<p>চাঁদপুরে মেয়রসহ ১৬ জনপ্রতিনিধি আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের অনুপস্থিতিতে নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এদিকে শুধু চাঁদপুর সদরই নয়, অন্য সাত উপজেলায়ও একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ফলে সেখানেও নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে। </p> <p>বুধবার (১৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন রাসেলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান না এলেও আমরা নিয়মিত অফিসে আসছি। চেয়ারম্যান কবে আসবেন, তা বলতে পারব না। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাও নিয়মিত অফিস করছেন।’</p> <p>দুই দিন ধরে সদর উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সদরের বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে চেয়ারম্যানদের কক্ষে তালা দেখা যায়। চেয়ারম্যানের আত্মগোপনের বিষয়টি স্বীকার না করলেও নিরাপদ অবস্থানে আছেন বলে জানান ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।</p> <p>৫ আগস্টের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওচমান গণি পাটওয়ারী, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির সুমন ও পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান। আরো আত্মগোপনে আছেন বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাছির উদ্দিন খান, আশিকাটি ইউপি চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেন পাটওয়ারী, কল্যাণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন রনি, শাহ মাহমুদপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান নান্টু, রামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আল-মামুন পাটওয়ারী, মৈশাদি ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী, তরপুরচণ্ডী ইউপি চেয়ারম্যান ইমাম হাসান রাসেল, বাগাদী ইউপি চেয়ারম্যান মো. বেলায়েত হোসেন, বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল্যা পাটওয়ারী, লক্ষ্মীপুর মডেল ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খান (গণপিটুনিতে নিহত), ইব্রাহীমপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আবুল কাশেম খান, চান্দ্রা ইউপি চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু পাটওয়ারী, হানারচর ইউপি চেয়ারম্যান ছাত্তার রাঢ়ী ও রাজরাজেশ্বর ইউপি চেয়ামর‌্যান হজরত আলী বেপারী প্রমুখ।</p> <p>বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাছলিমা আক্তার বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে চেয়ারম্যান পরিষদে আসেননি। সেবামূলক কাজ প্রস্তুত করে রেখেছি। কিন্তু তার স্বাক্ষর ছাড়া এসব সরবরাহ দিতে পারছি না।’</p> <p>আশিকাটি ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু বকর মানিক বলেন, ‘শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর পরিষদে ভাঙচুর করা হয়েছে। এর পর থেকে চেয়ারম্যান আত্মগোপনে আছেন। পরিষদে আসেন না।’</p> <p>এসব বিষয় জানতে চাইলে চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়া জামিল সৈকত বলেন, ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে সেবাপ্রত্যাশীরা যাতে কোনো দুর্ভোগে না পড়েন, সেই বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেসব জনপ্রতিনিধি উপস্থিত নেই তাদের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।</p> <p>এদিকে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল ৫ আগস্টের আগ থেকেই আত্মগোপনে এবং তার বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনার পর থেকে মেয়রের ব্যক্তিগত মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তবে তার অনুপস্থিতিতেও পৌরসভার জরুরি সেবামূলক কার্যক্রম চলমান আছে।</p> <p>শুধু চাঁদপুর সদরই নয়, জেলার অন্য প্রায় সব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ এবং পৌরসভার মেয়ররাও গা ঢাকা দিয়েছেন। ফলে এই সাত উপজেলায় নাগরিক সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তাই দ্রুত সময়ে এমন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।</p>