<article> <p style="text-align: justify;">ফাতেমা বেগম ওরফে ফতু। বয়স ৩৯ বছর। রাজধানীর পল্লবীর বাউনিয়াবাঁধ এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী বলে তাঁকে চেনে অনেকে। স্থানীয় কেউ কেউ বলে ‘মাদকসম্রাজ্ঞী’। শুধু নিজেই নন, পরিবারের আরো কয়েকজন তাঁর সঙ্গে মাদক ব্যবসায় জড়িত। গত ১০ বছরে ফতুসহ তাঁর ১০ জন স্বজনের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় ৬৯টি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি মামলা ফতুর বিরুদ্ধে, যার মধ্যে ১৭টিই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা।</p> <p style="text-align: justify;">এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তিনি একাধিকবার মাদকদ্রব্যসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন। পরে জামিনে বেরিয়ে এসে একই অপরাধে জড়িয়ে ফের গ্রেপ্তার হয়েছেন।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">পল্লবী থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ গত ১৮ জানুয়ারি রাতে পল্লবীর বাউনিয়াবাঁধ এলাকা থেকে ফতুকে তাঁর সহযোগী রোজিনা বেগমসহ (৩৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৫০০টি ইয়াবা জব্দ করে পুলিশ। ফতুসহ ওই নারীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">পল্লবী থানার ওসি অপূর্ব হাসান কালের কণ্ঠকে জানান, পল্লবীবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে থানা-পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে। এরই অংশ হিসেবে মাদক ব্যবসায়ী ফতুকে গ্রেপ্তার করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>ফতুর পরিবারে কার বিরুদ্ধে কত মামলা</strong></p> <p style="text-align: justify;">ফতুসহ তাঁর স্বজনদের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় গত ১০ বছরে ৬৯টি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ফতুর স্বামী, ছেলে, মা, ভাই, ভাবি, বোন ও ভাগ্নের নাম রয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">২০১৪ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে গত ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ফতুর নামে পল্লবী থানায় ১৯টি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলা। অন্তত ছয়টি মামলায় অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়ার তথ্য জানা গেছে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">ফতুর ভাই মো. মামুনের (৩৫) নামে করা ২০টি মামলার মধ্যে ১৪টি মাদক মামলা। মামুনের স্ত্রী মনি আক্তারের নামেও চারটি মাদক মামলাসহ পাঁচটি মামলা। ফতুর আরেক ভাই খোকনের নামে সাতটি মাদক মামলাসহ মোট ১১টি ও তাঁর স্ত্রী রাবেয়ার নামে একটি মামলা রয়েছে। ফতুর ভাগ্নে অনিকের (২৭) নামে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে ছয়টি ও ফতুর ছেলে শাকিবের (২২) নামে একটি মামলা করা হয়েছে। ফতুর স্বামী খোকন সরকার (৪৮) ও মা হাসিনা বেগমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় তিনটি করে মাদক মামলা করা হয়। ফতুর বোন পাপিয়ার নামেও একটি মামলা রয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">রহমত আলী (ছদ্মনাম) নামের স্থানীয় এক মুদি দোকানি বলেন, এলাকায় ‘মাদকসম্রাজ্ঞী’ ফতুকে প্রায় সবাই চেনে। এই পরিবারের সদস্যদের নামে অনেক মাদক মামলা রয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফতুর বোন পাপিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ফতু একসময় মাদক কারবার করতেন। গাজা বিক্রি করতেন। এ জন্য বিভিন্ন সময় ধরা খাইতেন।’</p> <p style="text-align: justify;">মায়ের বিষয়ে পাপিয়া বলেন, ‘মা বয়স্ক মানুষ। ৩০ বছর আগে বাংলা মদ বিক্রি করতেন বলে শুনেছি।’</p> <p style="text-align: justify;">পারিবারিক মাদক কারবারের বিষয়ে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (গোয়েন্দা ও অপারেশন) তানভীর মমতাজ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রায়ই দেখি যারা মাদক ব্যবসা করে, গ্রেপ্তারের পর জামিনে বেরিয়ে একই কাজ করে। এভাবে দেখা বারবার গ্রেপ্তারের ফলে একাধিক মামলা করা হয়।’</p> </article>