<p style="text-align:justify">কারো হাতে রক্তাক্ত কাপড়, আবার কারো হাতে পড়ার বই। এসব নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন সবাই। কোনো কিছুতেই সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা উপস্থিত প্রতিবেশীদের নেই। গ্রামের বাড়ির পাশেই কবরস্থানে পড়ে আছে নিথর দেহ। কেউ বা সেখানে গিয়ে দোয়া দরুদ পাঠ করছেন। </p> <p style="text-align:justify">গত ১৯ জুলাই রাজধানী ঢাকার উত্তরায় নিজ বাসায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত স্কুলছাত্রী নাঈমা সুলতানার গ্রামের বাড়ির চিত্র এটি। ৯ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো স্বজনদের আহাজারি থামছে না।</p> <p style="text-align:justify">মা আইনুন্নাহারের দাবি, রাজধানী ঢাকার উত্তরার ওই চারতলা ভবনের বারান্দায় দাঁড়িয়েছিল তার মেয়ে নাঈমা সুলতানা। কিন্তু সেখানেই মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় সে। মর্মান্তিক ওই মৃত্যুর ঘটনার ৯ দিন পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখনো সন্তানের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ।</p> <p style="text-align:justify">চাঁদপুরের মতলব উত্তরের আমুয়াখান্দা উত্তরপাড়ায় নিহত নাঈমা সুলতানার গ্রামের বাড়ি। শনিবার (২৭ জুলাই) বিকালে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। </p> <p style="text-align:justify">নাঈমা সুলতানার বাবা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক গোলাম মোস্তফা দেওয়ান। তিনি জানালেন, সন্তানদের মানুষ করতে গ্রাম থেকে ঢাকায় পাঠান তিনি। তার দুই মেয়ে, এক ছেলে। তার মধ্যে নাঈমা সুলতানা মেজো। গোলাম মোস্তফা দেওয়ান গ্রামের বাজারে রোগী দেখেন। তাই বাড়িতেই বসবাস করছেন তিনি। </p> <p style="text-align:justify">স্ত্রী আইনুন্নাহার বেগম সন্তানদের নিয়ে রাজধানীর উত্তরার ৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়ির চতুর্থ তলায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। </p> <p style="text-align:justify">গোলাম মোস্তফা দেওয়ান জানান, নাঈমা সুলতানা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সন্তানের মরদেহ কাঁধে নেবো, তা কখনো ভাবিনি। কিন্তু কেনো, আমার সন্তান গুলিতে মারা গেলো? তার কি কোনো বিচার পাবো না?</p> <p style="text-align:justify">আইনুন্নাহার বেগম বলেন, বাসার সামনের সড়কে গন্ডগোল হচ্ছিল। সেটা দেখতে আমরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু কিছু বুঝে উঠার আগেই নাঈমা সুলতানার মাথায় গুলি লাগে। মেয়ে সেখানেই রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়ে। </p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, এমন নির্মম মৃত্যু শুধু কি আমার মেয়ের জন্যই নির্ধারিত ছিল? সন্তানের এমন করুণ পরিণতির জন্য দায়ীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।</p> <p style="text-align:justify">গুলিতে নিহত নাঈমা সুলতানার মামাতো ভাই মো. ফাহিম জানান, ঘটনার পর ঢাকা থেকে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্তানে নাঈমাকে দাফন করা হয়।</p>