<article> <p>কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত খন্দকার রশিদুজ্জামান দুদুর বেদখল হয়ে যাওয়া সম্পত্তিতে উচ্চ আদালত থেকে নিষেধাজ্ঞা (ইনজাংশন) জারি করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জালিয়াতির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে এই সম্পত্তি বেদখল করে রেখেছিলেন।</p> <p>আদালতের নির্দেশের পর রশিদুজ্জামান দুদুর ওয়ারিশ আফরোজা জামান ও সাবরিনা খন্দকারের পক্ষে তাঁদের আইনজীবীরা গত মঙ্গলবার কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কের লাহিনীপাড়া মৌজার ওই সম্পত্তিতে নিষেধাজ্ঞার নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছেন।</p> <p>রশিদুজ্জামান দুদু ১৯৮৮ সালের ৩০ জানুয়ারি বায়তুল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ১৯৯২ সালের ২ জুন আলহাজ্ব ডাল মিলস লিমিটেড এবং ১৯৯৪ সালের ২৮ জুলাই বায়তুল ফুড প্রডাক্ট লিমিটেড নামের মোট তিনটি কম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।</p> </article> <article>সে সময় রশিদুজ্জামান, তাঁর স্ত্রী আফরোজা জামান, রশিদুজ্জামানের বন্ধু রবিউল ইসলাম, রবিউলের স্ত্রী বানু ইসলাম ও বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, বিজয়ের স্ত্রী লতা কেজরিওয়াল কম্পানি তিনটির শেয়ারহোল্ডার ও পরিচালক হন। ২০০০ সালের ১৫ নভেম্বর কম্পানির বিধি অনুযায়ী রবিউল ইসলাম, বানু ইসলাম, বিজয় কেজরিওয়াল ও লতা কেজরিওয়াল তাঁদের সব শেয়ার রশিদুজ্জামান দুদু, আফরোজা জামান ও খন্দকার সাবরিনার কাছে হস্তান্তর করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শেয়ার হস্তান্তরকারী পরিচালকদের পদ শূন্য হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সব স্বত্ব বিলুপ্ত হয়ে যায়। <p>কিন্তু পরবর্তী সময়ে শেয়ার হস্তান্তর করা ওই চারজন কম্পানির স্থাবর-স্থাবর সম্পত্তি কুক্ষিগত করার জন্য নীলনকশা করেন। তাঁরা হস্তান্তর করা শেয়ারের দলিল-দস্তাবেজ গোপন করে শেয়ার হস্তান্তর না দেখিয়ে আগের পরিচালক পর্ষদ বহাল দেখান। পরে আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল ইসলাম ২০১১ সালের ১৫ ও ১৭ নভেম্বর সব তথ্য গোপন করে হস্তান্তর করা শেয়ার আবারও তাঁর দুই ছেলে রাশেদুল ইসলাম ও রাকিবুল ইসলামের নামে হস্তান্তর করেন। একই সঙ্গে বিজয় কেজরিওয়াল ও লতা কেজরিওয়ালের শেয়ারও নিজেদের নামে নিয়ে নেন রবিউল।</p> </article> <article> <p>কম্পানিগুলোর স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কুষ্টিয়া পৌরসভার কালিশংকরপুর মৌজার হরিশংকরপুরের ১৮০/২ নুরউদ্দিন আহমেদ রোডে ফ্যাক্টরি বিল্ডিংসহ মোট ৬৩ শতাংশ সম্পত্তি এবং কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের রাহিনীপাড়া মৌজার ছয় একর সম্পত্তিসহ সব সম্পত্তি রবিউল ইসলাম বিভিন্নজনের কাছে বিক্রি করেন।</p> </article> <article>এর মধ্যে ২০১৫-১৬ সালে রবিউল নিজের ও তাঁর স্ত্রী বানু ইসলামের নামে ফ্যাক্টরিসহ কম্পানির ৬৩ শতাংশ জমি এবং ২০২১ সালে ৩৫০৮ এবং ৩৫০৭ নম্বর দলিলের মাধ্যমে মেয়ে জাকিয়া মাসুদ ও জামাতা চৌধুরী খালেদ মাসুদের নামে ৩.২১ একর জমি বিক্রি করেন। <p>প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে এসব সম্পত্তি ও শেয়ার হস্তান্তরের বিরুদ্ধে খন্দকার রশিদুজ্জামান দুদুর ওয়রিশ ও কম্পানির অন্য পরিচালকরা ২০২১ সালে হাইকোর্টে কম্পানি আইন অনুযায়ী মামলা করেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগ জাল-জালিয়াতির ঘটনা বিশ্লেষণ করে ওই সম্পত্তির ওপর চলতি বছরের গত ২৮ আগস্ট নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।</p> <p>এ বিষয়ে জানতে চাইলে রবিউল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি মামলার বিষয়ে কিছু জানি না। এ ছাড়া এসব বিষয়ে মোবাইল ফোনে কিছু বলতে পারব না।’</p> </article> <article> <p>রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়ায় এনআইডি জালিয়াতি করে অন্যের সম্পত্তি দখলের অভিযোগে মামলাও রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৭ সালে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার পর তিন বছরে শতকোটি টাকা অর্জনের অভিযোগে দুদক তাঁকে তলব করেছিল।</p> </article>