<p>তরল গাছ বা ‘লিকুইড ট্রি’ তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা। একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, যা বায়ুদূষণ কমানোর জন্য বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে। এটি ঠিক গাছ নয়, একটি ফোটোবায়োরিয়্যাক্টর। দেখতে কাচের অ্যাকুয়ারিয়ামের মতো। ভেতরে রয়েছে মাইক্রোঅ্যালগি ভর্তি ৬০০ লিটার পানি।</p> <p>এই তরল গাছটি আসল গাছের মতো কাজ করে। মাইক্রোঅ্যালগি সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবেশ থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে এবং খাঁটি অক্সিজেন ছাড়ে। ট্যাংকটির ভেতরে আলো ধারণ করার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে, যা আলোকে বিদ্যুতে রূপান্তরিত করে। ফলে গোটা ট্যাংকটি সবুজ দেখায় এবং মাইক্রোঅ্যালগি বছর ধরে ধরে চলতে থাকা সালোকসংশ্লেষণে সাহায্য করে। </p> <p>একটি পাম্পের সাহায্যে বাইরের দূষিত বায়ু ট্যাংকের ভেতরে আনা হয়, যাতে মাইক্রোঅ্যালগি সেই কার্বন ডাই-অক্সাইডকে তাদের খাদ্য তৈরির জন্য ব্যবহার করতে পারে। </p> <p>এই যন্ত্রটির একটি বড় সুবিধা হলো এটি যেকোনো জায়গায় স্থাপন করা যায় এবং সেটি স্থাপনের পরই কাজ করতে শুরু করে। সার্বিয়ার বিজ্ঞানী ইভান স্প্যাসেজেভিক এই প্রযুক্তিটি উদ্ভাবন করেছেন। তাঁর দাবি, এই যন্ত্রটি দুটি ১০ বছরের পুরনো গাছ বা ২০০ বর্গমিটার জমির ঘাসের সমান কার্ব ডাই-অক্সাইড শোষণ করতে পারে।</p> <p>গাছ কেটে ফেলার ফলে যে বায়ুদূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা নিরসনের একটি কার্যকরী উপায় হিসেবে তরল গাছকে বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে এ নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। কোনো যন্ত্র কি শেষ পর্যন্ত প্রকৃত গাছের বিকল্প হতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর এখনো পরিষ্কার নয়।</p> <p>তরল গাছ প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন করেছে। যদি এটি সফলভাবে প্রয়োগ করা যায়, তবে ভবিষ্যতে বায়ুদূষণ কমানোর একটি কার্যকরী উপায় হতে পারে। তবে এর দীর্ঘমেয়াদি কার্যকারিতা এবং প্রভাব নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে।</p>