<p>নতুন শিক্ষাক্রমের পাঠদান পদ্ধতি ও পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন খান। তিনি বলেন, ‘নতুন শিক্ষা পদ্ধতিতে এমসিকিউর মাধ্যমে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তোতা পাখি হিসেবে তৈরির চেষ্টা করছি।’</p> <p>আজ শনিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘শিশির’ ও ‘গন্তব্য’র আয়োজনে ‘পরিকল্পিত শিক্ষা ধ্বংসের সংক্ষিপ্ত কালপঞ্জি (১৯৭২-২০২২)’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।</p> <p>ড. তানজিম বলেন, ‘পঞ্চম শিল্পবিপ্লবের নামে শিক্ষার্থীদের রোবটিক মানুষ তৈরির পরিকল্পনা চলছে। যেখানে পাশের মানুষের প্রতি কোনো অনুভূতি থাকবে না। ১৯৭২ সাল থেকে এ পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থায় সবার অংশীদারত্ব নিশ্চিত করা যায়নি। এই দীর্ঘ সময়ে যেসব শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায় রয়েছে, তাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্যই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষাক্রম এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যেন আমরা কোনো প্রশ্ন করতে না শিখি। শুধু মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে শ্রম দিয়ে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারি। এমন একটা শিক্ষাব্যবস্থার সংক্রমণ চলছে, যার শেষ পর্যায়ে আমরা চলে এসেছি। সামগ্রিকভাবে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা ছাড়া আর কিছুই দেখছি না।’</p> <p>শিক্ষকদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষায় যত পরিবর্তনই আনা হোক, শিক্ষকদের মান নির্ধারণ করা না গেলে কোনো শিক্ষাব্যবস্থা কার্যকর করা যাবে না। এখন পর্যন্ত কোনো সরকার তাদের মানোন্নয়নে একটি নীতিমালা তৈরি করেনি। একজন গাড়িচালকের বেতন দিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেবেন। এ ধরনের শিক্ষক দিয়ে শিক্ষার মান উন্নয়ন করা সম্ভব নয়।’</p> <p>ঢাবি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন বলেন, ‘কোনো মানুষের নাম শুনলে মনের ভেতর যেমন তার চেহারার একটি প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে, তেমনটি প্রতিটি শব্দের একটা চেহারা আছে। প্রতিটি দেশের শিক্ষার্থীরা তাদের নিজের মাতৃভাষায় পড়ালেখা করে। বর্তমানে আমাদের যে শিক্ষাক্রম চালু হয়েছে, এতে শিক্ষায় বরাদ্দ কমার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থার দিকে ধাবিত হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইংরেজি শিক্ষার ব্যবসার প্রসারের লক্ষ্যেই এই শিক্ষাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’</p> <p>সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন শিক্ষা ও শিশু রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক রাখাল রাহা। সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সাত্তার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আর রাজি ও ঢাবি বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আজম প্রমুখ।</p>