<p>মা সাফিয়া বেগম সারা দিন ভিক্ষা করে সন্ধ্যার পরে ঘরে ফিরেন। ঘরে ফিরে দেখেন একমাত্র ছেলের লাশ গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় ঝুলছে। তা দেখে মা সেই যে মুর্ছা গেছেন আর জ্ঞান ফিরেনি পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত। কথাগুলো বলছিলেন সাফিয়া বেগমের পাশের ঘরের বাসিন্দা শরীফা বেগম।</p> <p>মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পরে চাঁদপুর লাকসাম রেলপথের হাজীগঞ্জ রেলস্টেশন সংলগ্ন বস্তির ঝুপড়ি ঘর থেকে মো. খলিল (১৭) নামের এক কিশোরের ঝুলন্ত লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। চাঁদপুর রেল পুলিশ ও হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ যৌথভাবে গলায় গামছা মোড়ানো ঝুলন্ত মরদেহটি উদ্ধার করে। মো. খলিল নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। সে তার মা সাফিয়া খাতুনের সঙ্গে হাজীগঞ্জের উক্ত বস্তিতে বসবাস করে আসছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সহিদুল হাসান।</p> <p>নিহত কিশোরের প্রতিবেশী নারী শরীফা বেগম জানান, খলিল তার মায়ের সঙ্গে পৌরসভাধীন মকিমাবাদ গ্রামের হাজীগঞ্জ মডেল সরকারি কলেজ সংলগ্ন পেছনে চাঁদপুর-কুমিল্লা রেলপথের পাশের বস্তির একটি ঝুপড়িতে বসবাস করে আসছে। তার মা সাফিয়া বেগম ভিক্ষাবৃত্তি করে ছেলেকে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত।</p> <p>মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনিসহ খলিলের মা ভিক্ষা করে নিজ নিজ ঘরে আসেন। এরপরেই তিনি সাফিয়া বেগমের চিৎকার শুনে ওই ঘরে ছুটে যান। এ সময় তিনি দেখেন ঝুপড়ি ঘরে গলায় গামছা প্যাঁচানো খলিলের ঝুলন্ত মরদেহ এবং তা দেখে তার মা অচেতন হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক তিনি ডাক-চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে।</p> <p>খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ চাঁদপুর রেলওয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সহিদুল হাসান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে খলিলের মরদেহ উদ্ধারপূর্বক সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন করেন এবং মরদেহ থানা হেফাজতে নিয়ে আসেন।</p> <p>এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, উদ্ধারকৃত কিশোরের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আজ বুধবার সকালে চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ এবং তদন্তপূর্ব পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p> <p>চাঁদপুর রেলওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. মাসুদ আলম কালের কণ্ঠকে জানান, আমি ঘটনাস্থলে আছি, হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল তৈরি করছে। </p>