<p>বরইগাছ আল্লাহর এক সৃষ্টি। বরই যেমন সুস্বাদু, তেমন পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। এই গাছের বর্ণনা পবিত্র কোরআন ও হাদিসে অনেক স্থানে এসেছে। এখানে বরইপাতা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :</p> <p><strong>কোরআনে বরইগাছ প্রসঙ্গ</strong></p> <p>পবিত্র কোরআনের সুরা আন নাজমের ১৪ নম্বর আয়াতে (সিদরাতুল মুনতাহা) বরইগাছের কথা বলা হয়েছে, যা সপ্তম আকাশে অবস্থিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, কুল বা বরইগাছটি ছিল বিশাল আকারের। পাতা ছিল হাতির কানের সমান এবং ফল ছিল বৃহৎ মাটির পাত্রের মতো। ওটাকে আল্লাহ তাআলার আদেশ দেখে রাখা হয়েছিল। ওর সৌন্দর্যের বর্ণনা কেউ দিতে পারে না। ওটিই সব সৃষ্টির জ্ঞানের সীমার শেষ প্রান্ত। তাকে অতিক্রম করে যাওয়ার ক্ষমতা কারো নেই। ওখানে আল্লাহর রাসুল (সা.) দ্বিতীয়বারের মতো ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-কে আসল আকৃতিতে দেখেছিলেন। (বুখারি, হাদিস : ৩২৩৪, মুসনাদে আহমদ : ৩/১৪৮)</p> <p><strong>মৃত ব্যক্তির গোসলে বরইপাতা</strong></p> <p>বরইপাতার উপকারিতা ও গুণাগুণ বিজ্ঞানের গবেষণায় প্রমাণিত। গরম পানিতে সিদ্ধ বরইপাতার অ্যান্টিসেপটিক উপাদান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় বেশ কার্যকর। পোকামাকড়ের আক্রমণ ও‌ পচন রোধ করতে সক্ষম। এ জন্যই রাসুলুল্লাহ (সা.) মাইয়্যেতের গোসলে বরইপাতা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। উম্মে আতিয়া আনসারী (রা.) থেকে বর্ণিত, ‌রাসুল (সা.)-এর কন্যা (জয়নাব রা.)-এর ইন্তেকাল হলে তিনি আমাদের কাছে এসে বলেন, তোমরা তাকে তিন, পাঁচ এবং প্রয়োজন মনে করলে তার চেয়ে বেশিবার বরইপাতাসহ পানি দিয়ে গোসল দাও। শেষবার কিছু কর্পূর ব্যবহার করবে। তোমরা শেষ করে আমাকে জানাও। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা শেষ করার পর তাঁকে জানালাম। তখন তিনি তাঁর চাদরখানি আমাদের দিয়ে বলেন, এটি তার গায়ের সঙ্গে জড়িয়ে দাও। (বুখারি, হাদিস : ১১৮০)</p> <p><strong>নারীদের গোসলে বরইপাতা</strong></p> <p>আল্লাহ প্রদত্ত নিয়মে নারীদের মাসিক হয়। মাসিক থেকে গোসলকারী নারীর জন্য পানিতে বরইপাতা মিশিয়ে গোসল করা এবং বিশেষ স্থানে সুগন্ধযুক্ত কাপড় বা তুলা ব্যবহার করা মুস্তাহাব। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার আসমা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে হায়েজের গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বলেন, তোমাদের কেউ পানি ও বরইপাতা নিয়ে সুন্দরভাবে পবিত্র হবে। তারপর মাথায় পানি ঢেলে দিয়ে ভালোভাবে রগড়ে ফেলবে, যাতে সমস্ত চুলের গোড়া পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তারপর তার ওপর দিয়ে পানি ঢেলে দেবে। তারপর সুগন্ধযুক্ত কাপড় নিয়ে তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবে।</p> <p>আসমা (রা.) বললেন, তা দিয়ে কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করবে? তিনি বলেন, সুবহানাল্লাহ। তা দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করবে। অতঃপর আয়েশা (রা.) তাঁকে যেন চুপি চুপি বলে দিলেন রক্ত বের হওয়ার জায়গায় তা ঝুলিয়ে দেবে। অতঃপর তিনি নাপাক থেকে পবিত্র হওয়ার গোসল সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বলেন, পানি দ্বারা সুন্দরভাবে পবিত্র হবে। তারপর মাথায় পানি ঢেলে দিয়ে ভালো করে রগড়ে ফেলবে, যাতে চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছে যায়। তারপর সর্বাঙ্গে পানি বইয়ে দেবে। আয়েশা (রা.) বলেন, আনসারদের নারীরা কত ভালো! লজ্জা তাদের দ্বিনের জ্ঞান থেকে ফিরিয়ে রাখে না। (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৩)<br />  </p>