<p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুই বাংলার জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের নতুন গল্পগ্রন্থ </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্ধকার নামতে পারেনি</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi"> প্রকাশিত হয়েছে চলতি বইমেলায়। সাতটি গল্পের সমাহারে গড়ে উঠেছে এই গ্রন্থসৌধ।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেকোনো শিল্পের বহুমুখী প্রভাব থাকে। সব প্রভাব সমকালে ধরা যায় না। আবার শিল্পীর কিছু আপাত ইচ্ছে থাকে। সে ইচ্ছে তিনি তাঁর শিল্পকর্মের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেন। কিন্তু অবচেতনে তিনি আরো অন্যতর বিবিধ শৈল্পিক উপাদান প্রথিত করে দেন। মোটাদাগে বা প্রাথমিক চিন্তায় আমরা যারা সাধারণ পাঠক তারা শিল্পকর্মের আপাত চিত্র নিয়ে কথা বলে থাকি। শিল্পীর প্রাথমিক উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলি। বলি যে এটা ওই সময়ের একটি চিত্র। কিংবা এটি ওই সম্প্রদায়ের এই সংকটের চিত্র। কিংবা এটি ভবিষ্যতের গল্প। কিংবা এটি এই সময়ের নিরেট বাস্তবতা।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইমদাদুল হক মিলনের আলোচ্য গল্পগ্রন্থটির গল্পগুলো পাঠের প্রাক্কালে উপর্যুক্ত কথাগুলো মনের ভেতরে ঘুরপাক খাচ্ছিল। এবং স্বভাবতই গল্পগুলোকে প্রাথমিক বিবেচনায় ফেলতে হচ্ছিল কোনো না কোনো অংশে। এবং দেখা যাচ্ছিল যেকোনো বাস্তবতার নিরিখে গল্পগুলোকে ফেলতে হচ্ছিল একটি বিশেষ সময়ে। বলতে দ্বিধা নেই এই বিশেষ সময়টা চলমান। হয়তো বলা হবে চলমান সময় তো দেখাই যাচ্ছে, তাকে গল্পে তুলে আনার মধ্যে কৃতিত্ব কোথায়।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">চলমান সময়কে গল্পে তুলে আনার ক্ষেত্রে লেখককে অনেক সতর্ক হতে হয়। প্রথমত, থাকতে হয় দেখার চোখ। দ্বিতীয়ত, পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা। তৃতীয়ত, অন্তর্দৃষ্টি। চতুর্থত, ঘটনাকে গল্প করে তুলবার ক্ষমতা। এবং আরো অনেক উপাদান। আর অবশ্যই সাহস।  ইমদাদুল হক মিলন এই গ্রন্থের প্রতিটি গল্পে উপর্যুক্ত উপাদানের সফল প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। আর দিয়েছেন সাহসের পরিচয়। </span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রথম গল্প </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">সন্ধানপুর</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">। বিক্রমপুর থেকে একজন স্কুল শিক্ষক তাঁর স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে এসেছেন একজন সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে। কারণ তাঁর মেয়ে কথা না বলে শুধুই কাঁদে। সাইকিয়াট্রিস্ট প্রথমে কথা বলেন বাবার সঙ্গে, তারপর মেয়েটার সঙ্গে কথা বলে বের করেন কান্নার রহস্য। কান্নার রহস্য ভেদ করতে গিয়ে যা জানা গেল তা এক রোমহর্ষক ঘটনা। মেয়েটা আস্তে আস্তে বলে ফেলল সব কিছু। সেদিন ছিল এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফেয়ারওয়েল। তারুণ্যসুলভ চপলতায় ওরা কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবী পরিকল্পনা করে স্কুলে না গিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত জমিদারবাড়িতে গিয়ে তারা সময় কাটাবে গল্প-গুজব-গান-বাজনা করে। পরিকল্পনামতো সব কিছুই চলছিল। হঠাৎ পাঁচজন যুবক এসে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই বন্ধুকে বেঁধে ফেলে। অন্য চারজন মেয়ের তিনজনকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। শুধু সে মেয়েটি বেঁচে যায়। মেয়েটি একজনের পা ধরে বলেছিল, তার মা কয়েক দিন আগে মারা গেছে, তার যেন ক্ষতি না করে তারা।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">সামনেই ঘটা এই চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা মেয়েটাকে এক ট্রমার ভেতরে নিয়ে যায়।  কয়েক দিন পর অপরাধীরা ধরা পড়ে, তবে অন্য অপরাধে।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">এখানে একটি প্রশ্ন উঠতে পারে। অপরাধ করল ধর্ষণের, কিন্তু অন্য অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হলো। কেন? স্পষ্টীকরণ এবং যথাযথ শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা কি লেখকের দায়িত্ব ছিল না? হয়তোবা ছিল। কিন্তু আমাদের সমাজবাস্তবতায় তা অনেক কঠিন। লেখক আসলে দেখাতে চেয়েছেন প্রকৃত বাস্তবতা। </span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">দ্বিতীয় গল্প </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্ধকার নামতে পারেনি</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">। মা মরিয়ম হঠাৎ ময়ে অন্তুকে নেওয়ার জন্য চলে আসে। অন্তু মোরশেদ সাহেবের দেখাশোনা করে। বিনিময়ে মোরশেদ সাহেব অন্তুর পরিবারকে বাড়ি করে দিয়েছে, মাসে মাসে টাকা পাঠায়, গরু কিনে দিয়েছে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">এককথায় অন্তুর সেবার বিনিময়ে স্বাচ্ছন্দ্যের সন্ধান দিয়েছেন মোরশেদ সাহেব। কিন্তু অর্থলোভী মা মরিয়মের তাতে ক্ষুধা মিটছে না। সে নগদ টাকা ও আরো একটি ঘরের বিনিময়ে দ্বিগুণ বয়সী প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করে। অন্তুকে জোর করে নিয়ে যায় গ্রামের বাড়িতে। তারপর কৌশলে নতুন ঘরে নিয়ে গিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। লাইট জ্বালিয়ে দেখে ঘরের মধ্যে তার হবু বর।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">কিন্তু কৌশলী অন্তু লোকটাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে আর ছোট বোনের সহযোগিতায় ভোরবেলা পালিয়ে চলে যায় ঢাকায়। </span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">টাকার লোভে মানুষ যে কত কী করতে পারে এ গল্পটি তারই এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্ষামুখর রাতে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গল্পটিও আপাত রহস্যের আড়ালে কঠিন বাস্তবতার গল্প। বন্ধু জামির আহ্বানে দিপু সিলেটে আসে। কিন্তু দুটি সমস্যার মধ্যে পড়ে যায়। জামির আরেক বন্ধু থাকে শ্রীমঙ্গলে। সে হঠাৎ দুর্ঘটনায় পড়েছে। জামিকে যেতেই হবে। এদিকে শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফলে একাকী দিপুকে থাকতে হয় এই বিশাল বাংলোয় যতক্ষণ না জামি ফিরে আসে। বিদ্যুৎ নেই। এরই মধ্যে দরজায় টোকা। দিপু দরজা খুললে এক সুন্দরী হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ে দিপুর ঘরে। বলে, সে ম্যানেজারের মেয়ে। তার বন্ধু জামির সঙ্গে প্রেম। মা-বাবা মেনে না নেওয়ায় সে একেবারে চলে এসেছে।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">একটু পরে মেয়েটা জানায়, সে ম্যানেজারের মেয়ে নয়। জামির সঙ্গে তার প্রেমও নেই। সে আসলে বাগানের কুলি সর্দারের মেয়ে। তার ওপর ইংরেজ ম্যানেজারের নজর পড়ায় দিনের পর দিন মেয়েটাকে লুকিয়ে রাখতে হতো বস্তির এ ঘরে-সে ঘরে। একসময় তার যক্ষ্মা হয়। কুলি সর্দার একদিন যক্ষ্মাগ্রস্ত মেয়েটাকে জর্জের বাংলোতে দিয়ে যায়। দিশাহারা জর্জ মেয়েটিকে জীবন্ত মাটিচাপা দিতে বলে। তাই করা হয়।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">সব রহস্যের কিনারা হয় না। যেমন</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নদীর সব ঢেউ পার অবধি পৌঁছে না। কিন্তু এখানে রহস্য অংশটুকু আসলে খোলস। মূল চিত্র হলো ওই সময়ের চা-বাগানের ইংরেজ ম্যানেজারদের নির্মম চরিত্র এবং সমাজব্যবস্থা।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাতাবাহার</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গল্পটিও করুণ। মানসিক প্রতিবন্ধী  পাতাবাহারকে নিয়ে এ গল্প। প্রবাসী বাবা বহুদিন পর ফিরে আসে। পাতাবাহারও দিনে দিনে বড় হয়ে ওঠে। কিন্তু মানসিক প্রতিবন্ধিতা যায় না। এ নিয়ে মা বিরক্ত হলেও বাবা হন না। বাবাও অসুস্থ হয়ে একদিন মারা যান। কিন্তু এই মৃত্যু পাতাবাহারকে স্পর্শ করে না। সে আশায় থাকে বাবা একদিন ফিরে আসবে। একসময় অধৈর্য হয়ে রাতের বেলা কোদাল নিয়ে বাবার কবর খুঁড়তে যায়। তাকে আটকানো হয়। বুঝিয়ে বলা হয়, মৃত মানুষ কখনো ফিরে আসে না। পাতাবাহার গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাবা ও বাবা, আমাকে ফেলে কেন তুমি মরে গেলে? আমি এখন কার কাছে থাকব? কে আমাকে ভাত খাওয়াবে? কে আমাকে আদর করবে? বাবা, বাবা ও বাবা।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাতাবাহারের আর্তনাদে রাতের অন্ধকার ভারী হয়ে ওঠে। গভীর থেকে গভীরতর হতে থাকে অন্ধকার।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভুলে যাওয়া নাম</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গল্পটি প্রেমের। বয়স্ক অভিনেতার প্রেমে পড়ে যায় এক তরুণী। একতরফা এই প্রেমে তরুণী এতই আচ্ছন্ন থাকে যে অভিনেতার সামনে নগ্ন হয়ে ছবি তুলতেও বাধে না। কিন্তু অভিনেতার মনোযোগ নেই তরুণীর দিকে। কারণ তরুণীকে অভিনেতার নারী মনে হয় না। বুক সমান, কমনীয়তা নেই, মোহনীয়তা নেই। অনেক দিন পরে ভুলে যাওয়া এই তরুণী আবার তার সামনে চলে আসে। অভিনেতা ভুলে গেলেও তরুণী ভোলে না। নিজেকে নারীরূপে তার সামনে গিয়ে হাজির হয়। তারপর একসময় স্মৃতি বেয়ে ফিরে আসে তার কাছে সেই ভুলে যাওয়া নাম। বয়সের ব্যবধান ঘুচিয়ে তারা এক হয়ে যায়।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">আরেকটি গল্প </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রেমিকার বিয়ের অনুষ্ঠান</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">। প্রধান চরিত্র এক কবি। তরুণী অভিনেত্রীর সঙ্গে তার প্রেম। উচ্ছল দেহ-বিনিময়। একদিন হুট করে অভিনেত্রী এসে বলে তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। তার বিয়েতে যেন সে আসে। কবি যায়। কী অবলীলায় স্বামীর সঙ্গে সে মানিয়ে নিয়েছে। অসংখ্য রাতের সহচরকে কী অবলীলায় না পরিচয় করিয়ে দেয় বন্ধু হিসেবে, স্বামীর সঙ্গে। </span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে মৌ রেশমীর কাজিন। কবিকে এসে বলে তার প্রেমের কথা। বলে কবির প্রেমে সে-ই প্রথম পড়েছিল। কয়েক মাস পর জানতে পারে রেশমীর সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা। তখন সে সরে যায়।</span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাতটি গল্প যেন সাত সমুদ্র। সেখানে অসংখ্য চরিত্রের আনাগোনা, বসবাস, যাপন। বিচিত্র তাদের সম্পর্কের রসায়ন। বিচিত্র তাদের রহস্যের উপাদান। কিন্তু এগুলোর কেন্দ্রে কী? কেন্দ্র সময়। এই সময়। চলমান সময়। যে সময়ে ধর্ষণ হয়, প্রকাশ করলে সামাজিকভাবে সমস্যাগ্রস্ত হতে হয়। এটা এমন এক সময়, যেখানে টাকার লোভে মা মরিয়ম কন্যাকে দ্বিগুণ বয়সী লোকের সঙ্গে বিয়ের নামে বিক্রি করে দেয়। </span></span></span></span></span></span></p> <p style="margin-bottom:13px"><span style="font-size:11pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিষয়ের দিক থেকে বিবেচনা করলে দেখা যাবে সাতটি গল্পই আলাদা।  কিন্তু সম্পর্কের বহুমাত্রিক রসায়ন ও জটিলতা বিশ্লেষণ করলে, স্বার্থ ও লিপ্সার আগ্রাসীভাবের দিকে তাকালে, জীবনসংগ্রামের বন্ধুর পথের দিকে তাকালে দেখা যাবে কোথায় যেন এক ঐক্যসূত্র, কোথায যেন সূক্ষ্ম বন্ধন, কোথায় যেন সূক্ষ্ম কেন্দ্র। ওই কেন্দ্রের দিকে তাকালে দেখা যায় এই সময়েরই নানাবিধ চলচ্ছবি। যে চলচ্ছবি এতই জীবন্ত যে বহু বছর পরে গিয়েও আজকের এই সময়ের একটা চিত্র পেতে গেলে দ্বারস্থ হতে হবে এইসব গল্পের। গ্রন্থটি বহুল পঠিত হবে বলে কামনা করি।</span></span></span></span></span></span></p>
