<p style="text-align: justify;">মৎস্য প্রজনন মৌসুম কার্যকরের জন্য ১ জুন থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস সুন্দরবনে মৎস্য আহরণ ও পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে রেঞ্জের সকল স্টেশনের কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">শুক্রবার (৩১ মে) এ তথ্য নিশ্চিত করে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান বলেন, ‘জুন, জুলাই ও আগস্ট মাস হচ্ছে সুন্দরবনের মৎস্য প্রজননের উপযুক্ত মৌসুম। এই সময় সব প্রজাতির মাছই ডিম ছাড়ে। এজন্য তিন মাস মৎস্য আহরণ ও পর্যটক প্রবেশ বন্ধ থাকবে।’ </p> <p style="text-align: justify;">বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানসের (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়ে আসছে।</p> <p style="text-align: justify;">এদিকে, তিন মাসের জন্য মৎস্য আহরণ বন্ধের ঘোষণায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাগেরহাটের শরণখোলার হাজার হাজার জেলে। ঘূর্ণিঝড়ে অনেকের ঘর নেই, খাবার নেই। স্বাভাবিক জীবনে কবে ফিরতে পারবে নেই তারও নিশ্চয়তা। এমন পরিস্থিতিতে তিন মাসের জন্য মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা জেলেদের জন্য দুঃসংবাদ হয়ে দেখা দিয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">স্থানীয়রা জানান, একদিন মাছ না ধরলে যাদের সংসার চলে না, তারা তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ রাখলে পরিবারসহ না খেয়ে থাকতে হবে। এবছর ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে জেলেরা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হবে। </p> <p style="text-align: justify;">শরণখোলার মৎস্য ব্যবসায়ী জালাল মোল্লা ও জাকির হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড়ে দরিদ্র জেলেদের ঘরবাড়ি সব তছনছ হয়ে গেছে। অনেকে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। অনেকের ঘরে খাবার নেই। আয়ের পথও বন্ধ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে সুন্দরবনের মাছ ধরা ছাড়া এবার আর কোনো কাজ কারার সুযোগ নেই। তাও যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে জেলেরা ছেলে-মেয়ে নিয়ে না খেয়ে মরবে। দুর্গত মানুষের জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনা করে সুন্দরবনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা না দেওয়ার দাবি জানান তারা।</p> <p style="text-align: justify;">বিশেষ বিবেচনায় এবছর মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে কি না জানতে চাইলে পুর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম কালের কণ্ঠকে বলেন, সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় আইআরএমপি’র সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সালে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়ে আসছে। সে অনুযায়ী এবছরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলেরা আবেদন করলে তাদের দাবি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।<br />  </p>