<p>মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। তবে শরীরে র‌্যাশ হলেই যে মাঙ্কিপক্স তা কিন্তু নয়। তাই অযথা ভয় পাবেন না। আগে বুঝতে হবে এটি কী ধরনের র‌্যাশ। বেশির ভাগ সময় র‌্যাশ দেখতে এক রকম হয়। তখন আমরা গুলিয়ে ফেলি। প্রত্যেক র‌্যাশেরই ভিন্ন কারণ থাকে। </p> <p>ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুসারে, মাঙ্কিপক্স হয়েছে এমন কোনো ব্যক্তির ত্বকের সংস্পর্শে এলে তা থেকে আপনারও হতে পারে। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে যে র‌্যাশ হয় তাতে পানি থাকে। সেই পানিতেই থাকে সব জীবাণু। সেগুলো জামা-কাপড়, বিছানা বা তোয়ালেসহ বিভিন্ন জায়গায় লেগে থাকতে পারে। অন্যের ব্যবহৃত এই জিনিসগুলোর বিষয়ে সচেতন থাকুন।</p> <p><strong>পার্থক্য</strong><br /> জ্বর, দুর্বলতা, শরীর ব্যথা, মুখ ও হাতের তালুতে ফুসকুড়ি, এমনকি যৌনাঙ্গের ক্ষতও সাধারণত মাঙ্কিপক্সের লক্ষণ। গায়ে ফুসকুড়ি দেখা দিলেই এই বিষয়গুলো খেয়াল করুন।</p> <p><strong>সময়</strong><br /> ফুসকুড়ি কতক্ষণ স্থায়ী হবে তা সাধারণত এর কারণ এবং তীব্রতার ওপর নির্ভর করে। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুসারে, মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলো সাধারণত ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার তিন সপ্তাহের মধ্যে শুরু হয়। এরপর ঠাণ্ডার ভাব হয়। এবং এক থেকে চার দিন পর শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দিতে শুরু করে। এই বিষয়গুলো জানা থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবেন।</p> <p><strong>পর্যায়</strong><br /> সাধারণ র‌্যাশের সঙ্গে মাঙ্কিপক্সের আরেকটি পার্থক্য পর্যায়গত। ম্যাকুলস হলো প্রথম পর্যায়। শুরুতে খুবই সামান্য ক্ষতের চিহ্ন দেখা দেয়। আপনার মুখ থেকেই এই পর্যায়ের শুরু। এরপর শরীরের অন্যান্য অংশেও দেখা দেয়। তৃতীয় দিনে যে পর্যায়টা আসে তার নাম প্যাপিউল। এই পর্যায়ে ফুসকুড়ি সামান্য উঁচু এবং শক্ত হয়। ঠিক চার-পাঁচ দিন পরেই আসে ভেসিকল পর্ব। এই পর্যায়ে ফুসকুড়ির ভেতর পরিষ্কার পানি দেখা দেবে। ঠিক পক্সের মতো। দেখলেই বুঝবেন। এর পরের ছয় থেকে সাত দিন পর দেখবেন ফুসকুড়ির মধ্যের পানি হলুদ হয়ে গেছে। এরপর পুঁজে ভরে গেছে। এর ১৪ দিন পরেই শরীর সুস্থ হতে থাকে এবং শুকনো চামড়া ঝরে পড়তে থাকে।</p> <p>মাঙ্কিপক্স এবং চিকেনপক্সের মধ্যে পার্থক্য যেভাবে বুঝবেন<br /> মাঙ্কিপক্স এবং চিকেনপক্স দেখতে অনেকটা একই রকম। শুরুতে চুলকাবে এবং আস্তে আস্তে বাড়বে। তাই পার্থক্য করাটা বেশ কঠিন। যা-ই হোক, কিছু পার্থক্য আছে। মনে রাখবেন, মাঙ্কিপক্স জ্বরের এক দিন বা তিন দিন পরে শুরু হয়। চিকেনপক্সের ক্ষেত্রে এক থেকে দুই দিন পরে শুরু হয়। মাঙ্কিপক্স শুরু হয় মুখ থেকে, এরপর ফুসকুড়ি ছড়ায় পুরো শরীরে। অন্যদিকে চিকেনপক্স প্রথমে ওঠে বুকে, পিঠে, এরপর মুখে। </p> <p><strong>স্ক্যাবিস বা চুলকানি</strong><br /> মাঙ্কিপক্সকে চুলকানি ভেবে ভুল করবেন না যেন। মায়ো ক্লিনিকের মতে, ক্ষুদ্র মাইট দ্বারা সৃষ্ট স্ক্যাবিস বা চুলকানি অতি ক্ষুদ্র জীবাণু দ্বারা হয়। যা আস্তে আস্তে তীব্র চুলকানির দিকে যায়। ত্বকে ছোট ফোসকা বা বাম্প-এর মতো হয়। </p> <p>অন্যদিকে, মাঙ্কিপক্সকে খুঁজে পাবেন দুই পায়ের বা আঙুলের মাঝে, কোমরের চারদিকে, কবজির ভেতরে, কনুই, পায়ের তলায় এবং আরো অনেক জায়গায়। তবে মনে রাখবেন, আপনার যদি আগে থেকেই চুলকানি থাকে, তাহলে মাঙ্কিপক্সের সংস্পর্শে আসার কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হবে। অন্যথায় ছয় সপ্তাহ সময় লাগবে।</p> <p><strong>অ্যালার্জি ও মাঙ্কিপক্স</strong><br /> অ্যালার্জির কারণে গায়ে ফুসকুড়ি হয় বা চাকা হয়ে ফুলে ওঠে। অ্যালার্জির ফুসকুড়িগুলো ছোট বা চাকা চাকা হয়। লালচে হয়ে যায়। আবার কমেও যায়। মাঙ্কিপক্স দেখতে বড় আর পানিতে পূর্ণ থাকে। </p> <p><strong>অন্যান্য</strong><br /> জ্বর, ঠাণ্ডা, ফোলা লিম্ফ নোড, ক্লান্তি, পেশি ব্যথা এবং পিঠে ব্যথা এবং মাথা ব্যথা মাঙ্কিপক্সের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে কয়েকটি। যা ফুসকুড়ি হওয়ার আগে হয়। </p> <p>সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।</p>