<p>ভয়াবহ দরপতনের মধ্যে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। গতকাল মঙ্গলবারও শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সব কয়টি মূল্যসূচক। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪২ মাস বা সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে।</p> <p>আগে থেকেই পতনের মধ্যে থাকা শেয়ারবাজারে পতনের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেটে শেয়ারবাজারে ক্যাপিটাল গেইনের ওপর ট্যাক্স আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবের পর এখনো পর্যন্ত লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স প্রত্যারের দাবি জানিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)।</p> <p>সংগঠনটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেছেন, চার বছর ধরে শেয়ারবাজারের অবস্থা খারাপ। আমরা চার বছর ধরে এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় পাচ্ছি না। এ পরিস্থিতিতে বাজারে সাপোর্ট দেওয়ার কথা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের। এই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা রুগণ হয়ে পড়েছে। </p> <p>দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখিয়েছে মাত্র ৫১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০৮টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩৫ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৭০ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বরের পর সূচকটি এখন সর্বনিম্ন অবস্থা বিরাজ করছে। ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর ডিএসইর প্রধান সূচক পাঁচ হাজার ৬৯ পয়েন্ট ছিল।</p> <p>অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়া সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৯৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় আট পয়েন্ট কমে এক হাজার ৮০৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।</p> <p>সূচক ৪২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে গেলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৩১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩১৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১১২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।</p> <p>টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বিকন ফার্মার শেয়ার। কম্পানিটির ৭২ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের ১৮ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।</p> <p>এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ওরিয়ন ফার্মা।</p> <p>অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১০৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৩টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১০৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।</p>