<p>একসময় বাংলাদেশে এসির ব্যবহার ছিল অনেকটা বিলাসিতা। শহর ও নগর এলাকায় উচ্চবিত্ত শ্রেণি এসি ব্যবহার করত। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে মধ্যবিত্ত শ্রেণিরও জীবনযাত্রার প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে এসি। বর্তমানে রাজধানী ঢাকার বাইরে জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও ব্যাপক হারে এসি ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে এসি বাজারজাতকারী দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের কম্পানিগুলো গ্রাহকদের জন্য বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এয়ারকন্ডিশনার (এসি) নিয়ে এসেছে। নতুন ইনভার্টার প্রযুক্তির এয়ারকন্ডিশনার সাধারণ এসির চেয়ে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎসাশ্রয়ী। কম বিদ্যুৎ খরচের কারণে দেশের বাজারে এখন বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ইনভার্টার এসির চাহিদা তুঙ্গে।</p> <p>বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদু্যত্ ব্যয় কম হওয়ার কারণে মানুষ এখন ইনভার্টার এসি বেশি কিনছে। যার কারণে কম্পানিগুলোও নন-ইনভার্টার এসির উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে দেশের বাজারে বিক্রি হওয়া এসির ৯০ শতাংশই ইনভার্টার এসি। </p> <p>রাজধানীর বাড্ডায় বাটারফ্লাই মার্কেটিং লিমিটেডের শোরুমের বিক্রয়কর্মী মো. শামীম মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা এলজি, ইকো প্লাস ও হায়ার- এই তিন ব্র্যান্ডের এসি বিক্রি করছি। ১০০টি এসি বিক্রি করলে তার ৯০টি ইনভার্টার এসি। বিদ্যুৎ ব্যয় কম হওয়ার কারণে ইনভার্টার এসিতে ঝুঁকছে মানুষ।'</p> <p>ইনভার্টার এসির বিষয়ে স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের কনজিউমার ইলেকট্রনিকস ডিভিশনের হেড অব বিজনেস (ডিরেক্টর) শাহরিয়ার বিন লুৎফর কালের কণ্ঠকে বলেন, 'স্যামসাংয়ের সব এসিই ডিজিটাল ইনভার্টার সমৃদ্ধ এসি, যা নিশ্চিত করে এসির দীর্ঘায়ু ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়। বর্তমানে স্যামসাং এসি সর্বোচ্চ ৭৩ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে। যা নন-ইনভার্টার এসির ক্ষেত্রে কল্পনাতীত। রয়েছে ১০ বছরের কম্প্রেসার ওয়ারেন্টি।'</p> <p>ইনভার্টার প্রযুক্তির নতুন নতুন এসি বাজারে সরবরাহের বিষয়টি জানিয়ে ওয়ালটন এসির ডেপুটি চিফ বিজনেস অফিসার সন্দ্বীপ বিশ্বাস কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ওয়ালটনের ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি প্রায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে। ওয়ালটনের ইনভার্না সিরিজের সিক্স স্টার এনাজিং রেটিং সনদপ্রাপ্ত ব্যাপক বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির এক্সিট্রিম সেভার মডেলের এক টন এসির দাম পড়ছে ৬৫ হাজার টাকা, দেড় টন এসির দাম ৭৪ হাজার ৯৯০ টাকা এবং দুই টন এসির দাম ৯৩ হাজার ৯৯০ টাকা।'</p> <p>এ বিষয়ে জানতে চাইলে বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক জিয়াউর রহমান খান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'নন-ইনভার্টার এসির তুলনায় ইনভার্টার এসি বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হয়। কারণ ইনভার্টার এসি একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় চলে গেলে নিজ থেকেই কম্প্রেসারের গতি কমিয়ে দেয়। যারা দীর্ঘসময় এসি ব্যবহার করেন তাদের জন্য এটি অনেক বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হয়। তবে খোলামেলা রুমের ক্ষেত্রে ইনভার্টার এসি বিদ্যুৎসাশ্রয়ী হবে না।'</p> <p>বিদ্যুৎ খরচ কমানোর উপায় জানিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, 'এসির টেম্পারেচার বাড়িয়ে রুমে ফ্যান চালালে অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব। রুমও খুবই কম সময়ে ঠাণ্ডা হয়। টেম্পারেচার কমিয়ে এসি চালালে বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়।'<br />  </p>