<p>মানব সভ্যতার ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা আছে যা রহস্য, ভয় আর অবিশ্বাসে ঘেরা। পৌরাণিক কাহিনী বা লৌকিক বিশ্বাসগুলো শুধুমাত্র গল্প বলে মনের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং আমাদের চারপাশের বাস্তব জীবনেও এমন কিছু ঘটনা ঘটে যেগুলো মনে করিয়ে দেয় সেই পুরনো কাহিনীগুলো।</p> <p>ইংল্যান্ডের উত্তর ইয়র্কশায়ারের নেয়ার্সবরো টাউনের কুয়াও তেমনি এক রহস্যময় স্থান। এটা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষের মনের ভয় ও কৌতূহলকে প্রভাবিত করে আসছে। এই কুয়োটি বিশেষভাবে পরিচিত তার একটি বিস্ময়কর আচরণের জন্য। এই কুয়ার পানির সংস্পর্শে আসা যেকোনো বস্তু পাথরে পরিণত হয়ে যায়। স্থানীয় অধিবাসীরা এই কুয়াকে অভিশপ্ত বলে মনে করেন এবং এটি ঘিরে বহু কিংবদন্তী প্রচলিত রয়েছে। ইতিহাস, কিংবদন্তী এবং বিজ্ঞানের মিশ্রণে এই কুয়ার রহস্যময় কাহিনী যেন আমাদের কল্পনাকে বাস্তবতার সীমা ছাড়িয়ে আরও গভীরে নিয়ে যায়।</p> <p>নেয়ার্সবরো টাউনে অবস্থিত এই রহস্যময় কুয়াটি প্রথম খ্যাতি পায় ১৫৩৮ সালে। স্থানীয় অধিবাসীরা লক্ষ করেন, কুয়ার পানিতে যেকোনো বস্তু পড়ার পর তা অল্প সময়ের মধ্যেই পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়। গাছের শুকনো পাতা, খেলনা সামগ্রী থেকে শুরু করে অন্যান্য সাধারণ জিনিস, সবকিছুই এই কুয়ার পানিতে পড়লে পাথরের আকারে। এই দৃশ্য দেখে স্থানীয় মানুষজন ধীরে ধীরে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং কুয়াটি সম্পর্কে নানাবিধ গল্প ছড়িয়ে পড়ে।</p> <p><strong>মাদার শিপটনের অভিশাপ</strong><br /> এই কুয়োর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মাদার শিপটন নামে এক রহস্যময় নারীর গল্প, যিনি ১৪৮৮ সালে উত্তর ইয়র্কশায়ারে জন্মগ্রহণ করেন। শিপটনের জন্ম ও জীবন নিয়ে প্রচলিত আছে, তিনি ডাইনি ছিলেন এবং ছোটবেলা থেকেই অবহেলিত ও নিঃসঙ্গ জীবন কাটাতেন। তার অদ্ভুত চেহারা এবং ভবিষ্যদ্বাণী করার ক্ষমতার কারণে গ্রামের মানুষ তাকে অপছন্দ করত এবং তাঁর থেকে দূরে থাকত। কিংবদন্তি অনুযায়ী, মাদার শিপটন বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও সামাজিক বিপর্যয়ের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। এমনকি ইংল্যান্ডের রাজা হেনরি অষ্টমের রাজত্বের পতনের ভবিষ্যদ্বাণীও তিনি করেছিলেন।</p> <p>মাদার শিপটনের অভিশাপ নিয়ে বলা হয় যে তার মৃত্যুর পর থেকেই এই কুয়াটি অলৌকিক ক্ষমতা অর্জন করে। ১৫৬১ সালে মাদার শিপটনের মৃত্যুর পর থেকে কুয়ার পানিতে যে কোনো জিনিস পাথরে পরিণত হওয়ার ঘটনা আরও বৃদ্ধি পায়। স্থানীয় অধিবাসীরা মনে করেন, এটি ছিল মাদার শিপটনের অভিশাপের ফল। তাদের বিশ্বাস ছিল, মাদার শিপটন তার জীবনের শেষ দিকে এই কুয়োর কাছে সময় কাটাতেন এবং তার মৃত্যুর পর থেকেই কুয়ার পানির সংস্পর্শে সবকিছু পাথরে পরিণত হতে শুরু করে। স্থানীয় লোকগল্প অনুসারে, এই কুয়োর পানিতে এক ধরনের অলৌকিক ক্ষমতা ছিল। এর পেছনে রয়েছে মাদার শিপটনের আত্মার কারসাজি।</p> <p>দ্বিতীয় পর্ব: আগামীকাল আসবে</p> <p>সূত্র: ডেইলি মেইল</p>