিশ্বের মানুষের চোখের সামনে ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। শিগগিরই বা পরে, যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করতে হবে।’ </p> <p>হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার পর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, সেই হামলায় এক হাজার ১৯০ জন নিহত হয়েছিল, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। পাশাপাশি যোদ্ধারা প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়, যাদের মধ্যে ১২০ জন গাজায় রয়ে গেছে। পাশাপাশি এদের মধ্যে ৩৭ জন মারা গেছে বলে সেনাবাহিনী বলছে। অন্যদিকে হামাস পরিচালিত অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক বোমাবর্ষণ ও স্থল আক্রমণে গাজায় প্রায় সাড়ে ৩৬ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক।</p> <p>সূত্র : এএফপি</p>