<p>মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ, গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, শুধু সরকারের পক্ষে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এ জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকারের পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষপে গ্রহণ করতে হবে।</p> <p>আজ সোমবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে গুড নেইবারস বাংলাদেশ (জিএনবি) আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে তারা এ সব কথা বলেন।</p> <p>জিএনবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এম মাঈনউদ্দিন মইনুলের সভাপতিত্বে সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন ন্যাশনাল কারিকুলাম অ্যান্ড টেক্সটবুক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ফরহাদুল ইসলাম, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক প্রফেসর মঞ্জুর আহমেদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. এ কিউ এম শফিউল আজম, এনসিটিবির সাবেক সদস্য ড. এ কে এম রেজাউল হাসান, জিএনবির শিক্ষা বিভাগের প্রধান আনন্দ কুমার দাশ প্রমুখ। সেমিনারে পৃথক তিনটি প্রবন্ধ উত্থাপন করেন শিক্ষাবিদ-গবেষক প্রফেসর ড. আরিফা রহমান, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক হারুনুর রশীদ খান ও শিক্ষক-গবেষক মাসুম বিল্লাহ।</p> <p>সেমিনারে এনসিটিবির চেয়ারম্যান ফরহাদুল ইসলাম বলেন, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম চালু করা হয়েছে। মানসম্মত শিক্ষকের সংখ্যা বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতি ৪০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।</p> <p>তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার মান অনেকটা উন্নতি হলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ পর্যায়ে ঘাটতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে একটি বড় কারণ, এই পর্যায়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি। ওই সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা শিক্ষকতার পাশাপাশি অন্য পেশার সঙ্গে জড়িত থাকেন। তাই এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অন্য কোনো পেশায় যুক্ত থাকতে পারবেন না, এমন বিধান চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে।</p> <p>শিক্ষার প্রসার হলেও মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রফেসর মঞ্জুর আহমেদ। সেমিনারে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল সবার জন্য শিক্ষা। সেই লক্ষ্য অর্জিত হলেও গ্রহণযোগ্য ও মানসম্মত শিক্ষার অভাব রয়েছে। মানসম্মত শিক্ষার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। বৈষম্য দূর করতে হবে। মেধাবী তরুণদের শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত করতে হবে। সামগ্রিক শিক্ষাকে একটি সমন্বিত পরিকল্পনায় আনতে হবে। এই খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। আর এ জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার দরকার।’</p> <p>প্রফেসর ড. আরিফা রহমান বলেন, শিক্ষকের মান উন্নত ছাড়া মানসম্মত শিক্ষা সম্ভব নয়। তাই শিক্ষকদের মানোন্নয়নের বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। শিক্ষকরা শ্রেণিকে কী শেখাচ্ছেন, সে বিষয়ে মনিটরিং জোরদার করতে হবে। শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে।</p> <p>সভাপতির বক্তব্যে এম মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেন, বিগত তিন দশকে সরকার শিক্ষা কর্মসূচিতে ব্যাপক পরিবর্তনের পদক্ষপে নিয়েছে। সেই পরিবর্তনগুলো কিভাবে সুসংহত ও উদ্দেশ্যমুখী রাখা যায় সে বিষয়েও সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। তার পরও অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং শিল্প ও বাণিজ্য খাতের তুলনায় শিক্ষা খাত পিছিয়ে আছে। কিন্তু এসডিজির নির্দেশনা অনুযায়ী মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৃত্তিমূলক ও জীবনমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।</p>