<p>পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুর রহমান শরীফ ছিলেন টানা পাঁচবারের এমপি। একবার হয়েছিলেন ভূমিমন্ত্রী। ভূমিমন্ত্রীর মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে আসনটিতে এমপি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ নুরুজ্জামান বিশ্বাস। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে নৌকার মনোনয়ন পেয়ে প্রথমবারেই বাজিমাত করেছেন প্রয়াত ভূমিমন্ত্রীর ছেলে গালিবুর রহমান শরীফ। তিনি পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।</p> <p>সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে বিজয়ী করে পাঠিয়েছেন জাতীয় সংসদে। এখন আসনটির নেতাকর্মীদের দাবি একটাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈশ্বরদীর গুরুত্ব বিবেচনা করে গালিবুর রহমান শরীফকে মন্ত্রিপরিষদে ঠাঁই দেবেন। এই দাবি ঈশ্বরদী-আটঘরিয়াবাসীর। এই দাবিতে ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জোরালোভাবে তুলে ধরছেন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।</p> <p>দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এক লাখ ৫১ হাজার ৭৮১ ভোটের ব্যবধানে নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি পাঞ্জাব আলী বিশ্বাসকে পরাজিত করে এমপি নির্বাচিত হন। এই ভোটে গালিব নৌকা প্রতীকে পান এক লাখ ৬৭ হাজার ৪৪৩ ভোট। আর স্বতন্ত্র পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস ঈগল প্রতীকে পান ১৪ হাজার ৬৬২ ভোট। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ, ইনু) মশাল প্রতীক নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক পান এক হাজার ৬০ ভোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আতাউল হাসান গামছা প্রতীকে পান ৮২৬ ভোট, জাতীয় পার্টি রেজাউল করিম লাঙল প্রতীকে পান এক হাজার ৫৩৩ ভোট ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) থেকে মনছুর রহমান আম প্রতীকে পান ৭৮৭ ভোট। ভোটে নৌকা প্রার্থী গালিবুর রহমান শরীফের নিকট এই পাঁচ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।</p> <p>সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আওয়ামী লীগ নেতা কে এম আবুল বাশার, রাকিব বিশ্বাস, স্বজন সরদার নাইম সরদার, রায়হান হোসেন, তুহিন এইচ এম কে, লাভলু হোসেন, শফিকুল ইসলামসহ সহস্রাধিকজন লিখেছেন, ‘গালিব শরীফকে মন্ত্রিপরিষদে দেখতে চাই।’</p> <p>সাহাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকাল উদ্দিন সরদার বলেন, ‘শেখ হাসিনা উচ্চশিক্ষিত ও উদীয়মান তরুণ নেতা গালিবুর রহমান শরীফকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমরা তাকে বিজয়ী করে সংসদে পাঠিয়েছি। নেত্রী ঈশ্বরদীর গুরুত্ব বুঝে মন্ত্রিপরিষদে গালিবকে ঠাঁই দেবেন বলে আশা করছি।’</p> <p>পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক বিশ্বাস বলেন, ‘সাবেক ভূমিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুর রহমান শরীফ ডিলু পরপর পাঁচবারের এমপি ছিলেন। পূর্ণ মেয়াদে একবার ভূমিমন্ত্রী ছিলেন। স্থানীয়ভাবে দলীয় নেতাকর্মীদের এক ছাতার নিচে রেখেছিলেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর দলীয় নেতাকর্মীরা দল থেকে এমপি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বেশ কিছু ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু গালিব শরীফ মনোনয়ন পেয়ে সবাইকে নিজের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে একত্র করতে পেরেছেন। সবাইকে নিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নৌকাকে বিজয়ী করেছেন। আমাদের দাবি, শেখ হাসিনা মন্ত্রিপরিষদে গালিব শরীফকে ঠাঁই দেবেন।’</p> <p>সাঁড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, ‘পাবনা-৪ আসন থেকে আমরা বিপুল ভোটের ব্যবধানে গালিবুর রহমান শরীফকে বিজয়ী করে এমপি হিসেবে সংসদে পাঠিয়েছি। এখন আমরা গালিব শরীফকে মন্ত্রিসভায় দেখতে চাই।’</p> <p>ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান মিন্টু বলেন, ‘আমরা নেত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী গালিবুর রহমান শরীফকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে এমপি হিসেবে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠিয়েছি। শেখ হাসিনা গালিব শরীফকে মন্ত্রিপরিষদে ঠাঁই দিলে আমাদের আর কোনো চাওয়া থাকবে না।’</p> <p>ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র মো. ইছাহক আলী মালিথা বলেন, ‘শেখ হাসিনা উন্নয়নের প্রতীক নৌকা দিয়ে তরুণ, উচ্চশিক্ষিত গালিবুর রহমান শরীফকে বিশাল ব্যবধানে বিজয়ী করে শেখ হাসিনার নিকট পাঠিয়েছি। আশা করছি শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, ইপিজেড, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর গুরুত্ব বুঝে গালিব শরীফকে মন্ত্রিপরিষদে ঠাঁই দেবেন। এটাই আমাদের দাবি।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘ক্লিন ইমেজের গালিব শরীফকে মন্ত্রিসভায় স্থান দিলে যোগ্যতা ও দক্ষতা দেখানোর সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি এলাকারও উন্নয়ন ঘটবে।’</p>