<p>ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে নিতে হয় বলে মাত্র একটি দেশের আপত্তিও ২৭ সদস্যের রাষ্ট্রজোটের ঐকমত্যে চিড় ধরাতে পারে। হাঙ্গেরির চরম জাতীয়তাবাদী শীর্ষ নেতা ভিক্টর অরবান সেই ভেটো ক্ষমতা বারবার প্রয়োগ করায় ব্রাসেলসে ক্ষোভ ও বিরক্তি বাড়ছে। দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো দুর্বল করে তোলায় তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ইইউ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে। অথচ তাঁর সম্মতির বিনিময়ে সেই শাস্তি বারবার লাঘব করতে বাধ্য হচ্ছে ব্রাসেলস। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া এমন নেতার প্রভাব-প্রতিপত্তি কমানো সম্ভব নয়।</p> <p>এ ছাড়া ইউক্রেনের জন্য ইইউর চার বছরের দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার পথেও বাধা সৃষ্টি করছেন অরবান। বৃহস্পতি ও শুক্রবার ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে বদ্ধপরিকর শীর্ষ নেতারা। ডিসেম্বরের সম্মেলনে সেই জট ছাড়ানো সম্ভব হয়নি। ফলে পাঁচ হাজার কোটি ইউরো অঙ্কের সেই সহায়তার অভাবে ইউক্রেন কঠিন সমস্যায় পড়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে পরিচিত অরবানের এই মনোভাবের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। একই কারণে অরবান এখনো সুইডেনের ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্তির আনুষ্ঠানিক অনুমোদন না দেওয়ায়ও চাপের মুখে রয়েছেন। বুধবারও হাঙ্গেরির সঙ্গে তহবিলের প্রশ্নে কোনো বোঝাপড়া সম্ভব হয়নি। অরবানের একটি দাবি আংশিকভাবে মেনে নিয়ে ইইউ নেতারা প্রতিবছর ইউক্রেনের জন্য সহায়তা নিয়ে বিতর্কের সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন। তবে প্রতিবার ভেটো প্রয়োগের ক্ষমতা দিতে তাঁরা প্রস্তুত নন।</p> <p><strong><span style="background-color:#ecf0f1;">আরো পড়ুন : </span><a href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/01/29/1358991"><span style="color:#3498db;"><span style="background-color:#ecf0f1;">ইউক্রেনকে ইইউর সহায়তা দেওয়া নিয়ে বাধা দূর হচ্ছে?</span></span></a></strong></p> <p>যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক জটিলতার কারণে ইউক্রেনের জন্য সহায়তা থমকে থাকায় ইইউর সহায়তা ইউক্রেনের জন্য বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। হাঙ্গেরির আপত্তির কারণে এবারও ইইউ যদি সেই তহবিল ইউক্রেনের নাগালে আনতে না পারে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সে দেশ কঠিন সমস্যায় পড়বে। ফলে আনুষ্ঠানিক সহায়তার বিকল্প সন্ধানের চেষ্টা চলছে। জার্মানি ইইউ সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে ইউক্রেনের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরো জোরালো করে সহায়তার পথ খোলা রাখার প্রস্তাব দিচ্ছে। তা ছাড়া ইউরোপিয়ান পিস ফেসিলিটি বা ইপিএফ নামের তহবিলে আরো ৫০০ কোটি ইউরো যোগ করে ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদের সরবরাহ বাড়ানোর প্রস্তাবের কথাও শোনা যাচ্ছে। তবে যথেষ্ট অর্থ থাকা সত্ত্বেও মার্চ মাসের জন্য ১০ লাখ কামানের গোলা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি পালন করা সম্ভব হবে না বলে ইইউ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ইপিএফ তহবিল সম্পর্কেও হাঙ্গেরির সমালোচনা বাড়ছে।</p> <p>এমন পরিস্থিতিতে হাঙ্গেরির ওপর চাপ আরো বাড়ানোর উপায় নিয়েও জল্পনাকল্পনা চলছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে হাঙ্গেরির জন্য যাবতীয় ইইউ সাহায্য বন্ধ করার সম্ভাব্য প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে। অরবান এমন ‘হুমকি’র কড়া সমালোচনা করে সেই উদ্যোগকে ‘ব্রাসেলস ব্ল্যাকমেইল ম্যানুয়াল’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এমন চরম শাস্তির ক্ষেত্রেও ঐকমত্য নিয়ে সংশয় রয়েছে।</p>