<article> <p style="text-align: justify;">চাহিদার তুলনায় আমদানি বেশি হলে দাম কমার নিয়ম থাকলেও দেশে চিনির দাম উল্টো বাড়ছে। দেশে রমজানে চিনির চাহিদা থাকে প্রায় তিন লাখ টন। অথচ গত দুই মাসে চিনি আমদানি হয়েছে চার লাখ ৭৪ হাজার টন। এসব চিনির ৯৯ শতাংশ আমদানিকারক দেশের পাঁচটি গ্রুপ।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">চিনির দাম বাড়বে না বলে ব্যবসায়ীরা বারবার আশ্বস্ত করা সত্ত্বেও পাইকারি বাজারে সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে পাঁচ টাকা, খুচরায় ৯ টাকা পর্যন্ত। ক্যাব নেতারা বলছেন, দেশে পর্যাপ্ত চিনি মজুদ আছে, সরকার শুল্কও কমিয়েছে। এর পরও কেন দাম বাড়ছে সেটা দ্রুত তদারকি করে ব্যবস্থা নিলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে।</p> <p style="text-align: justify;">বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের তথ্য মতে, দেশে বছরে চিনির চাহিদা রয়েছে প্রায় ২২ লাখ টনের।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">সর্বশেষ অর্থবছরে দেশে চিনি উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টন। ফলে চাহিদার প্রায় পুরোটাই মেটাতে হয় আমদানির মাধ্যমে। গড়ে প্রতি মাসে চিনির চাহিদা প্রায় দেড় লাখ টন থাকলেও রমজানে চাহিদা প্রায় তিন লাখ টন।</p> <p style="text-align: justify;">জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, রমজান সামনে রেখে চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি—এই দুই মাসে চিনি আমদানি হয়েছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৭.৪১ শতাংশ বেশি। এই দুই মাসে চিনি আমদানি হয়েছে চার লাখ ৭৪ হাজার টন।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">গত দুই মাসে সিটি গ্রুপ এক লাখ ৬১ হাজার টন, মেঘনা গ্রুপ এক লাখ ৫৬ হাজার টন, এস আলম গ্রুপ এক লাখ ১২ হাজার টন, আবদুল মোনেম গ্রুপ ২১ হাজার ৫০০ টন এবং দেশবন্ধু গ্রুপ আমদানি করেছে ২০ হাজার ৫৯৫ টন চিনি। বাকি দুই হাজার ৯০৫ টন চিনি আমদানি করেছে ছোট কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। চিনি পরিশোধন করে বাজারে সরবরাহের শীর্ষেও রয়েছে এই পাঁচটি গ্রুপ।</p> <p style="text-align: justify;">গত শনিবার সকালে পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৩৭ টাকা।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">গত ১ মার্চ এই দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৩২ টাকা। সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে চিনির কেজি ছিল ১৪৭ থেকে ১৫০ টাকা, এখন ১৫৬ থেকে ১৫৯ টাকা।</p> <p style="text-align: justify;">চট্টগ্রামের চিনির বাজার মূলত নিয়ন্ত্রণ করে এস আলম গ্রুপ। বাকি কম্পানিগুলোর চিনি চট্টগ্রামে সেভাবে মেলে না। ফলে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক না করলে চিনির বাজারে স্বস্তি মিলবে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।</p> <p style="text-align: justify;">খাতুনগঞ্জের এস এস ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আকমল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এস আলমের চিনি কারখানায় আগুন লাগার আগে কেজিতে বেড়েছিল এক টাকা। অন্যান্য কম্পানির চিনি চট্টগ্রামে না আসায় আগুন লাগার পর থেকে খাতুনগঞ্জে চিনির সংকট দেখা দিয়েছে। এস আলমের চিনির সরবরাহ শুরু হলে দাম কমতে সময় লাগবে না।’</p> <p style="text-align: justify;">চিনির আড়তদার আবদুর রহিম বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে আমরা চিনির ক্রেতা পাইনি। মার্চের শুরুতে ক্রেতারা সংকট হবে ভেবে অতিরিক্ত চিনি কিনেছেন। এ ছাড়া এস আলমের গুদামে আগুন লাগায় চিনির সংকট তৈরি হয়েছে।’</p> <p style="text-align: justify;">ক্যাবের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দেশে পর্যাপ্ত চিনি রয়েছে, সেটা বেশির ভাগ ব্যবসায়ী ও সরকার থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে। অতএব রোজা শুরুর আগে ব্যবসায়ীরাই কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কেন দাম বাড়ানো হচ্ছে সেটার কোনো জবাবদিহিও নেই। তাই ব্যবসায়ীদের অজুহাতগুলো খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’</p> </article>