<p>তথ্য-প্রযুক্তির কল্যাণে এখন চাকরির ক্ষেত্রে নানা পরিবর্তন আমরা দেখছি। চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রেও অনেক পরিবর্তন দেখা যায়। নারীদের কাজের সুযোগও বেড়েছে। নারী হিসেবে এখন রিমোট জবের সুযোগ বাড়ছে। আগের মতো জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়ে চাকরির আবেদনের সুযোগ নেই। অনেক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান অনলাইনের মাধ্যমে জীবনবৃত্তান্ত জমা নিয়ে থাকে। যে কারণে চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রে নতুনত্ব দেখা যাচ্ছে। অনলাইনে চাকরির আবেদনের নানা বিষয় নিয়ে জানাচ্ছেন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ নির্বাহী <strong>মাজহারুল ইসলাম</strong>।</p> <p><strong>অনলাইনে চাকরির আবেদন বিস্তৃত হচ্ছে</strong><br /> অনলাইনের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের নানা প্রতিষ্ঠানে এখন চাকরির আবেদন করা বাড়ছে। বৈশিক প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে সিস্টেম অটোমেশন বেড়েছে। এন্টারপ্রাইজ রিসোর্সে ম্যানেজমেন্ট  বা ইআরপির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুতগতিতে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা করছে। কর্মী নির্বাচন ও নিয়োগের সকল কাজ এখন প্রযুক্তির সহায়তায় ইন্টারনেটের মাধ্যমেই হচ্ছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থেকে শুরু করে আবেদন গ্রহণ, বাছাই, পরীক্ষা সব কিছু এখন অনলাইনেই হচ্ছে। কর্মীরাও কিন্তু আবেদেনর ক্ষেত্রে অনলাইনেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য পান।  তাই তো আজকাল অনলাইনেই চাকরির আবেদন করা বাড়ছে। আমি বলব আমাদের তরুণ প্রজন্ম এখন প্রযুক্তিগতভাবে অনেক এগিয়েছে। সবার হাতে এখন ইন্টারনেটসহ স্মার্টফোন। এই প্রজন্ম অনলাইনে কাজ করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। এ ছাড়া অনলাইনে আবেদন করা সহজ ও সুলভ। অনেক সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করেই যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো সময় আবেদন করার সুযোগ আছে। সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে অনলাইন প্ল্যাটফরম সংযুক্ত থাকায় সোশ্যাল মিডিয়া প্রফাইল ব্যবহার করেই অনায়াসে চাকরিতে আবেদন করা যাচ্ছে। আজকাল প্রচুর ফ্রিল্যান্সিং ও অনলাইনের মাধ্যমে রিমোট বা দূরবর্তী কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে। এসব কারণে অনলাইননির্ভর চাকরির আবেদন প্রক্রিয়া জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।</p> <p><strong>অনলাইনে আবেদনের জন্য যা জানতে হবে</strong><br /> সঠিকভাবে অনলাইনে আবেদনের জন্য নিজেকে পারদর্শী করে তুলতে হবে। সাধারণ কম্পিউটার দক্ষতা থাকলেই অনলাইনে চাকরির আবেদন করা সহজে শিখতে পারবেন। ১০০-২০০ টাকা খরচ করে কম্পিউটারের দোকানে বসে আবেদনের জন্য সময় নষ্ট করবেন না। অনেক প্রতিষ্ঠানে শুধু ই-মেইলের মাধ্যমে জীবনবৃত্তান্ত চায়। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের অনলাইনে নিজস্ব সিস্টেমে প্রার্থীর প্রফাইল তৈরির মাধ্যমে আবেদনে করতে বিজ্ঞাপন দেয়। আপনাকে অবশ্যই আবেদনের সকল মাধ্যমে পারদর্শী হতে হবে।</p> <p>আবেদনের জন্য প্রথমে আপনাকে একটি ভালো নামের ই-মেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। পেশাদার পরিচয়ের জন্য নিজের নামে ই-মেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন। প্রতিষ্ঠানের সিস্টেমে আবেদন করার ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের অনলাইনে সিস্টেম সম্পর্কে আইডিয়া থাকা জরুরি। অনেক প্রতিষ্ঠানে আবেদনকারীর প্রফাইল তৈরির সময় ই-মেইল ও মোবাইল নম্বর ভ্যারিফিকেশন করা হয়। আবেদনের পরে প্রত্যেক আবেদনকারী আলাদা নম্বর পান, যা পরে যোগাযোগের সময় কাজে আসে। সঠিকভাবে অনলাইনে আবেদন করার জন্য নিজেকে অনলাইন ও ই-মেইল ব্যবহারে পারদর্শী করে গড়ে তুলতে হবে।  </p> <p>সব সময় হাতের কাছে একটু আপডেটেড জীবনবৃত্তান্ত, নমুনা কভার লেটার, ছবি, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অভিজ্ঞতার সনদ রাখতে হবে। প্রয়োজনে গুগল ড্রাইভ বা ই-মেইলে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন।</p> <p>অনেক ক্ষেত্রে যে প্রতিষ্ঠানের আবেদন করবেন তার বর্তমান বা প্রাক্তন কর্মীদের সঙ্গে নেটওয়ার্কিং কাজে আসে। এ ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম লিংকডইন ব্যবহার করতে পারেন।</p> <p>যে প্রতিষ্ঠানে আবেদন করছেন তার সম্পর্কে যথাযথ ধারণা নিয়েই ইন্টারভিউ বা অন্য যেকোনো পরীক্ষায় বসা উচিত। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ও লিংকডইন থেকে নানা তথ্য পাবেন।</p> <p><strong>আরো যা যা খেয়াল রাখবেন </strong></p> <ul> <li>সঠিক অনলাইন জব পোর্টাল বাছাই করে যথাযথ কিওয়ার্ড ব্যবহার করে চাহিদা অনুযায়ী চাকরি খুঁজুন।</li> <li>জীবনবৃত্তান্ত ও কভার লেটার অবশ্যই সমসাময়িক হতে হবে। যেখানে আপনার প্রাসঙ্গিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা উল্লেখ করতে হবে। প্রতিটি আবেদনের জন্য জীবনবৃত্তান্ত ও কভার লেটার ভিন্নভাবে লিখতে হবে। চাকরির বিজ্ঞাপন থেকে গুরুত্বপূর্ণ শব্দ খুঁজে নিয়ে তা আপনার জীবনবৃত্তান্ত ও কভার লেটারে যুক্ত করে সাজাতে পারেন।</li> <li>আপনার বৃত্তান্তে সকল তথ্য, তারিখ, পদবি, প্রতিষ্ঠানের নাম সঠিক আছে কি না তা খেয়াল রাখুন।</li> <li>অনলাইনে প্রফাইল তৈরির সময় সকল প্রয়োজনীয় ঘরগুলো পূরণ করা হয়েছে কি না বা সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংযুক্ত করা হয়েছে কি না তা লক্ষ রাখতে হবে।  </li> <li>আবেদনের সময়কালের শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়া না করে, যথাসময়ে ধীরস্থিরভাবে আবেদন করতে হবে। </li> <li>হুবহু অনুকরণ করে কোনো লেখা বা অন্যের জীবনবৃত্তান্ত থেকে তথ্য কিংবা ভাষা চুরি করবেন না। প্রয়োজনে নিজের মতো করে লিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা সম্পর্কিত কাউকে দেখিয়ে নিতে পারেন।</li> </ul>