<p>বিগত সময়ে ক্ষমতায় থাকাকালীন আওয়ামী লীগ যা করেছে, তার ফল এখন ভোগ করছে এবং ভবিষ্যতেও ভোগ করবে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এই কথা বলেন। </p> <p>সারজিস আলম বলেন, ‘২০১৩ সালে আমরা দেখেছিলাম হেফাজতে ইসলাম মতিঝিলে তাদের সমাবেশটি করেছিল ওই সময়ে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে, পুলিশকে অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগ তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসংখ্য আলেম-উলামাদের কান ধরে উঠবস করিয়েছিল। সেই সচিত্র ছবি এবং ভিডিও এখনো আমাদের কাছে আছে। আওয়ামী লীগ যা করেছিল তার ফল আওয়ামী লীগ এখন ভোগ করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। কিন্তু একই কাজটি আওয়ামী লীগ যাওয়ার পরে আরেকজন যদি ওই নির্যাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়, সেটি আমরা কখনো মেনে নেব না। সেটির জন্য এই যে গণ-অভ্যুত্থানটি হয়েছে সেটি কখনো করিনি।’</p> <p>ধানমণ্ডি ৩২-এ যদি কেউ ব্যক্তিগত জায়গা থেকে শোক পালন করতে চায়, ফুল দিতে চায়, তাহলে কেউ তাকে বাধা দিতে পারেন না বলে সারজিস মন্তব্য করেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="‘আল্লাহর কাছে’ বিচার চাইলেন ধানমণ্ডিতে হেনস্তার শিকার আব্দুল কুদ্দুস" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/08/16/1723800228-346b0858bde854dfead0545bcb2b6bf7.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>‘আল্লাহর কাছে’ বিচার চাইলেন ধানমণ্ডিতে হেনস্তার শিকার আব্দুল কুদ্দুস</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/08/16/1415553" target="_blank"> </a></div> </div> <p>১৫ আগস্টের শোক দিবস নিয়ে সারজিস বলেন, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ যখন এই ঘটনাটি ঘটে পুরো বাংলাদেশে মিষ্টি বিতরণ হয়েছিল। কারণ কী? কারণ ওই ৭২ থেকে ৭৫-এর ঘটনাগুলো যদি দেখেন তখন স্বৈরাচার বা ফ্যাসিস্টের চরম একটি মাত্রা ছিল। ইতিহাস ঘাঁটলেই এটি দেখতে পাই যে তখন আসলে আলটিমেটলি যা হয়েছিল এক জায়গারে নির্দেশ থেকে হয়েছিল। এমনকি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ তার যে বিচার সেটি পাইনি। বরং বিচার নির্দিষ্ট একটি ঠিকানা থেকে ধানমণ্ডি ৩২সহ কয়েকটি ঠিকানা থেকে পুরো বাংলাদেশে যেত। ওই সময় সামগ্রিক একটি বিপ্লবের ফল এলে ওটি (১৫ আগস্ট) ছিল। </p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘আজকে ২৪ সালে যা হয়েছে এটি ২৪ সালের ঘটনা নয়। বিগত ১৬ বছরে যা হয়েছে তার ঘটনা। তাই আমাদের জায়গা থেকে আমরা মনে করি, শুধু আমাদের জায়গা নয় বরং রাষ্ট্রীয়ভাবে এই শোকটি পালন করা উচিত নয়। কোনো দিন সিঙ্গেল কয়েকজন মেজর বা আর্মি অফিসার মিলে এই যে একটি অভ্যুত্থান সেটি ১৫ আগস্টে ১৯৭৫-এ ঘটাতে পারত না। বরং এটি একটি সামগ্রিক ক্ষোভ ছিল।’</p> <p>শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থী ভাই-বোনেরা জাতির সংকটে যেটি করেছে সেটির জন্য তাদের ধন্যবাদ। এখন তাদের আসলে পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে হবে। দিনশেষে আমরা যদি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই তাহলে আমাদের একটি শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম প্রয়োজন। একটি ইন্টেলেকচুয়াল তরুণ প্রজন্ম প্রয়োজন, যারা আসলে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বগুড়ায় শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ১০১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/08/16/1723797440-2ad2b634e112d3b09918117d8e237d5a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বগুড়ায় শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ১০১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/08/16/1415547" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তিনি আরো বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ধরনের কোনো কিছুকে প্রমোটই করে না যে কেউ একজন কোনো একটি হোস্টেলে গিয়ে সার্চ করবে, কোনো একটি আবাসিক হোটেলে যাবে, কোনো একজন অধ্যাপককে জোর করে নামিয়ে দেবে। আমরা এগুলো সমর্থন করি না। আমরা কোনো অথরিটি নই। আমরা একটি প্রেশার গ্রুপ দুর্নীতিবাজ বা ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের অপসারণের জন্য আমরা দাবি তুলতে পারি, কিন্তু এটি করতে বাধ্য করতে পারি না।’</p> <p>সারজিস আলম বলেন, ‘ধানমণ্ডি ৩২সহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে এমন অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, যেগুলো আমাদের গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে যায় না। আমরা যে বাংলাদেশের প্রত্যাশা করি, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি সেটির সঙ্গে এটি কখনো যায় না। আমরা বিভিন্ন ভাইরাল ভিডিওতে দেখেছি যে আমার বাবার বয়সী একজনকে কান ধরে উঠবস করানো হয়েছে, আমার বাবার বয়সী একজনকে বিবস্ত্র করা হয়েছে এবং মানুষজন যা ইচ্ছা তা-ই করছে, অসংখ্য মানুষের ফোন চেক করা হচ্ছে। আমি দেখেছি আমার মায়ের বয়সী একজনের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। এ রকম অসংখ্য অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা সাংবাদিক ভাই-বোনদের ওপর হামলার বিভিন্ন ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি। আমাদের জায়গা থেকে স্পষ্ট কথা- যেই স্প্রিটকে সামনে রেখে আমরা এই গণবিপ্লবটি করেছি, ১৬ বছরের যে নির্যাতন নিপীড়ন কিংবা মানুষের যে প্রকাশ করার যেকোনো অনুভূতি, কথা বলার অধিকারটি ছিল সেটি যে হরণ হয়েছিল, এই সব কিছু দুর্নীতি থেকে শুরু করে অত্যাচার-নিপীড়ন এইগুলোর বিরুদ্ধে গিয়েই এই গণবিপ্লব। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চেয়েছি, যেখানে সবাই সবার কথা বলতে পারবে, মতপ্রকাশ করতে পারবে, যে যে ধারায় বিশ্বাসী, সে অনুযায়ী কাজ করতে পারবে—এই স্বাধীনতাগুলো থাকবে।’</p>