<p>কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন সময়ের ঘটনা। সেই আন্দোলন নিয়ে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শোতে আলোচক হিসেবে অংশ নেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। কিন্তু আলোচনার এক পর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে সঞ্চালকের ওপর ক্ষিপ্ত হন তিনি। পুরো অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকবার সঞ্চালকের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন এবং উচ্চবাচ্য করেন। সেই ভিডিওটি বেশ ভাইরাল হয়। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করায় উপস্থাপক দীপ্তি চৌধুরীর প্রশংসা চলতে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ঘটনার কয়েক দিন পরে ওই অনুষ্ঠানের এক-দুই মিনিটের ‘বিহাইন্ড দ্য সিন’ প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, অনুষ্ঠান শেষে স্টুডিও ছাড়ার আগে সঞ্চালককে প্রকাশ অযোগ্য ভাষায় গালি দেন বিচারপতি মানিক। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পুরো সামাজিক মাধ্যম জুড়ে মানিকের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে সাধারণ মানুষ। প্রশ্ন তোলে, এই মানুষ কী করে বিচারপতির মতো আসনে বসে ছিলেন।</p> <p>এ ঘটনায় প্রকাশ্যে ও সংশ্লিষ্ট সঞ্চালকের কাছে ক্ষমা চাইতে রবিবার আইনি নোটিশ পাঠান ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। প্রকাশ্য ও লিখিতভাবে ক্ষমা না চাইলে সাবেক বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল নোটিশে।</p> <p>সোমবার (১২ আগস্ট) বিচারপতি মানিক এই আইনি নোটিশের জবাব দেন বলে জানান আইনজীবী ফাওজিয়া করিম।</p> <p>কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘সোমবার বিকেল ৫টা ৩৮ মিনিটে উনি (বিচারপতি মানিক) আমার হোটসঅ্যাপে একটা রিপ্লাই দিয়েছেন। সেখানে উনি প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এবং উনি সেখানে বলেছেন, ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানাতে পারেন।’</p> <p>আইনি নোটিশের জবাবে সাবেক বিচারপতি মানিক লিখেছেন, তিনি একজন হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিক রোগী। টক শোর দিন তাকে অনেক লম্বা পথ হেঁটে প্রগ্রামে অংশগ্রহণ করতে হয়েছিল। ফলে তার ব্লাড সুগার নেমে যায় ও ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায় এবং একই সঙ্গে তিনি প্রচুর ক্লান্ত বোধ করছিলেন। যার কারণে তিনি তার নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। তিনি তার এরূপ আচরণের জন্য উপস্থাপিকার কাছে গভীরভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।</p> <p>ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কালের কণ্ঠ’র সঙ্গে কথা বলেন উপস্থাপক দীপ্তি চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের পক্ষে আমি। এটার যে প্রতিবাদ হয়েছে সেটা সামগ্রিকভাবে যে কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ হিসেবে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’</p> <p>বিচারক মানিক ক্ষমা চাইলে দীপ্তি কি ক্ষমা করেছেন? জানতে চাইলে এই গুণী উপস্থাপক বলেন, ‘যেকোনো মানুষ ক্ষমা প্রার্থনা করলে তাকে স্বাগত জানানোই উচিত আমাদের। ব্যক্তিগতভাবে আমিও হিংসা বা ক্ষোভ পুষে রাখার পক্ষে নই!’</p> <p>বর্তমানে দীপ্তি চৌধুরী ‘এখন কী চাই?’ নামের একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন। সেখানে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ জানাবেন তিনি বা তারা এই মুহূর্তে আসলে কী চান!</p>