<p>একসময় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন, তবে থিতু হননি শাহেদ শরীফ খান। টিভি পর্দা ঘিরেই তাঁর যত ব্যস্ততা। সেখানেও এখন অনিয়মিত। গতকাল থেকে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে নতুন ধারাবাহিক ‘মিলন হবে কত দিনে’-তে। তাঁর খবরাখবর নিয়েছেন কামরুল ইসলাম।</p> <p><strong>ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ দিয়ে শুরু করি। এই জন্মদিনে (৭ মে) স্ত্রীর কাছ থেকে টেলিস্কোপ উপহার পেয়েছিলেন, মহাকাশের প্রতি কি বিশেষ আগ্রহ আপনার?</strong><br /> হ্যাঁ, আমি তো সায়েন্সের ছাত্র ছিলাম। বিজ্ঞান-মহাকাশ এগুলোর প্রতি বরাবরই আমার আগ্রহ। তবে টেলিস্কোপ নিয়ে খুব একটা জানাশোনা নেই আমার। নতুন করে অনেক বিষয় জানার চেষ্টা করছি। আবার সন্তানদেরও দেখাচ্ছি, ওরাও যেন আগ্রহী হয়।</p> <p><strong>যত দূর জানি, পরিষ্কার বায়ুর এলাকা থেকে টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশ ভালো দেখা যায়। ঢাকা থেকে কেমন দেখলেন?</strong><br /> আসলে টেলিস্কোপের বিভিন্ন লেন্সের ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহার। সেগুলো আয়ত্ত করতে হচ্ছে। প্রথম দিন চাঁদ দেখেছি, তবে আমি সন্তুষ্ট নই। আমি চাই ছয়-সাত তলা ভবন থেকে নিচে তাকালে মাটিকে যেমন দেখতে পাই, সেভাবেই গ্রহগুলো দেখতে।</p> <p><strong>দুই যুগের বেশি সময় ধরে শোবিজে আছেন। ঠিক এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে যদি ভাবেন, এমন জীবনই কি চেয়েছিলেন?</strong><br /> সুন্দর প্রশ্ন, উত্তরটা সহজভাবে দিই। আমি তো আগের মতো অভিনয় করি না। মনের মতো হলে তবেই করি। এই যে আপনি ভালোবেসে ফোন করেছেন, ইন্টারভিউ নিচ্ছেন—সেটা কি একটা বড় ব্যাপার নয়? আর বাড়ির বাইরে গেলেও মানুষের অনেক ভালোবাসা পাই। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে কাউকে ঠিকানা জিজ্ঞাস করলাম, তিনি ঠিকানা বলতে গিয়ে আমাকে চেনার পর বাড়তি উচ্ছ্বাস-ভালোবাসা দেখাচ্ছেন, আবার একদম গ্রামে গেলেও মানুষ চিনছে—এসবেই আমি তুষ্ট।</p> <p><strong>প্রত্যাশার পারদ এর চেয়ে কম নাকি বেশি ছিল?</strong><br /> একেকটা মানুষের প্রত্যাশা একেক ধরনের। আমি খুব খুশিতে উত্ফুল্ল হই না, আবার অনেক দুঃখে ভেঙেও পড়ি না, স্বাভাবিক থাকি। আমি তো টম ক্রুজ হতে পারব না, আমার অত প্রত্যাশা নেই। একটাই চাওয়া, যেন চলে যাওয়ার পরও মানুষ আমাকে মনে রাখে।</p> <p><strong>বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ‘জয়যাত্রা’ (২০০৪) দিয়ে অভিষেক, করেছেন ‘প্রিয় সাথী’, পরে শাবনূরের সঙ্গেও জুটি হয়ে ছবি করেছেন। এই অঙ্গনে থিতু হতে পারতেন তো...</strong><br /> অভিনয়শিল্পীদের চূড়ান্ত লক্ষ্য তো আসলে সিনেমা। অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমিও সিনেমা করতে গিয়েছিলাম। এটা হয়তো আমার দুর্ভাগ্য, আমি তাঁদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারিনি। বিভিন্ন সময়ে দেখলাম, তাঁদের কমিটমেন্টের ঠিক নেই। পেছনে পেছনে লেগে থাকা আমার দ্বারা সম্ভব নয়। আমার লাইফ খুব সিম্পল। কাজ করব, পারিশ্রমিক দেবে অথবা একটা নির্দিষ্ট তারিখ দেবে, আমি বাসায় চলে আসব। কিন্তু এত পলিটিক্স, দুশ্চিন্তা—এসবে আমি আগ্রহী ছিলাম না। এ কারণে হয়তো সিনেমাটা সেভাবে করা হয়নি। এটা নিয়ে দুঃখ আছে, আক্ষেপও আছে।</p> <p><strong>নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে ওটিটি। অনেকেই এই মাধ্যমে নতুন করে পরিচিতি পেয়েছেন। আপনাকে এখনো ওটিটিতে পাওয়া যায়নি। সম্ভাবনা আছে? অভিনয় বা নির্মাণে?</strong><br /> সত্যি বলতে, অভিনয়ের জন্য এখন পর্যন্ত সে রকম কোনো কাজের ডাক পাইনি। দু-একটার ব্যাপারে কথা হয়েছে বটে, পছন্দ হয়নি। আর নির্মাণ তো প্রায় ছেড়েই দিয়েছি। মনে হয়েছে, পরিবেশটা কেমন যেন বদলে গেছে। যারা আমাদের সময়ে ছিলেন, তারাও নেই। নতুন প্রজন্মের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ কম। ফলে দূরত্ব বেড়ে গেছে। এসব কারণে সময় নিচ্ছি। হয়তো ভবিষ্যতে কখনো হবে।</p> <p><strong>প্রজন্মের কথা বললেন। এই সময়ের শিল্পী-কুশলীদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?</strong><br /> মিশ্র অভিজ্ঞতা। নতুনদের অনেকে আমাকে চেনে, সুন্দরভাবে রিসিভ করে। আবার কেউ কেউ চেনে না, তখন পরিচিত হই। নতুনদের নিয়ে একটা কথা বলতে চাই, ওরা খুব অস্থির। মনে হয় পুরো বাংলাদেশই এখন এমন হয়ে গেছে। সবাই এখন অল্প সময়ে লক্ষ্যে পৌঁছতে চায়। কাজের চেয়ে এসব শর্টকাট নিয়ে ব্যস্ত তারা।</p> <p><strong>‘মিলন হবে কত দিনে’ ধারাবাহিকটা কেমন?</strong><br /> এই ধারাবাহিকের পরিচালক গোলাম সোহরাব দোদুল আমার বন্ধুভাজন মানুষ। সুযোগ থাকলে আমাকে ডাকে, আমারও গল্প পড়ে চরিত্রটা পছন্দ হয়েছে। এভাবেই কাজটি করা। আশা করি, দর্শকেরও ভালো লাগবে। যদিও কথাটা সবাই বলেন, সব কাজের ব্যাপারেই। তবে ভালো কাজ হলে দর্শক সেটা দেখে।</p> <p><strong>এর বাইরে আর কিছু করছেন?</strong><br /> বেশির ভাগ সময় দিচ্ছি ব্যবসায়। কী ব্যবসা? আবার সেটা জিজ্ঞাসা করবেন না। ব্যবসার বাইরে শোবিজে অল্পবিস্তর সময় দিচ্ছি। দীপ্ত টিভিতে একটি ধারাবাহিক চলছে—‘বকুলপুর—সিজন ২’। ঈদের একটি নাটকের ব্যাপারে কথা হয়েছে, দেখা যাক।</p>