<p>গত মঙ্গলবার (১৮ জুন) থেকে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। উপজেলার আসমা, চিরাম, রায়পুর ও সিংধা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের শত শত বাড়ি-ঘরে ঢুকে পড়েছে বানের পানি। ছোট ছোট অসংখ্য রাস্তা তলিয়ে গেছে। ডুবু ডুবু করছে উপজেলার অন্যান্য চার ইউনিয়নের সহস্রাধিক বাড়ি-ঘর, পুকুর ও রাস্তা-ঘাট। পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রশাসন।</p> <p>বিভিন্ন সূত্র জানায়, পাহাড়ী ঢলে কংস, দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী, কলমাকান্দার উব্দাখালি, গোমাই, বারহাট্টার ধনাইখালি, গোলামখালি প্রভৃতি নদী ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার হাওর-বাওরের উপচে আসা পানিতে বারহাট্টা উপজেলার অন্তত ৬৪টি গ্রাম এলাকা ইতিমধ্যে বন্যায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। এতে কমপক্ষে ২০হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে।</p> <p>আসমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম ছন্দু জানান, বৃষ্টি আর উজানের পানিতে গুড়ল, গাভারকান্দা, বাহিরচাপড়া, উজানগাঁও প্রভৃতিসহ ১০টি গ্রামের বাড়ি-ঘর ও রাস্তা-ঘাট বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। ওপাড়ের পাহাড় থেকে নেমে আসা কংস, দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী, কলমাকান্দার উব্দাখালি ও বারহাট্টা উপজেলার গোলামখালি নদীর পানিতে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।</p> <p>চিরাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘কলমাকান্দার উব্দাখালি, গোমাই, বারহাট্টার গোলামখালি নদী ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার হাওর-বাওর উপচে আসা পানিতে চিরাম ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। চিরাম, খৈকোনা, খাশিকোনা, পুটাকিয়া, রামারবাড়ি প্রভৃতিসহ অন্তত ১৫টি গ্রামের শত শত বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। এলাকার সকল রাস্তা-ঘাট পানির নিচে।’</p> <p>এ ছাড়া, রায়পুর ইউনিয়নের সেমিয়া, দুধকোড়া, শিমুলিয়া, ঘাইকুড়িবরসহ ১০টি গ্রাম, বারহাট্টা সদর ইউনিয়নের গোড়াউন্দ, বড়ি, জিথন, বাউশী ইউনিয়নের চানপুর, ধোবাহালা, ডহরপাড়া প্রভৃতিসহ ৮টি গ্রাম, সিংধা ইউনিয়নের সিংধা, আশিয়ল, ভাটিপাড়া, বেঙ্গালা প্রভৃতিসহ ১০টি গ্রাম ও সাহতা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডেমুরা, সামানিয়াকান্দা, নয়াপাড়া, জয়ডহর, গোদাডহর প্রভৃতিসহ ৮টি গ্রামের ঘর-বাড়ি ডুবুডুবু অবস্থায় রয়েছে।</p> <p>উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. উবায়েদ উল্লাহ খান বলেন, ‘আশ্রয়ণ কেন্দ্র ও ত্রাণ সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি মনিটর করছি। এ জন্য একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোলরুমের মোবাইল নাম্বার- ০১৭৭১৭৭৩৬৫২, ০১৬২৮৯১৬৩৩৯।’</p> <p>উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বন্যা কবলিত চিরাম ও সাহতাসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরী সভা ডেকে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। চাহিবামাত্র যেকোনো সহায়তা দিতে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।</p>