<p style="text-align: justify;">সর্বশেষ আজ বুধবার সকাল ৭টায় জাহাজে থাকা নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। নাবিকরা জানিয়েছেন, তারা সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন জাহাজের মালিক কর্তৃপক্ষের মিডিয়া পরামর্শক। এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় জাহাজ ‘এমভি আব্দুল্লাহ’র চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান জানিয়েছিলেন, জাহাজের নাবিকদের মোবাইল, ল্যাপটপসহ ব্যবহারের জিনিসপত্র নিয়ে নিচ্ছে জলদস্যুরা। তারপরও জাহাজের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা মালিকপক্ষের ইন্টারনেট কানেকশন খোলা রাখতে বলা হয়েছে। যাতে কোনো মেসেজ থাকলে গোপনে তা বাংলাদেশে পাঠাতে পারেন।</p> <p style="text-align: justify;">সন্ধ্যা ৬টায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে জাহাজে ৫০ জলদস্যু অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছে। তারা একেকজন একেক পয়েন্টে আছে। আমাদের নানাভাবে ভয় দেখাচ্ছে তারা। জাহাজটিতে ২৩ জন নাবিক ও ক্রু রয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ার সাইদুজ্জামান কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিমের কাছে এমন একটি মেসেজ পাঠান বলে জানিয়েছেন গ্রুপের মিডিয়া পরামর্শক মিজানুল ইসলাম। </p> <p style="text-align: justify;">মিজানুল জানিয়েছেন, ভারত মহাসাগরের জাহাজে ‘এমভি আব্দুল্লাহ’ সোমালিয় জলদস্যু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশ নৌবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সমুদ্র নৌ বাণিজ্য সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাকে অবহিত করা হয়েছে। এদিকে নৌ বাণিজ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর আমাদের সঙ্গে আর কারো যোগাযোগ হয়নি। জাহাজটি জলদস্যুরা সোমালিয়ার উপকূলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।</p> <p style="text-align: justify;">বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন সবার আগে হোয়াটসঅ্যাপে জলদস্যু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার মেসেজ পাঠান আমাদের সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখারুল আলমের কাছে। মেসেজটি তিনি সংগঠনের সভাপতির কাছে ফরোয়ার্ড করেন। এরপর সন্ধ্যার দিকে চিফ ইঞ্জিনিয়ার আরেকটি মেসেজ দিয়েছেন মালিক পক্ষের প্রধান নির্বাহীর কাছে। সেখানে তারা নিরাপদে আছেন বলে জানিয়েছেন। তখন জাহাজটি জলদস্যুরা সোমালিয়া উপকূলের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল।</p> <p style="text-align: justify;">সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে অতীতে বহু বাংলাদেশি নাবিক ক্রু জিম্মি হয়েছিলেন। এদের কেউ ২০ মাস পর, কেউ ১০ মাস পর জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পান। ২০১২ সালে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে ২০ মাসেরও বেশি সময় জিম্মি থাকার পর বাংলাদেশি সাতজন নাবিক মুক্তি পান। ২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর ভারত মহাসাগর থেকে মালয়েশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আলবেডোকে আটক করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এ সময় তারা জাহাজটিতে থাকা ২২ জন কর্মকর্তা ও ক্রুকে জিম্মি করে। ওই ২২ জনের মধ্যে ছিলেন ৭ জন বাংলাদেশি, ৭ জন পাকিস্তানি, ৬ জন শ্রীলঙ্কান এবং একজন করে ভারতীয় এবং ইরানি নাগরিক। এদের সবাই মুক্তিপণ দিয়ে দীর্ঘ সময় পর মুক্ত হয়েছিলেন। </p> <p style="text-align: justify;">কেএসআরএম গ্রুপের আরেকটি জাহাজ এমভি জাহান মনি সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পায় ১০০ দিন পর।</p>