<p>টেকনাফে অনুষ্ঠিত 'নদী নেবে!' প্রথম প্রদর্শনীর পর খুলনায় শুরু হলো আলোকচিত্র সাংবাদিক কাকলী প্রধানের ১০০ নদীর প্রদর্শনীর দ্বিতীয় পর্ব। খুলনার রূপসা নদীর তীরে শুরু হয় এ প্রদর্শনী। প্রদর্শনী চলবে আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত।</p> <p>আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাননীয় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।</p> <p>কাকলী প্রধান এবং শিশু সংগঠন ইকরিমিকরি সাধারণ মানুষের কাছে নদীর বিপন্নতা ও শিশুদের কাছে নদীর রূপ, প্রকৃতি তুলে ধরার জন্য কাজ করছে। শিশুদের মাসিক পত্রিকা ইকরিমিকরিতে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে নদীর ছবি ও লেখা। ‘নদী নেবে!’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে শিশুদের উপযোগী দুটি নদীর বই। ৩২টি নদীর ছবির সুদৃশ্য কার্ডও বেরিয়েছে সম্প্রতি। নদী নিয়ে আগামীতে আসছে আরো নানা কার্যক্রম।</p> <p>দখল-দূষণে নিত্য শিকার বাংলাদেশের নদ-নদী। অথচ নদী শুধু দেশের প্রাণই নয়, সচল রেখেছে অর্থনীতিকেও। বাংলাদেশের মতো ভাটি অঞ্চলে নদী যেন অবতীর্ণ হয়েছে মায়ের ভূমিকায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রবহমান নদীর গুরুত্ব অপরিসীম।</p> <p>'নদীমাতৃক বাংলাদেশের, নদী রবে প্রবহমান' এই প্রত্যয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ। প্রত্যয়ে অবিচল বলেই গত এক দশকে হারিয়ে যাওয়া বা অর্ধমৃত বেশ কয়েকটি নদীকে স্বরূপে ফিরিয়ে আনা গেছে। ঢাকার বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা, ফরিদপুরের কুমার, কুষ্টিয়ার গড়াই ফিরে পাওয়া যৌবনে উচ্ছলিত।</p> <p>স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েই ৭টি ড্রেজার সংগ্রহ করে নদী খননের কাজ শুরু করেন। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার বিভিন্ন সময়ে আরো ২৭টি ড্রেজার কেনে। শিগগিরই আরো ৩৫টি ড্রেজার যুক্ত করার মধ্য দিয়ে ৮০টি ড্রেজার হবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের। যার মাধ্যমে নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী দেশের ১৭৮টি নদীতে বর্তমান সরকারের ১০,০০০ কিলোমিটার নৌপথ খননের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে।</p> <p>নদী বাঁচাতে বর্তমান সরকারের সময়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ দখল উচ্ছেদে অপ্রতিরোধ্য। পুনঃখনন ও দখল উচ্ছেদের মাধ্যমে হারানো নৌপথকে যেমন ফিরে পাওয়া যাচ্ছে, তেমনি বাংলাদেশ ফিরছে নদীমাতৃক বাংলাদেশের আপন মানচিত্রে।</p> <p>কাকলী প্রধান বলেন, 'নদীর প্রাণ আছে, সেই প্রাণকে হত্যা করা হচ্ছে শ্বাস রোধ করে। বিলুপ্ত হচ্ছে জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী। কয়েক দশকে উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিমের জনপদে নদীর দৃশ্যপট বদলে গেছে। মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে উত্তর। কোথাও কোথাও নদী পুরোটাই উধাও।'</p> <p>তিনি আরো বলেন, 'প্রায় দুই দশকে আমার ক্যামেরার লেন্সে নদীকে হত্যার এই নৃশংসতা যেমন উঠে এসেছে, তেমনি লেন্সে ধরতে চেয়েছি নদী অবলম্বন করে বেঁচে থাকা মানুষের যাপন, নদীর রূপ। লেন্সে নদীর সেই রূপের ছটাও উছলে পড়ছে খানিকটা। নদীমাতৃক দেশে নদী হোক মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন। নদীকে ঘিরে গড়ে উঠুক সুস্থ নদী পর্যটন।'</p>