<article> <p style="text-align: justify;">প্রায় ১৩.১ মিলিয়ন বা এক কোটি ৩১ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, যাদের অর্ধেকই জানে না যে তারা ডায়াবেটিক রোগী। ডায়াবেটিসে রক্তে সুগারের পরিমাণ বেশি থাকে আর এই অতিরিক্ত সুগার থেকে হতে পারে চোখের ক্ষতি। ডায়াবেটিসকে এ কারণেই বলা হয় ‘নীরব ঘাতক’। শুধু চোখ নয়, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে হৃৎপিণ্ড, রক্তনালি, স্নায়ু, কিডনি, মুখ, দাঁত, পা ইত্যাদি অঙ্গ মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়ে থাকে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">তবে ডায়াবেটিসের কারণে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি চলে গেলে সেই অন্ধত্ব থেকে ফেরানোর আর কোনো উপায় থাকে না।</p> <p style="text-align: justify;">এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের প্রায় ৮০ জন ডায়াবেটিস রোগী রোজা রাখেন। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে যাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া রোজা রাখেন, তাঁরা কিছু জটিলতার সম্মুখীন হন। বিশেষ করে রক্তের সুগারের স্বল্পতা, রক্তে সুগারের আধিক্য, ডায়াবেটিক কিটো এসিডোসিস, পানি শূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনে ভোগেন।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">রোজায় খাদ্যাভ্যাস ও খাওয়ার সময়সূচিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। সাহরি বা ইফতারে অধিক খাদ্য গ্রহণের ফলে রক্তে সুগারের পরিমাণ হঠাৎ করে বেড়ে যায়। ফলে দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের এই সময় রক্তে হঠাৎ সুগার বেড়ে গিয়ে চোখের ভেতর রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয়ে দৃষ্টিশক্তি চলেও যেতে পারে। আর এ কারণেই ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার-দাবার সুনিয়ন্ত্রিত ও পরিমিত হওয়া প্রয়োজন।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;"><strong>রোজায় ডায়াবেটিক রোগীরা যা মানবেন</strong></p> <p style="text-align: justify;">►দিনে অন্তত দুই-তিনবার রক্তের সুগার মাপতে হবে। বিশেষ করে সাহরির আগে, রোজা থাকাকালে দিনের বেলায় কোনো এক সময় এবং ইফতারের দুই ঘণ্টা পর।</p> <p style="text-align: justify;">► যাঁরা ইনসুলিন নেন তাঁরা অবশ্যই সুপার মেপে দেখবেন।</p> <p style="text-align: justify;">► ইফতার থেকে সাহরিতে কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করতে হবে।</p> <p style="text-align: justify;">► সুষম ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">অতিরিক্ত তেল ও চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে।</p> <p style="text-align: justify;">► সাহরিতে মিশ্র কার্বোহাইড্রেট যেমন—বাদামি চালের ভাত, বাদামি আটার রুটি, জব খাওয়া উচিত। সঙ্গে সবজি, ডাল এবং আমিষ হিসেবে মাছ, মুরগি খাওয়া যাবে।</p> <p style="text-align: justify;">► ইফতারিতে ভাজাপোড়া খাবার যেমন—পেঁয়াজু, আলুর চপ ইত্যাদি না খাওয়া উচিত।</p> <p style="text-align: justify;">►ইফতারে শরবত বা মিষ্টি জুস না খেয়ে ডাবের পানি, ফলের রস, লেবুর পানি পান করতে পারেন।</p> <p style="text-align: justify;">► রমজান মাসে দিনের বেলায় ব্যায়াম বা ব্যায়ামের উদ্দেশ্যে হাঁটাহাঁটি না করাই ভালো। সন্ধ্যার পর হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে।</p> <p style="text-align: justify;">►টক জাতীয় ফল ছাড়াও অন্যান্য ফল যেমন—আপেল, কমলা, মাল্টা, পেয়ারা, আনারস, আঙ্গুর, কলা খাওয়া যাবে।</p> <p style="text-align: justify;">মনে রাখবেন, রমজান মাসে শুধু সুনিয়ন্ত্রিত ও সুশৃঙ্খলভাবে খাবার-দাবার গ্রহণের মাধ্যমে ডায়াবেটিসজনিত চোখের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া অনেকাংশে সম্ভব।</p> <p style="text-align: justify;">পরামর্শ দিয়েছেন</p> <p style="text-align: justify;"><strong>ডা. মো. আরমান হোসেন রনি</strong></p> <p style="text-align: justify;">কনসালট্যান্ট (চক্ষু)</p> <p style="text-align: justify;">দীন মোহাম্মদ আই হসপিটাল, সোবহানবাগ, ঢাকা।</p> </article>