<p>বাংলাদেশকে যারা পুরনো ফ্যাসিস্ট কাঠামোয় ফেরত নিতে চায় তাদের  বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে। জনগণের আকাঙ্খা পূরণে নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।</p> <p>শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩ টায় মোহাম্মদপুরের বেঙ্গলী মিডিয়াম হাইস্কুলে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে মোহাম্মদপুর-আদাবর অঞ্চলে আহত-নিখোঁজ ও শহীদদের তালিকা প্রকাশ ও স্মরণসভা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।</p> <p>মোহাম্মদপুর থানার সংগঠক ফাইয়াজ ফিরোজের সভাপতিত্বে ও গণসংহতি আন্দোলনের সংগঠক হাসান আল মেহেদীর সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যবৃন্দ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জোনায়েদ সাকি, নির্বাহী সমম্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, বিশিষ্ট সাংবাদিক আশরাফ কায়সার, গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পু, উত্তরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বাবন, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী আবু হানীফা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ, ঢাকা মহানগর  সাধারণ সম্পাদক নুসরাত হক, মোহাম্মদপুর থানা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি সজল আহমেদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। </p> <p>স্মরণসভা অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারকে অতিদ্রুত পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে। আহতদের চিকিৎসায় হাসপাতালগুলো যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে, আমরা সরকারকে দ্রুত আহতদের চিকিৎসায় মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি এবং সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি।’</p> <p>গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে এক বর্বর শাসন কায়েম করেছিলো। ছাত্র জনতার আন্দোলনে এমনকি যারা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসা পর্যন্ত নিতে দেয়নি। তাই অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান কাজ হবে এই আন্দোলনে শহীদদের পূর্ণ তালিকা করা, আহতদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।</p> <p>প্রধান অতিথির বক্তব্যে  জোনায়েদ সাকি বলেন, যে মানুষ সকল মানুষের প্রয়োজনে, জনগণের প্রয়োজনে, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে জীবন দিতে পর্যন্ত কুন্ঠাবোধ করেন নি তারা এই জাতির জন্য প্রজন্ম থেকে প্রজন্মতরে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রথম দায় তাদেরকে জাতীয় বীরের মর্যাদা দেয়া। আর প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের যথাযথ বিচার করা। নতুন বাংলাদেশে ন্যায়বিচারকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। যারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত শেখ হাসিনাসহ প্রত্যেকের বিচার করতে হবে।</p> <p>গার্মেন্ট শ্রমিকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের নায্যমজুরির দাবি অত্যন্ত নায্য। তাই অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে শ্রমিকের নায্য মজুরির দাবি মেনে নেবার আহ্বান জানাই। অন্যদিকে শ্রমিক ভাই-বোনদের বলি, এই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদের পাশাপাশি শ্রমিক-কৃষক-শ্রমজীবী মানুষও ছিলেন। সাভার-আশুলিয়া অঞ্চলে শ্রমিকরা জীবন বাজি রেখে ফ্যাসিস্টদের প্রতিরোধ করেছেন। তাই পতিত ফ্যাসিস্টরা যাতে কোনো ষড়যন্ত্র করতে না পারে সে ব্যাপারেও শ্রমিকদের সচেতন থাকতে হবে।’</p> <p>সভাপতির বক্তব্যে ফাইয়াজ ফিরোজ বলেন, ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদ, আহত ও নিখোঁজদের তালিকা প্রণয়নে কমিশন গঠন করতে হবে। একজন শহীদও যাতে তালিকার বাইরে না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।</p> <p>অনুষ্ঠানে গত ২৩ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গণসংহতি আন্দোলনের ক্যাম্প থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মোহাম্মদপুর-আদাবর অঞ্চলে ২২ জন নিহত, ২২৭ জন আহত ও ২ জনের নিখোঁজ হওয়ার তথ্য জানানো হয়।</p>