<p style="text-align:justify">বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেই কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ছাত্র-জনতার হত্যার প্রতিবাদে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শিল্পীরা। ‘গণহত্যা ও নিপীড়নবিরোধী শিল্পীসমাজ’-এর ব্যানারে আয়োজিত এই সমাবেশে অংশ নিয়েছেন দৃশ্যশিল্পী, আলোকচিত্রশিল্পী, পারফরম্যান্সশিল্পী, সংগীতশিল্পী, কবি, লেখক, গবেষক, স্থপতি, শিল্প সংগঠকসহ অনেক সাধারণ নাগরিক।</p> <p style="text-align:justify">শুক্রবার (২ আগস্ট) সকাল ১১টায় ধানমণ্ডির সাতমসজিদ রোডে আবাহনী মাঠের সামনে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই সমাবেশ। </p> <p style="text-align:justify">সমাবেশের শুরুতে ছিল হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য নিয়ে দীর্ঘ ক্যানভাসে লাল রঙের প্রতিবাদী চিত্র অঙ্কন। বৃষ্টির কারণে শিল্পীরা দ্রুত অঙ্কন শেষ করেন। এরপর পরিবেশন করা হয় ‘আস্থা-অনাস্থা’ শীর্ষক একটি পারফরম্যান্স আর্ট। এই পরিবেশনায় সড়কের ওপর মিছিলের আবহ তৈরি করেন শিল্পীরা। তারপর গুলিবর্ষণ ও রক্তে রঞ্জিত হওয়ার দৃশ্য তৈরি করা হয়। এ সময় মাইকে শহীদের নাম ধরে ডাক দিলে একজন করে শিল্পী ‘উপস্থিত’ বলে সাড়া দেন। </p> <p style="text-align:justify">সমাবেশে এই পরিবেশনাটি ছাড়াও সংগীতশিল্পীরা উদ্দীপনাময় গণসংগীত ও আবৃত্তি পরিবেশন করেছেন। আর ছিল প্রতিবাদী স্লোগান। </p> <p style="text-align:justify">সমাবেশে নিহতদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত, বিচার ও হত্যার দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগের দাবি তোলা হয়েছে। সমাবেশ শেষে সাতমসজিদ সড়ক দিয়ে শোভাযাত্রা করে ধানমণ্ডির ২৭ নম্বর সড়কে গিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়। সভা শেষে শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৩টায় ধানমণ্ডির রবীন্দ্রসরোবরে সংগীতশিল্পীদের আয়োজনে প্রতিবাদী সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">সমাপনী বক্তব্যে সমাবেশের আহ্বায়ক শিল্পসমালোচক ও চিত্রশিল্পী মোস্তফা জামান বলেন, ‘শিল্পীসমাজ চলমান রাষ্ট্রীয় অনাচার, অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো কর্তব্য মনে করে এই সমাবেশ আয়োজন করেছে। বহু বছর ধরে দেশে গণতান্ত্রিক পরিসর অনুপস্থিত। গণমানুষ রাজনৈতিক অধিকার হারিয়েছে, ভোটাধিকার বঞ্চিত হয়েছে। নিবর্তনমূলক আইনের মাধ্যমে মতপ্রকাশের অধিকার রুদ্ধ করা হয়েছে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে যখন ছাত্রদের কোটা সংস্কারের দাবি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরিণত হয়েছে এবং তা দমনের নামে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চলেছে, তখন শিল্পীসমাজ ছাত্র-জনতার সঙ্গে সংহতি জানাতে পথে নেমেছে। এই আন্দোলন চলবে।’</p> <p style="text-align:justify">সমাবেশে শিল্পীসমাজের পক্ষ থেকে ৩ দফা দাবি জানানো হয়। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, গণগ্রেপ্তার ও গণমামলা বন্ধ করে অবিলম্বে আটককৃত ছাত্র-জনতাকে মুক্তি দেওয়া। কারফিউ তুলে নিয়ে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও সরকারদলীয় বাহিনী মুক্ত করা। কোটা সংস্কার আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ।</p> <p style="text-align:justify">সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন নারী নেত্রী ফরিদা আক্তার, বেসরকারি সংস্থা ব্রতী ও উত্তরসূরির কর্ণধার শারমিন মুর্শিদ, লেখক রেহেনুমা আহমেদ, কবি সাখাওয়াত টিপু, শিল্পী সুমনা সোমা। আয়োজকদের পক্ষে সমাবেশের বিবৃতিপত্র পাঠ করেন কবি অরূপ রাহী। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানাও এই সমাবেশে অংশ নেন। তবে তিনি বক্তব্য দেননি।</p> <p style="text-align:justify">সমাবেশের আয়োজকদের মধ্যে ছিলেন আলোকচিত্রী ইমতিয়াজ আলম বেগ, সংগীতশিল্পী অরূপ রাহী, সংগীতশিল্পী বিথী ঘোষ, কিউরেটর আমিরুল রাজীব, শিল্পী শেহজাদ চৌধুরী, অসিত রায়, তানজিম ইনায়াত, কবি শাওন চিশতি, চিত্রশিল্পী কাজী তাহসিন আগাজ অপূর্ব, নুজহাত তাবাসসুম আনন, সুবর্ণা মোর্শেদা, মেহবুবা মাহজাবীন হাসান, আলোকচিত্রশিল্পী রাইয়ান ইসলাম, স্থপতি রীশাম শাহাব তীর্থ প্রমুখ।</p>