<article> <p style="text-align: justify;">রাজধানী ঢাকায় গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কলেরা ও ই-কোলাই জীবাণু শনাক্তের হার বেড়েছে। ঢাকার মহাখালী এলাকায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালের তথ্য মতে, চলতি সপ্তাহে ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি রোগীদের ৩৪.৮ শতাংশের শরীরে কলেরা ও ই-কোলাই জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। আগের সপ্তাহে এ হার ছিল ২৫ শতাংশ।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">আইসিডিডিআরবি হাসপাতাল শাখার প্রধান বাহারুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কলেরাও ডায়রিয়াজনিত রোগ। কলেরায় পাতলা পায়খানার সঙ্গে বমি হতে পারে। অতিদ্রুত শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে এবং তীব্র পানিশূন্যতায় নানা জটিলতা দেখা দেয়। সময়মতো ঠিক চিকিৎসা না হলে মৃত্যু ঘটে।’</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">আইসিডিডিআরবি হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, গত ৩০ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। এখন ভর্তির হার কমে এসেছে। গত শনিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছিল ৭৯০ জন রোগী। আর গতকাল রবিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত আগের ১৪ ঘণ্টায় রোগী ভর্তি হয়েছে ৪৯৭ জন।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে, তাদের কাছে সাধারণত দৈনিক গড়ে ৫০০ রোগী ভর্তি হয়। কিন্তু গত ৩০ মে হঠাৎ ভর্তির সংখ্যা বেড়ে ৯০০-তে উঠে যায়। এরপরের দিন এক হাজার ২০০ ছাড়িয়ে যায়। ১ জুন সর্বোচ্চ এক হাজার ৩৩০ জন ভর্তি হয়। এখন কিছুটা কমে প্রতিদিন গড়ে আট শর মতো রোগী ভর্তি হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের মতে, ৫০০-তে নেমে এলে বলা যাবে ডায়রিয়ার স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। </p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">বাহারুল আলম বলেন, বছরের দুই সময়ে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। বর্ষার আগে ও শীতের শুরুতে। এসব সময়ে ডায়রিয়া জীবাণু ছড়ানোর জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা বিরাজ করে।</p> <p style="text-align: justify;">এখনকার তাপমাত্রা ডায়রিয়া জীবাণু ছড়ানোর জন্য উপযুক্ত। তাই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আর শীতের শুরুতে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। সে সময় আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ কিছু ভাইরাস, যার অন্যতম রোটা ভাইরাস।</p> <p style="text-align: justify;">বাহারুল আলম জানান, জীবাণুর ধরন জানতে তাঁরা সারা বছরই একটা নির্দিষ্টসংখ্যক রোগীর মল পরীক্ষা করেন।  যেমন—এ সপ্তাহে ডায়রিয়া রোগীদের মধ্যে কলেরা ১৭.৬ শতাংশ ও ই-কোলাই ১৭.২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে কলেরা ১১ শতাংশ ও ই-কোলাই ১৪ শতাংশ ছিল। অর্থাৎ এ সপ্তাহে দুটিই বেড়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের ডায়রিয়ার প্রধান কারণ কলেরা এবং ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া। দূষিত পানি ও পচাবাসি খাবার থেকে এগুলো ছড়ায়।</p> <p style="text-align: justify;"><b>দুই বিভাগে ৫৪ শতাংশ ডায়রিয়া রোগী</b></p> <p style="text-align: justify;">স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত সারা দেশে ছয় লাখ ৫৩ হাজার ৪২৬ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে এক লাখ ৫২ হাজার ৩২৮ জন,  ফেব্রুয়ারিতে এক লাখ ৫৩ হাজার ৪৩৪ জন, মার্চে এক লাখ ৬৭ হাজার ৫৪০ জন ও এপ্রিলে এক  লাখ ৮০ হাজার ১২৪ জন।</p> <p style="text-align: justify;">অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দুই বিভাগেই ৫৪ শতাংশ ডায়রিয়া রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে খুলনায় এক লাখ ৮৮ হাজার ৭৮৮ জন ও ঢাকা বিভাগে এক লাখ ৬৯ হাজার ২৬৯ জন। তবে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।</p> </article>