<p>ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরুর মাংস ক্রয়ে আর্থিক চাপ কমাতে ‘গোশত সমিতি’ নামে একধরনের সমিতি গড়ে উঠেছে। ঈদ উদযাপনে মাংস ক্রয়কে সহজলভ্য করতেই গ্রামের মানুষ প্রতিবছর ব্যতিক্রমী এই সমিতি গঠন করে থাকেন। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে গোশত সমিতি গড়ে উঠতে দেখা গেছে। </p> <p>স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রতিবছর এ ধরনের গোশত সমিতি গঠন করা হয়। প্রতি সমিতির সদস্যসংখ্যা ৩০ থেকে ১০০ জন পর্যন্ত হয়ে থাকে। সমিতির অন্তর্ভুক্ত প্রতি সদস্য প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখেন। অর্থ জমাদান চলে এক বছর পর্যন্ত। বছর শেষে জমা করা অর্থ একত্র করে ঈদুল ফিতরের সময় পশু কেনা হয়। ঈদের দুই-এক দিন আগে বা ঈদের আগের রাতে ওই সব পশু জবাই করে গোশত সমিতির সব সদস্যকে সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হয়। সমিতির যেকোনো এক ব্যক্তি দায়িত্ব নিয়ে অন্য সদস্যের সহায়তায় কাজটি করে থাকেন। উপজেলার প্রায় সব গ্রামেই রয়েছে এমন সমিতি।</p> <p>ঘাটাইল পশ্চিমপাড়া গোশত সমিতির সদস্য আল আমিন জানান, এবার তাঁদের সমিতির সদস্যসংখ্যা ৩৬ জন। এ সমিতির সদস্যরা প্রতি মাসে ৩০০ টাকা করে জমা রাখতেন। তাতে যে টাকা হয়েছিল তা দিয়ে গরু ক্রয় করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার গরু জবাই করে গোশত সদস্যদের মধ্যে সমহারে ভাগ করে দেওয়া হবে।</p> <p>স্থানীয় উইজডম ভ্যালির স্কুলের শিক্ষক আলী আহম্মেদ বলেন, ‘আমাদের স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা মিলে গোশত সমিতি করেছি। প্রতিবছরই আমরা সমিতির মাধ্যমে গরু ক্রয় করে গোশত ভাগ করে নিই। এতে আমাদের মাংস ক্রয় সহজলভ্য হয় এবং আর্থিক চাপও কমে।’</p> <p>উপজেলার ধলাপাড়া গ্রামের গোশত সমিতির এস এন খান রানা জানান, গরুর মাংসের উচ্চমূল্যের কারণে গ্রামে গ্রামে গোশত সমিতির সংখ্যা ও জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এ সমিতির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ ধরনের সমিতির মাধ্যমে সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধি পায়। </p> <p>উপজেলার আনেহলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তালুকদার শাহজাহান বলেন, এটা একটি ইতিবাচক উদ্যোগ। সমাজের সব শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণে এই সমিতি সামাজিক বন্ধনকে দৃঢ় করে। এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের আগ্রহ বাড়ে এবং ঈদের আনন্দও বেড়ে যায়।</p>