<p>অভিন্ন নদীর পানি প্রবাহে প্রতিবেশী দেশ ভারত নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী পানি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশের স্বার্থকে বিপন্ন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের বাঁচা-মরাকে তারা কখনোই আমলে নেয় না।</p> <p>আজ বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। </p> <p>রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘ভারতের ত্রিপুরা ধলাই জেলার গোমতী নদীর ওপর থাকা ডুম্বুর বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে বলে মানুষের মনে ব্যাপক উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহে প্রতিবেশী দেশ নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী পানি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের স্বার্থকে বিপন্ন করছে। কেন জানি ভারত বাংলাদেশের মানুষ, তাদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য জীবন—যাপনের প্রতি উদাসীন। বাংলাদেশের মানুষের বাঁচা-মরাকে তারা কখনোই আমলে নেয় না। উদ্দেশ্য সচেতনভাবেই ডুম্বুর বাঁধের গেট খুলে দেওয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশের মানুষ মনে করে। বাংলাদেশ প্রশ্নে ভারত কখনোই ন্যায়নীতির নির্দেশ গ্রাহ্য করেনি।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোর বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক বন্যার প্রকোপে বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ সমর্থকবৃন্দের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দেশের সামর্থ্যবান ও ধনী ব্যক্তিদেরও বন্যার্তদের সাহায্য-সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। সামগ্রিক প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই বন্যাদুর্গত মানুষ নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠে আবারও নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এই কঠিন সময়ে আমাদের সবাইকে ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে।’</p> <p>উজানের পানিতে দেশের পূর্বাঞ্চলের প্রায় ৯ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার জায়গা-জমি, শত শত গ্রাম ও সড়ক তলিয়ে গেছে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘জনজীবন বিপর্যস্ত, লক্ষ লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গবাদি পশু, ফসল ইত্যাদি পানিতে ভেসে গেছে। ফেনী, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, লক্ষ্মপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম মূলত পানির নিচে। শুকনা খাবার, খাবার পানি ও প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাব এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে মানুষের জীবনকে ভয়াবহ বিপন্ন করে তুলছে। জেলা শহরের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে বন্যায় দুজনের মৃত্যুসহ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩০ লাখের কাছাকাছি মানুষ। প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে।’</p> <p>বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘পাহাড়ি ঢলের পানিতে অধিকাংশ শহরের নিম্নাঞ্চল সম্পূর্ণরূপে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। এই মুহূর্তে বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতে ত্রাণ বিতরণ আরো বেশি জোরদার করতে হবে। বন্যাদুর্গত মানুষকে দ্রুত নিরাপদ স্থলে পৌঁছাতে সরকারসহ সব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে উদ্ধারকাজের জন্য নেমে পড়তে হবে। এবারের বন্যা আড়াই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ।’</p>