<p>রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের দক্ষিণ গাবুড়া গ্রামটি বিলীনের পর পাশের হাগুরিয়া হাশিম ভাঙনের কবলে পড়েছে। তিস্তার ভাঙনে গত চার দিনে প্রায় অর্ধশত বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে আরো শতাধিক বাড়ি।</p> <p>গত ২৪ জুন দক্ষিণ গাবুড়া গ্রামের শেষ বাড়িটিও নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তখনই নদী ভাঙন পাশের হাগুরিয়া হাশিম গ্রামের উপর নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করে। কিন্তু মাঝে তিস্তা নদীতে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করলে ভাঙন থেমে যায়। বন্যার পানি কমতে শুরু করায় চার দিন থেকে আবারো ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে নদী তীরবর্তী হাগুড়ি হাশিম গ্রামের প্রায় ৫০টি বাড়ি নদী গর্ভে চলে যায়। এছাড়া পাশের নাউয়া পাড়া এলাকায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে যেকোন মুহূর্তে প্রায় শতাধিক বাড়ি নদী গর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।</p> <p>সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গত কয়েক দিন থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও শনিবার থেকে নতুন করে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদীতে রয়েছে তীব্র স্রোত। স্রোতে ভাঙছে পাড়, জমি ও বসতবাড়ি। অনেকে শেষ সম্বলটুকু বাঁচানোর চেষ্টা করছে। বন্যা ও ভাঙনের কবলে পড়ে নিঃস্ব পরিবারগুলোর অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে। তবে কোথাও ভাঙনরোধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।</p> <p>স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ গাবুড়া (মাঠের হাট) গ্রামটি ভাঙনের কবলে পরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ওই গ্রামে পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসতি ছিল। গত তিন বছরে দক্ষিণ গাবুড়াসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের পাকা মসজিদ, হাটবাজার ও প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অসংখ্য স্থাপনাও নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। শতশত একর আবাদি জমি চলে গেছে নদী গর্ভে।</p> <p>স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, বারবার আবেদন নিবেদন করা হলেও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতিবছর তারা তিস্তার ভাঙনের শিকার হচ্ছেন। হাগুরিয়া হাশিম গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, দক্ষিণ গাবুড়া গ্রামের শেষ বাড়িটি বিলীন হয়ে যাওয়ার পর হাগুরিয়া হাশিম গ্রামে ভাঙন দেখা দেয়। বন্যার কারণে মাঝে ভাঙন বন্ধ ছিল কিন্তু বন্যার পানি কমতে শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ফের তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে।</p> <p>এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর তালিকা তৈরির কাজ চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সহযোগিতা করা হবে।</p> <p>রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি হাসান বলেন, দক্ষিণ গাবুড়া গ্রামটি বিলীনের পর হাগুরিয়া হাশিম গ্রামটি ভাঙনের কবলে পড়েছে। ওই এলাকার ভাঙনরোধে বরাদ্দের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।</p>