<article> <p style="text-align: justify;">সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষাসহ নিয়োগ কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে গত ২৯ মার্চ তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে অনুষ্ঠিত লিখিত (এমসিকিউ) পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ অনুসন্ধান করে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।</p> <p style="text-align: justify;">এসংক্রান্ত এক রিটে প্রাথমিক শুনানির পর গতকাল বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং নতুন করে পরীক্ষা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, অধিদপ্তরের পলিসি ও অপারেশন বিভাগের পরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার্থী ছিল তিন লাখ ৪৯ হাজার ২৯৩ জন।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এ পরীক্ষার ফলাফল গত ২১ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। কিন্তু প্রকাশিত ফলাফলে মেঘনা ও যমুনা সেটের উত্তরপত্র মূল্যায়নে কারিগরি ত্রুটি দেখা যায়। এ নিয়ে প্রার্থীরা অভিযোগও করেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে উত্তরপত্র পুনরায় মূল্যায়নের কাজ শুরু করা হয়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এরপর ২২ এপ্রিল রাতে মেঘনা ও যমুনা সেটের পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়ন করে সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে ৪৬ হাজার ১৯৯ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়।</p> <p style="text-align: justify;">ফলাফল প্রকাশের তিন দিনের মাথায় গত ২৫ এপ্রিল এ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ। পরের দিন রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।</p> <p style="text-align: justify;">তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষায় ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২১ জেলার সাড়ে তিন লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নের উত্তরপত্র ও ডিভাইসসহ মাদারীপুরে সাতজন ও রাজবাড়ীতে একজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় দুই জেলায় মামলা করা হয়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">হারুন অর রশীদ বলেছিলেন, আমরা এই মামলার তদন্তে নেমে যা যা পেয়েছি সব কিছুই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। তারা তাদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।</p> <p style="text-align: justify;">পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের প্রেস ব্রিফিংয়ের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসব প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করেন জুয়েল রতন দাসহ ১৬ জন। তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন আবেদনকারীরা। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষার জন্য তাঁরা উত্তীর্ণ হতে পারেননি। রিটে পরীক্ষা বাতিল, নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি দাস।</p> <p style="text-align: justify;">আইনজীবী সায়েদুল হক সুমন বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে কয়েকজন গ্রেপ্তার এবং মামলা হয়েছে। তার পরও কর্তৃপক্ষ পরীক্ষাটি বাতিল না করে নিয়োগের পরবর্তী প্রক্রিয়া মৌখিক পরীক্ষা শুরু করে দিয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত না হওয়া এবং পরীক্ষা বাতিল না করে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ সুমনের।</p> </article>