<p>ফিতনা অর্থ বিপর্যয়, নৈরাজ্য, অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা, অন্তর্ঘাত, চক্রান্ত, পরীক্ষা প্রভৃতি। কিয়ামতের আগে সমাজ, রাষ্ট্র ও জনজীবনের সর্বত্র ফিতনা ও বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ার কথা হাদিসে এসেছে। ফিতনা-ফ্যাসাদ সমাজে এমনভাবে ছড়িয়ে পড়বে যে লোকেরা ফিতনার ভয়ে মৃত্যু কামনা করবে। রাসুল (সা.) বলেন, কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না (বিপদাপদের কারণে) এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির কবরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মৃত ব্যক্তির স্থানে হওয়া কামনা করবে। (বুখারি, হাদিস : ৭১১৫)</p> <p>তবে সাধারণভাবে বিপদ-আপদের কারণে মৃত্যু কামনা করা যাবে না। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৭১)</p> <p>দুনিয়ায় মুমিনের জীবনে নানা প্রতিকূলতা তৈরি হবে। আবু মুসা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার এই উম্মত দয়াপ্রাপ্ত, পরকালে এদের কোনো শাস্তি হবে না, আর ইহকালে তাদের শাস্তি হলো ফিতনা, ভূমিকম্প ও যুদ্ধবিগ্রহ। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪২৭৮)</p> <p>মুমিনের জন্য ফিতনা থেকে মৃত্যু উত্তম। মাহমুদ বিন লাবিদ (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, দুটি জিনিসকে আদম সন্তান অপছন্দ করে; এর মধ্যে প্রথম হলো মৃত্যু, অথচ মুমিনের জন্য ফিতনা থেকে মৃত্যুই উত্তম। আর দ্বিতীয় হলো ধনস্বল্পতা, অথচ ধনস্বল্পতায় হিসাব কম হবে। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ২৩৬৭৩)</p> <p>তবে এই ফিতনার সময় যারা ধৈর্য ধারণ করবে তাদের জন্য মহাপুরস্কার রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, এর পরেই সবরের সময়। আর সে সময় সবর করা এরূপ, যেন জ্বলন্ত আগুন হাতে রাখা। সে সময় যে ব্যক্তি নেক আমল করবে, সে ৫০ জনের সমান সওয়াব পাবে। তখন জনৈক সাহাবি জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসুল! তাদের ৫০ জনের নেকির অনুরূপ নেকি সে পাবে? তিনি বলেন, তোমাদের মতো ৫০ জনের সওয়াবের অনুরূপ সওয়াব সে পাবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৩৪১)</p>