<p>বাঘ-সিংহের মতো ভারী প্রাণীরা কিভাবে নিঃশব্দে চলাচল করে, তা জানার জন্য প্রথমে তাদের শারীরিক গঠন ও আচরণের দিকে নজর দিতে হবে। এদের চলার পদ্ধতি বিশেষভাবে অভিযোজিত হয়েছে, যাতে তারা শিকার ধরার সময় শব্দ না করে চলতে পারে।</p> <p>বাঘ এবং সিংহের পা খুবই নরম ও স্থিতিস্থাপক। তাদের পায়ের নিচের অংশবিশেষ ধরনের প্যাড বা নরম গদি থাকে, যা মাটির সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে তৈরি হওয়া শব্দকে শোষণ করে। এ কারণেই এরা সহজেই নিঃশব্দে মাটির ওপর চলতে পারে।</p> <p>তাদের পায়ের আঙুলের নখগুলো সাধারণত ভেতরের দিকে ভাঁজ করা থাকে চলার সময়, ফলে তারা খুব হালকা পায়ের ছাপ ফেলে। এভাবে তারা কম শব্দ করে হাঁটে এবং শিকারকে তাড়া করার সময়ও শব্দ করে না।</p> <p>এরা চলার সময় ধীরে ধীরে এবং প্রতিটি পদক্ষেপের মধ্যে খুব সাবধানতা অবলম্বন করে। বাঘ ও সিংহ শিকারের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় মাটিতে তাদের শরীরের ওজন বণ্টিত করে ফেলে, যাতে কোনো পাতার খসখস শব্দ বা শাখার ভাঙার শব্দ না হয়।</p> <p>এই প্রাণীদের শরীরে এমন শক্তিশালী মাংসপেশি রয়েছে, যা তাদের পা এবং শরীরের ওজন সহজে বহন করতে সক্ষম। ফলে তারা খুব সুশৃঙ্খলভাবে শরীরের ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে পারে এবং একই সঙ্গে শব্দহীনভাবে শিকার ধরার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে।</p> <p>বাঘ-সিংহের শ্রবণ ক্ষমতা খুব প্রখর, তাই তারা নিজেদের আশপাশের শব্দ খুব ভালোভাবে শনাক্ত করতে পারে। এর ফলে তারা শিকার ধরার সময় সঠিক পদক্ষেপ নেয় এবং এমনভাবে চলাচল করে যেন আশপাশের প্রাণীরা তাদের উপস্থিতি টের না পায়।</p> <p>বাঘ ও সিংহদের ধৈর্য অনেক বেশি। তারা শিকার ধরার আগে দীর্ঘ সময় ধরে গোপনে অপেক্ষা করে। তারা শিকারের কাছাকাছি না পৌঁছানো পর্যন্ত তাড়াহুড়ো করে না, যা তাদের চলার সময় শব্দ কমাতে সহায়তা করে।</p> <p>এই প্রাণীরা নিজেদের চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে মিশে যেতে জানে। ঘন জঙ্গলে বা ঘাসের মধ্যে চলার সময় তাদের শরীরের রং ও চলাচল এমনভাবে হয়, যাতে সহজেই তারা লুকিয়ে থাকতে পারে এবং নীরবে শিকার ধরতে পারে।</p> <p>বাঘ-সিংহের এই নিঃশব্দে চলাচল করার ক্ষমতা তাদের শিকার ধরার প্রধান কৌশল। প্রকৃতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে ও নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে এ ধরনের অভিযোজনগুলো তারা আয়ত্ত করেছে, যা তাদের শক্তিশালী শিকারি হিসেবে গড়ে তুলেছে।</p> <p>সূত্র : অ্যানিমেল প্ল্যানেট</p>