<p>বড় মনোরম আমাদের এই পৃথিবী। ওপরে নীল আকাশ, নিচে সবুজের সমারোহ। বনে-জঙ্গলে, বাগানে, পাহাড়ে নানা রকম ফুলের মেলা। কত রঙের কত বিচিত্র প্রাণীর বাস পৃথিবীতে। বিচিত্র তাদের জীবন। তবে সবচেয়ে বিচিত্র প্রাণী বোধ হয় মানুষ। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ মানুষই তার মস্তিষ্কের সর্বোচ্চ ব্যবহার জানে। মানুষ তাদের জীবনের প্রয়োজনে প্রতিদিন আবিষ্কার করছে নানা নিত্যপণ্য। সেসব পণ্যের রংও কত বিচিত্র<span lang="DA" style="font-size:12.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">―</span></span>বেগুনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল। আরো আছে সোনালি, রুপালি, বাদামি, ধূসর, তামাটে ইত্যাদি।</p> <p>পৃথিবীতে এই যে এত রঙের খেল, তার উৎস কী? </p> <p>উৎসটা হলো সূর্য। আরো নির্দিষ্ট করে বলা যায়, সূর্যের আলো। অর্থাৎ আলোই সব রঙের উৎস। </p> <p>তবে কি দিনের আলো নিভে গেলে আর সব বাতি নিভিয়ে দিলে আকাশের রং নীল আর গাছের পাতার রং সবুজ থাকবে না? লাল গোলাপ আর থাকবে না লাল?</p> <p>ঠিক তা-ই। বিশ্বাস না হলে অমাবস্যার অন্ধকার খোলা মাঠে বা ছাদে শুয়ে আকাশের দিকে তাকান। আকাশের নীল রং একেবারে উধাও! তার মধ্যে নিকষ কালো অন্ধকার আকাশের গায়ে মিটিমিট করে জ্বলতে দেখবেন তারাদের।</p> <p>গাছের পাতার সবুজ আর গোলাপের লাল রংও রাতে দেখতে পাবেন না। রং দূরে থাক, গাছ, পাতা বা ফুলই দেখতে পাবেন না!</p> <p>আলো মূলত একধরনের বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ। যেখানে তরঙ্গের ব্যাপারটা এসে পড়ে সেখানেই তরঙ্গদৈর্ঘ্য আর কম্পাঙ্ক এসে পড়ে। আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ওপর নির্ভর করেই এর রংগুলো সৃষ্টি হয়। একটা নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের জন্য একটা রং নির্দিষ্ট করা থাকে।</p> <p>আমাদের দৃশ্যমান আলোর মধ্যে লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি এবং বেগুনি আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে তরঙ্গদৈর্ঘ্য কী? আলো কম্পিত হতে হতে তরঙ্গাকারে সামনের দিকে অগ্রসর হয়। তাই আলোর যেমন তরঙ্গ আকারের বেগ আছে তেমনি সামনে এগোয় বলে সরলরেখাকৃতির বেগও থাকবে।</p> <p>আলোকরশ্মি একটা পূর্ণ কম্পন শেষ করতে যতটুকু পথ সরলরেখা আকারে সামনে এগোয়, সে পথটাকেই আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বলে। কোনো সাদা আলোক উৎস, যেমন সূর্য, সার্চলাইট, সাদা বৈদ্যুতিক বাল্ব, টর্চলাইট থেকে যখন আলো সৃষ্টি হয়, তখন একই সাথে বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো নির্গত হয়। তাই সাদা আলোকে প্রিজমের মাধ্যমে ভাঙলে সাতটা ভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো পাওয়া যাবে। তরঙ্গদৈর্ঘ্যের এই ভিন্নতার কারণেই সাদা আলো সাত রঙের মিশ্রণ।</p>