<p>দুই মিনিট ২৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও। একাধিক সহকারি প্রিসাইডিং অফিসার (নারী) ব্যালট পেপারে স্বাক্ষর করে তুলে দিচ্ছেন তাদের সামনে জটলা বেধে রাখা যুবকদের হাতে। যুবকরাও ওই কর্মকর্তার সামনেই সিল মারছেন। হাসাহাসিতে মশগুল তারা সবাই। যুবকদের গলায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কার্ড ঝুলানো। তারা হাসতে হাসতে বলছিলেন, ‘নিজের ভোটই দিতে পারছি না। আপনি আমাদেরকে একসঙ্গে আট-দশটা দিয়ে দেন না। সিল মারো ভাই সিল মারো, নৌকা মার্কায় মারো।’ </p> <p>৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনের এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিও আশুগঞ্জের শরীফপুর কেন্দ্রের উল্লেখসহ বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোট ছাপানোর অভিযোগ দিয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য (এম.পি) জিয়াউল হক মৃধা। বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর দায়ের করা অভিযোগে তিনি ভোট নিয়ে চলা তদন্তের প্রতি অনাস্থা দিয়ে বিচার বিভাগীয় কিংবা নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের বাদ দিয়ে তদন্ত করার দাবি জানান। </p> <p>এদিকে কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম নিয়ে উঠা অভিযোগের তদন্ত দ্বিতীয় দিনের মতো বৃহস্পতিবারও অব্যাহত ছিলো। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। গত দুই দিনে তারা অন্তত সংশ্লিষ্ট দুইশ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন। জেলা প্রশাসনের তদন্তকারি কর্মকর্তা হলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রুহুল আমিন। জেলা পুলিশের কর্মকর্তা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. জয়নাল আবেদীন। বুধবার তারা উপজেলা পরিষদে সংশ্লিষ্টদেরকে ডেকে কথা বলেন। বৃহস্পতিবার তারা অভিযোগ উঠা কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা যাওয়ার আগেই ওইসব কেন্দ্রের সামনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা উপস্থিত হন। এ সময় কাউকেই অনিয়মের কথা বলতে শোনা যায়নি। </p> <p><img alt="1" height="312" src="https://attachments.office.net/owa/latestnews%40kalerkantho.com/service.svc/s/GetAttachmentThumbnail?id=AAMkADU0YzBhZDQ2LWU3OTYtNDA0Ny05YTAyLWYzOTI4MDlhMjQzMwBGAAAAAACH7OTe%2BDtQS5cg2I2nO2r3BwC6%2BW5bVOPwRqtI%2FfWFFohJAAAAAAEMAAC6%2BW5bVOPwRqtI%2FfWFFohJAAMPAsadAAABEgAQACrK7MweNE1OkkUVmmVOWGg%3D&thumbnailType=2&token=eyJhbGciOiJSUzI1NiIsImtpZCI6IjczRkI5QkJFRjYzNjc4RDRGN0U4NEI0NDBCQUJCMTJBMzM5RDlGOTgiLCJ0eXAiOiJKV1QiLCJ4NXQiOiJjX3VidnZZMmVOVDM2RXRFQzZ1eEtqT2RuNWcifQ.eyJvcmlnaW4iOiJodHRwczovL291dGxvb2sub2ZmaWNlMzY1LmNvbSIsInVjIjoiNjVlZTQwNTAxZmM5NDc1MzgwMDE0MzY2NDE2NjhhZTUiLCJzaWduaW5fc3RhdGUiOiJbXCJrbXNpXCJdIiwidmVyIjoiRXhjaGFuZ2UuQ2FsbGJhY2suVjEiLCJhcHBjdHhzZW5kZXIiOiJPd2FEb3dubG9hZEAzYjc1NjcxNS03N2ZhLTRjZDAtOTU0Yy1jNjQ4NjY5NDhiODMiLCJpc3NyaW5nIjoiV1ciLCJhcHBjdHgiOiJ7XCJtc2V4Y2hwcm90XCI6XCJvd2FcIixcInB1aWRcIjpcIjExNTM4MDExMTc0MzU4MTY0MzVcIixcInNjb3BlXCI6XCJPd2FEb3dubG9hZFwiLFwib2lkXCI6XCI0MTM3ZjkwZS1lZDU1LTRiMDAtYjI1Zi0xYTcwYzJmOTI3MThcIixcInByaW1hcnlzaWRcIjpcIlMtMS01LTIxLTMxNzEyODE5NjUtOTc4OTM2MTQxLTIwMDAyNTAxNzQtMTM3NTEyODVcIn0iLCJuYmYiOjE2OTk1NTIyODcsImV4cCI6MTY5OTU1Mjg4NywiaXNzIjoiMDAwMDAwMDItMDAwMC0wZmYxLWNlMDAtMDAwMDAwMDAwMDAwQDNiNzU2NzE1LTc3ZmEtNGNkMC05NTRjLWM2NDg2Njk0OGI4MyIsImF1ZCI6IjAwMDAwMDAyLTAwMDAtMGZmMS1jZTAwLTAwMDAwMDAwMDAwMC9hdHRhY2htZW50cy5vZmZpY2UubmV0QDNiNzU2NzE1LTc3ZmEtNGNkMC05NTRjLWM2NDg2Njk0OGI4MyIsImhhcHAiOiJvd2EifQ.To53yzUahAV9IUFe9DpKZIET-YmQcnXaZBpU-049qjyLxEOHVy14vEZBYaMpLF_TTDExTP1QEhVswOeGgTga45P2s4irJs-0I9GFtk54aqALBwrnMnvhGRLMurpPS-m81pwVfii-jtGcnmTWtr7l4bOsIESJZmOWvoB_93tOTK2pJO-KElYZBa_iHUe5g2PMA_ZlS0aZKjomnWjWrplStHYbt1apzh48BLv3jb0PDSBAkTkUk8FSGTDrP7jQOKCuYK7PpZADe6ORV7_o5s30wkrn_E4hb4ePd9wc9VWYZ4H9mCkTcKMH0gTeDxaa385PP1yv2EedRVOBPNxB_7HSdQ&X-OWA-CANARY=atYWwbmhC0eOd49uovj5-TB_q4dM4dsYXSvCayoe11kbht6wqPvAULRW1vSIdCKuQ-BZ6s9guxE.&owa=outlook.office365.com&scriptVer=20231013005.12&animation=true" width="600" /></p> <p>এদিকে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন তদন্ত কার্যক্রম বিষয়ে একটি গণমাধ্যমের নিজস্ব প্রতিবেদকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, পত্রিকায় প্রকাশিত ভেতরের ক্লোজ ছবিতে কারা রয়েছেন তা স্পষ্ট না হওয়ায় এবং অন্য তিনটি কেন্দ্রের অনিয়মের কোনো ছবি না থাকায় পত্রিকার বক্তব্য পড়ে নির্বাচনের অনিয়মের পূর্ণাঙ্গ চিত্র সম্পর্কে ধারণা করা যাচ্ছে না। চিঠিতে তিনি আশুগঞ্জের যাত্রাপুর হাফেজিয়া নূরানীয়া মাদরাসা ভোটকেন্দ্রের সম্পূর্ণ চিত্র ও অন্য তিনটি কেন্দ্রের কোনো ডকুমেন্টরি ভিডিও চিত্র অথবা স্থিরচিত্র থাকলে তা সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানান। চিঠির প্রেক্ষিতে ওই গণমাধ্যম কর্মী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একাধিক ভিডিও ও স্থিরচিত্র সরবরাহ করেন। </p> <p>৫ নভেম্বর উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহজাহান আলম ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতীয় পার্টির সাবেক এম.পি জিয়াউল হক মৃধা কলার ছড়ি প্রতীকে পান ৩৭ হাজার ৫৫৭ ভোট। তবে আশুগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। এরই প্রেক্ষিতে নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট স্থগিত করে অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। </p> <p>তবে কমিশনের তদন্তে নিজের আস্থা নেই বলে জানিয়েছেন জিয়াউল হক মৃধা। প্রধান নির্বাচন বরাবর দেওয়া অভিযোগ ও সাংবাদিকদের কাছে তিনি উল্লেখ করেন, বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোট ছাপা হয়েছে। শরীফপুর কেন্দ্রের ভোট ছাপার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে নানা অনিয়ম বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। তাই যারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছে তাদেরকে দিয়ে তদন্ত করলে কোনো লাভ হবে না। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করা হলে প্রয়োজনে তিনি উচ্চ আদালতের শরনাপন্ন হবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।</p> <p>এ বিষয়ে তদন্তকারি কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রুহুল আমিন মুখ খুলতে রাজি নন। তবে তিনি জানান, তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই রিপোর্ট জমা দিবেন।</p>