<p style="text-align:justify">‘চারপাশে শুধু পানি আর পানি। এত পানি ২০ বছরেও দেখিনি। ঘরের ভেতর পানি, খাটের ওপরে টং বানাইয়া থাকতে হইতাছে, কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে, অবস্থা খুবই খারাপ।’</p> <p style="text-align:justify">কথাগুলো বলছিলেন, পানিবন্দি এলাকার বাসিন্দা মীর কাশেম (৬১) নামের এক ব্যক্তি। তিনি দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বিলকাঁকড়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। </p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘পানিতে রান্না, বসতঘরসহ বাড়ির সব কিছু ডুবে গেছে। জিনিসপত্র সব নষ্ট হয়ে গেছে। মানুষজন না খেয়ে আছে। অনেক গরু-ছাগল পানিতে ভেসে গেছে, মারা গেছে। কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে। আমাদের আমন ধান সব পানির নিচে, সব নষ্ট হয়ে যাবে।’</p> <p style="text-align:justify">একই এলাকার বাসিন্দা রহিত মিয়া বলেন, ‘পানিতে সব শেষ হয়ে গেছে। রান্না করে এক বেলায় খাওয়া মতো অবস্থা নাই। আল্লাহ জানে আমাদের ভাগ্যে কী আছে।’</p> <p style="text-align:justify">সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুই চোখ যেদিকে যায় শুধু পানি আর পানি। যাদের নৌকা নেই তারা কলাগাছ দিয়ে ভেলা বানিয়ে চলাচল করছে। ওই এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, অনেকেই দুই দিন ধরে না খেয়ে আছেন। </p> <p style="text-align:justify">স্থানীয়রা জানায়, ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে কুল্লাগড়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১০টি গ্রাম। এ ছাড়া গাঁওকান্দিয়া, কাকৈরগড়া, চণ্ডীগড় ও বাকলজোড়া ইউনিয়নের ৩০টিরও বেশি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে শত শত পুকুর ও শতাধিক মৎস্য খামারের মাছ। </p> <p style="text-align:justify">পানিতে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর জমির আমন ধানক্ষেত। স্থানীয় সড়কগুলো ডুবে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নেতাই নদী ও সোমেশ্বরী নদী পানিতে প্লাবিত হয়েছে এই নিম্নাঞ্চল। গত তিন দিন ধরে পানিবন্দি ৫০ হাজার মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। </p> <p style="text-align:justify">দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, পানিবন্দি এলাকার মানুষের মাঝে শুকন খাবার ও চাল বিতরণ করা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে টিম গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি ছাত্রসমাজ ও স্বেচ্ছাসেবীরাও কাজ করছেন।</p>