ঢাকা, সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫
২২ আষাঢ় ১৪৩২, ১১ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫
২২ আষাঢ় ১৪৩২, ১১ মহররম ১৪৪৭
মেগাপ্রজেক্ট জয়িতা টাওয়ার

নির্ধারিত তিন বছরে ভিত্তিটুকুও বসেনি

  • ► মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে তিন বছর
    ► ব্যয় বেড়েছে ১৪ কোটি টাকা
ফাতিমা তুজ জোহরা
ফাতিমা তুজ জোহরা
শেয়ার
নির্ধারিত তিন বছরে ভিত্তিটুকুও বসেনি

সুবিধাবঞ্চিত নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারের অন্যতম মেগাপ্রজেক্ট জয়িতা টাওয়ার। ২০১৮ সালে এই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। আর বাস্তবায়নের সময় বেঁধে দেওয়া হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই গোটা তিন বছরে ভবন নির্মাণ তো দূরের কথা, ভিত্তিপ্রস্তরটুকুই স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

পরের ধাপে গত বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। চলতি বছরের ৩১ মার্চ সেই মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রকল্পের মেয়াদ এক দফায়ই তিন বছর বাড়ানো হয়েছে। সে হিসাবে আগামী ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ করা হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর ধানমণ্ডিতে জয়িতা ফাউন্ডেশনের ১২ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। এই টাওয়ার নির্মাণে ব্যয় বরাদ্দ ছিল ১৫৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এরই মধ্যে টাওয়ারের নকশা, মাটির নিচে পাঁচ তলা কমিয়ে দুই তলাসহ প্রকল্পে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। ভবন নির্মাণ ও নকশায় পরিবর্তনের জন্য সময় ও ব্যয় দুটিই বাড়ছে।

বাড়ানো হয়েছে তিন বছর সময়। ব্যয় বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ১৪ কোটি টাকা।

গত ১৩ এপ্রিল জয়িতা টাওয়ারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, ‘জয়িতা ফাউন্ডেশনের ১২ তলা ভবন নির্মাণের কাজ অচিরেই শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুবিধাজনক সময়ে এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

জয়িতা ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে টাওয়ার নির্মাণের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে মন্ত্রণালয় থেকে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছর সময় বাড়ানো হয়। সঙ্গে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় আরো দুই বছর মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছে। সেই হিসাবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্প কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, গেল তিন বছরে প্রকল্পের পেছনে ব্যয় হয়েছে দুই কোটি ৬৭ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এটা মোট ব্যয় বরাদ্দের ১.৭৩ শতাংশ। এই ব্যয় বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের ব্যয় বাবদ বরাদ্দ ছিল ১৫৪ কোটি টাকা। তবে এই ব্যয় খাতের তালিকায় ভবনের অভ্যন্তরীণ নকশা (ইন্টেরিয়র ডিজাইন) অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ওই খাতে ব্যয় বাবদ ১৪ কোটি টাকার কিছু বেশি অর্থ বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে অনুমোদিত বরাদ্দ ১৬৮ কোটি ৩৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। এর আগে মাটির নিচে পাঁচটি ফ্লোর নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। ধানমণ্ডির মতো স্থানে পাঁচটি ফ্লোর মাটির নিচে হলে আশপাশের ভবন ধসে পড়ার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে নকশায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ‘করোনার কারণে কাজ ধীরে হয়েছে। নতুন করে নকশা আঁকা এবং বাজেট কমবেশি হওয়ার কারণেও সময় চলে গেছে। তবে আমরা এখন ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য অপেক্ষা করছি। আশা করছি, আগামী জুনের দিকে কাজ শুরু হবে। টেন্ডারের কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। এরপর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়ে গেলেই প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। আর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করা হবে।’

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় জয়িতা টাওয়ার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জয়িতা ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। এই টাওয়ারে দুটি বেইসমেন্টসহ ১২টি তলা থাকছে। এখানে থাকবে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত বিপণিকেন্দ্র, ফুড কোর্ট, মাল্টিপারপাস হল, ডরমিটরি, প্রশিক্ষণকেন্দ্র ও জয়িতা ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়। জয়িতাদের কর্মকাণ্ডভিত্তিক হবে গোটা ভবন। এই প্রকল্পের আওতায় টাওয়ার ভবন ছাড়াও অভ্যন্তরীণ রাস্তা, সাইট অফিস, ড্রেন, সীমানাদেয়াল, সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ডেঙ্গু মশার হাত থেকে রক্ষা পেতে...

শেয়ার
ডেঙ্গু মশার হাত থেকে রক্ষা পেতে...

এডিস (ডেঙ্গু) মশার হাত থেকে রক্ষা পেতে দিনের বেলায়ও মশারি টানিয়ে বাচ্চাকে ঘুম পাড়িয়েছেন মা। গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মেট্রো রেললাইনের নিচ থেকে তোলা। ছবি : শেখ হাসান

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
মুরাদনগরে তিন খুন

দুই দিন পর মামলা প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান, গ্রেপ্তার ৮

কুমিল্লা ও কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
কুমিল্লা ও কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
শেয়ার
দুই দিন পর মামলা প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান, গ্রেপ্তার ৮

কুমিল্লার মুরাদনগরে মোবাইল ফোনসেট চুরি ও মাদক ব্যবসার অভিযোগে এক নারী ও তাঁর দুই সন্তানকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এতে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লালকে প্রধান করে ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার পর যৌথ বাহিনী গত শুক্রবার রাতে কুমিল্লা ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়াসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন কড়ইবাড়ী গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৮), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে জোনাকি আক্তার (৩২)। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন রুবির আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৫), যিনি এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কড়ইবাড়ী গ্রামে মোবাইল ফোনসেট চুরির অভিযোগ তুলে শতাধিক গ্রামবাসী রুবি বেগমের বাড়িতে হামলা চালায়। রুবির বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার বলেন, হামলা চালানোর পর আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেছিলাম।

পুলিশ বলছিল আসতেছি, কিন্তু তারা আসার আগেই আমার মা, ভাই ও বোনকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। আমি আমার সন্তানদের নিয়ে টয়লেটের ট্যাংকে লুকিয়ে কোনোমতে বেঁচে যাই।

গতকাল শনিবার বিকেলে র‌্যাব-১১ রাজধানীর কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানায়, এ ঘটনায় ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়াসহ ছয়জনকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন কড়ইবাড়ী গ্রামের রবিউল আউয়াল, আতিকুর রহমান, বায়েজ মাস্টার, হায়রাবাদ এলাকার দুলাল মিয়া ও তাঁর ছেলে আকাশ।

অন্যদিকে সেনাবাহিনী কড়ইবাড়ী গ্রাম থেকে আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন মো. সবির আহমেদ ও মো. নাজিমউদ্দীন বাবুল।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে নিহতদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে পুলিশ পাহারায়। জানাজায় এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিল না বললেই চলে। এদিকে মামলার পর থেকেই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে গ্রামটি। দোকানপাট, বাজার বন্ধ, রাস্তাঘাট ফাঁকা। গ্রামটি যেন একেবারেই জনমানবহীন হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরাও চাই হত্যাকাণ্ডের বিচার হোক। কিন্তু যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়, তাদের যেন হয়রানি করা না হয়।

পুলিশ জানায়, নিহত রুবি ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন থানায় রুবির নামে ১১টি, ছেলের নামে ৯টি, মেয়েদের নামে অন্তত ১২টি মামলা বিচারাধীন। রুবি নিজেও পুলিশের বিরুদ্ধে ৬১টি অভিযোগ করেছিলেন।

তবে নিহতের মেয়ে রিক্তা আক্তার অভিযোগ করেন, পুরো হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত ছিল। চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লালের নির্দেশেই সবাই হামলা চালিয়েছে। পুলিশ সময়মতো ব্যবস্থা নিলে মা, ভাই ও বোনকে বাঁচানো যেত। আমি এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, এই মামলায় ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হবে না।

মন্তব্য
চবি উপাচার্যকে শিক্ষার্থী

আপনি নিজ যোগ্যতায় আসেননি, আমরা বসিয়েছি

চবি প্রতিনিধি
চবি প্রতিনিধি
শেয়ার
আপনি নিজ যোগ্যতায়  আসেননি, আমরা বসিয়েছি

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিতর্কিত শিক্ষক কুশল বরণ চক্রবর্তীর পদোন্নতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতারের  কক্ষে পদোন্নতির বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে তা বাতিল করা হয়।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সরাসরি উপাচার্যের কক্ষে প্রবেশ করে প্রতিবাদ জানান। তাঁদের অভিযোগ, বিচারাধীন হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত একজন শিক্ষক কিভাবে পদোন্নতির সুযোগ পান?

এ সময় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক নেতা তাহসান হাবিব বিতর্কে জড়িয়ে উপাচার্যকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি নিজ যোগ্যতায় আসেননি, আপনাকে আমরা বসিয়েছি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদোন্নতি বোর্ডে শিক্ষক কুশল বরণ চক্রবর্তীর উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতারের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বাগবিতণ্ডার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে নানা ধরনের আলোচনা শুরু হয়। ভিডিওটিতে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী (তাহসান হাবিব) উপাচার্য ইয়াহিয়া আখতারকে বলছেন, আপনি নিজ যোগ্যতায় আসেননি, আপনাকে আমরা বসিয়েছি।

ভিডিওতে আরো দেখা যায়, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতারের কার্যালয়ে পদোন্নতির বিষয়ে কথা বলতে যান। এর কিছুক্ষণ পর সেখানে সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তী উপস্থিত হন।

উপাচার্যের উপস্থিতিতেই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন শিক্ষক কুশল বরণ। পরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষক কুশল বরণকে প্রশাসনিক ভবনের অন্য একটি কক্ষে নিয়ে ওই ভবনের মূল ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

পরে কুশল বরণ চক্রবর্তী বলেছেন, তিনি মবের শিকার হয়েছেন।

ভিডিওতে আরো দেখা গেছে, উপাচার্যের সঙ্গে কথোপকথনের শুরুতে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একজন শিক্ষার্থী বলেন, আপনাকে এখানে বসিয়েছি অবশ্যই যাতে আপনি আমাদের সঙ্গে কাজ করেন।

তখন উপাচার্য বলেন, না (তিনি মাথা নেড়ে অসম্মতি জানাতে থাকেন)।

এ বিষয়ে গতকাল শনিবার তাহসান হাবিব কালের কণ্ঠকে বলেন, শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে উপাচার্যের অনুমতি নিয়েই আমরা তাঁর কক্ষে যাই। কুশল বরণ প্রসঙ্গসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান নানা ইস্যুতে কথা বলতে চাইলে উপাচার্য মুখ না খুলে নীরব থাকেন। তখনই আমি ওই মন্তব্য করি এবং বলি, আপনার দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের কথা শোনা ও সমস্যার সমাধান করা।

তাহসান বলেন, আমার ওই কথাটি বলা ঠিক হয়নি এবং সেটির জন্য আমি তৎক্ষণাৎ ক্ষমাও চেয়েছি।

তাঁর অবশ্যই যোগ্যতা আছে দেখেই তিনি ওই অবস্থানে এসেছেন। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তখন উত্তেজিত হয়ে মন্তব্যটি আমার করা।

তাহসান জানান, আলোচনার এক পর্যায়ে কুশল বরণ অনুমতি ছাড়াই কক্ষে প্রবেশ করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে উপস্থিত ছাত্রশিবিরের অফিস সম্পাদক হাবিবুল্লাহ খালেদ কুশল বরণের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কাগজপত্র দেখিয়ে প্রশ্ন তোলেন হত্যাচেষ্টার আসামি কিভাবে এখানে আসে?

তিনি জানান, কুশল বরণ হঠাৎ অনুমতি ছাড়া কক্ষে প্রবেশ করে এবং বলেন, আমি কুশল বরণ। সে সময় শিক্ষার্থীরা সবাই চমকে ওঠে এবং এক পর্যায়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে কাগজ হাতে নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও সে সময় সবাইকে ভিডিও ধারণ করতে নিষেধ করা হয়েছিল।

তাহসান বলেন, তারপর কুশল বরণকে কক্ষ থেকে সরানোর পর উপ-উপাচার্য আমাদেরও বের হয়ে আসতে বলেন।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে একাধিকবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতারকে মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

মন্তব্য

নাসিরনগরে ছাত্রদল নেতা নিহত ছয় জেলায় আরো ছয় খুন

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
নাসিরনগরে ছাত্রদল নেতা নিহত ছয় জেলায় আরো ছয় খুন

দেশের বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষ, জমি নিয়ে বিরোধ ও পারিবারিক দ্বন্দ্বে সাতজন নিহত হয়েছে। গতকাল শনিবার এবং আগের দিন শুক্রবার রাতে এসব ঘটনা ঘটে। কোথাও গোষ্ঠীগত বিরোধ, কোথাও জমি নিয়ে বিরোধ, আবার কোথাও পারিবারিক কলহে প্রাণ হারিয়েছে নিরীহ মানুষ। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য :

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের চাতলপাড় বাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উল্টা ও মোল্লা গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে মো. সোহরাব হোসেন (২৮) নামের এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন।

তিনি চাতলপাড় ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উভয় গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ছিলেন বিএনপি ও যুবদলের স্থানীয় নেতারা। সংঘর্ষে আহত হয়েছে আরো অন্তত ৩০ জন। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি বাড়িঘরে লুটপাটের অভিযোগও পাওয়া গেছে।

কাপাসিয়ায় প্রবাসফেরত তরুণকে কুপিয়ে হত্যা : গাজীপুরের কাপাসিয়ার সনমানিয়া ইউনিয়নে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন সৌদি আরব ফেরত জাহিদুল ইসলাম (২৮)। গত শুক্রবার রাতে বাড়ির পাশে দোকানে বসা অবস্থায় ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত তাঁকে ডেকে নিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়।

পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানিয়েছে, দুর্বৃত্তদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ ছিল। নিহতের পরিবারের দাবি, জাহিদুলের কোনো শত্রুতা ছিল না।

চট্টগ্রামে চাচাতো ভাইয়ের হাতে কিশোরী খুন : ফটিকছড়িতে চা শ্রমিক সুপ্তা মাজিকে (১৫) বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তার চাচাতো ভাই রতন দাশ (৩৭)।

গতকাল ভোরে উদালিয়া চা-বাগানে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক কলহের জেরে রতন তাকে হত্যা করেছেন। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, সেলাইকাজ শেখা নিয়ে বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

মেলান্দহে জমি নিয়ে বিরোধে হামলায় একজন নিহত : জামালপুরের মেলান্দহে জমি নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় জিয়াউল হক (৫৫) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর জাঙ্গালিয়া এলাকায় এই হামলায় আরো আটজন আহত হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, বিরোধপূর্ণ জমিতে বাঁশ কাটতে গেলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে জিয়াউল হক গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধে গৃহবধূ খুন:

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে খালেদা বেগম শুকমন (২৬) নামের এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন।

গতকাল সকালে চাচাতো ভাইয়েরা হাঁসুয়া দিয়ে আঘাত করলে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর মা, বাবা ও বোন। অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে।

কালকিনিতে নিখোঁজ বৃদ্ধের লাশ পাটক্ষেতে

মাদারীপুরের কালকিনিতে নিখোঁজের এক দিন পর আব্দুল জলিল সিকদার (৭০) নামের এক বৃদ্ধের মরদেহ পাটক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। গতকাল সকালে স্থানীয়রা তাঁর মরদেহ খুঁজে পায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এসব ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তদন্ত চলমান এবং মামলার প্রক্রিয়া চলছে। সামাজিক ও পারিবারিক বিরোধ, জমি নিয়ে বিবাদ এবং অপরাধপ্রবণ গোষ্ঠীগত সংঘর্ষ এখন উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অভয়নগরে মাছ কাটা শ্রমিকের ঝুলন্ত লাশ

যশোরের অভয়নগরে ইমরান খাঁ (১৮) নামের এক মাছ কাটা শ্রমিকের অর্ধগলিত ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গতকাল বিকেলে নওয়াপাড়া মাছবাজার এলাকার একটি টিনের ঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরিবারের দাবি, তাঁকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড, তা নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্তের অপেক্ষা করা হচ্ছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ