<p>বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের আক্রমণে বিপর্যস্ত স্পেন। লিওনেল মেসি থেকে আঁতোয়া গ্রিজম্যান- সবাই এখন গৃহবন্দি। অভূতপূর্ব এই পরিস্থিতিতে ফুটবলাররা যাতে মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত না হন, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিল লা লিগাও। </p> <p>কী সেই ব্যবস্থা? লা লিগা থেকে গণমাধ্যমকে পাঠানো ই-মেলে তুলে ধরা হয়েছে সেই জরুরি ব্যবস্থা। যেখানে বলা হয়েছে, কী ভাবে এই রকম একটা ভয়ঙ্কর এবং অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মোকাবিলা করবে ফুটবলাররা।  </p> <p>লা লিগা ক্লাবগুলোর সঙ্গে জড়িত মনোবিদরা যা যা পরামর্শ দিলেন। যেমন-<br /> <strong>নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলা</strong><br /> মনোবিদদের মতে, ফুটবলাররা যন্ত্রের মতো রুটিন মেনে চলেন। বিশেষ করে যখন সেই রুটিন তৈরি করে দেন ক্লাবের কোচ, ট্রেনাররা। সেই রুটিন কোনও কারণে ভেঙে গেলে মানসিক সমস্যায় পড়তে পারেন ফুটবলাররা। <br /> সেভিয়া এফসি অ্যাকাডেমির সাইকোলজি বিভাগের কো-অর্ডিনেটর, হুয়ান ম্যানুয়েল গামিতো ই-মেল মারফত বলেছেন, 'একজন অ্যাথলিট কিন্তু সবার আগে এক জন মানুষ। তাই সাধারণ লোক এই পরিস্থিতিতে যে রকম সমস্যায় পড়বেন, একজন ক্রীড়াবিদের ক্ষেত্রেও তাই ঘটবে। সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রীড়াবিদদের ক্ষেত্রে বলব, ওদের জীবনটা পুরো একটা রুটিনের ছন্দে বাঁধা। ঘুম ভাঙা থেকে শুরু করে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত একটা নির্দিষ্ট ছক থাকে। এই রুটিনটা ভেঙে গেলে মানসিক সমস্যা আসতে বাধ্য।' যে কারণে এই রুটিন মেনে চলারও পরামর্শ দেন গামিতো।</p> <p>তার মতে, নির্দিষ্ট ‘টাইম স্লট’-এ দিনটাকে ভাঙো। কখন ট্রেনিং করবে, কখন খাবে, কখন ঘুমোবে- এ সব যেন ঠিক করা থাকে। তা হলে ফুটবলাররা একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্যের মধ্যে জীবনকে বাঁধতে পারবেন।</p> <p><strong>মস্তিষ্কের ব্যায়াম</strong><br /> ক্লাবে ট্রেনিংয়ের সময় মানসিক শক্তি বাড়ানোর উপরেও নজর দেওয়া হয়। কিন্তু লকডাউনে মস্তিষ্কের ব্যায়ামও যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে ফুটবলারদের সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন মনোবিদরা। তেমনই একজন মনোবিদ হুয়ান মিগেল বার্নাত বলেছেন, 'এই পরিস্থিতিতে যদি এই ‘মেন্টাল এক্সারসাইজ’ বন্ধ হয়ে যায়, তা হলে কিন্তু ঘুম নষ্টের মতো নানা সমস্যায় পড়বে ফুটবলাররা। যে কারণে মানসিকভাবে ফুটবলারদের চাঙ্গা রাখাটা খুবই প্রয়োজন।' কী করে এটা করা যেতে পারে তারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মনোবিদের পরামর্শটি হলো, 'কগনেটিভ ওয়ার্কআউট’ চালু রাখতে। যা মস্তিষ্কের সেই অংশটাকে সক্রিয় রাখবে, যা বরাবর চ্যালেঞ্জ সামলে এসেছে। </p> <p><strong>ডিজিট্যাল ট্রেনিং</strong><br /> ফুটবলারদের সঙ্গে ইন্টারনেট মারফত যোগাযোগ রাখা। তাঁদের মানসিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেওয়া। কোনও, কোনও ক্লাব ইতিমধ্যেই ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শুধু ফুটবলারদের নয়, তাঁদের পরিবারকেও চাপ কাটিয়ে ওঠার পরামর্শ দিচ্ছে।        </p> <p><strong>দল হিসেবে লড়তে হবে</strong><br /> যেকোনোও দলগত খেলাতেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ার ব্যাপারটা থাকে। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে ফুটবলাররা যে একা নন, সেটাই মনোবিদরা বুঝিয়ে দিচ্ছেন। শুধু লা লিগার সিনিয়র ফুটবলারদের জন্যই নয়, ভাইরাসের বিরুদ্ধে দলগত লড়াইয়ের বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে জুনিয়র দলকেও। বোঝানো হয়েছে, এই লড়াইয়ে কেউ একা নন। <br /> সূত্র : আনন্দবাজার</p>