<p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জীবনে কখনোই ভয় পায়নি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যাবে না। নির্দিষ্ট বস্তু বা পরিস্থিতির জন্য নির্দিষ্ট মাত্রার ভয় স্বাভাবিক আবেগ হিসেবেই গণ্য। কিন্তু এই ভয়ই যদি স্বাভাবিকতার সীমা অতিক্রম করে তীব্র আকার ধারণ করে অথবা ভয়টি হয় অহেতুক, তখন তা রোগ হিসেবে ধরা হয়। সামাজিক পরিবেশে এ ধরনের অস্বাভাবিক বা অতিরিক্ত ভয়কে সোশ্যাল ফোবিয়া বা সামাজিক ভীতি রোগ বলা হয়। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"> </p> <p align="left" class="bodycopy" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপসর্গ-লক্ষণ</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নির্দিষ্ট সামাজিক পরিবেশে অতিরিক্ত উদ্বেগে ভোগে সোশ্যাল ফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা। হোটেল, রেস্তোরাঁ, ক্যান্টিন, বিয়ে বা অন্য কোনো দাওয়াত, সেমিনার, সভা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ রকম জায়গায় তারা মনে করে অন্যরা তাদের দিকে তাকিয়ে থাকতে এবং সমালোচনা করতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত অনেকেই অন্যের সামনে লিখতে, বক্তব্য দিতে বা কোনো কিছু পারফরম করতে, অপরিচিত কারো সঙ্গে কথা বলতে উদ্বেগে ভোগে। সে কারণে ব্যক্তি এ রকম পরিবেশ এড়িয়ে চলে। আর যদি এমন পরিবেশে হাজির হয়ে যায় তাহলে অতিরিক্ত উদ্বেগের শারীরিক ও মানসিক লক্ষণ দেখা দেয়। ভীত ব্যক্তির যেসব শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বুক ধড়ফড় করা, শ্বাসকষ্ট, দম বন্ধ ভাব, বুকের মধ্যে চাপ অনুভব, বুকে ব্যথা, হাত-পা কাঁপা, মুখ শুকিয়ে আসা, মাথা ঝিম ঝিম করা, ঘুরানো বা ব্যথা, অতিরিক্ত ঘাম, ক্লান্তি, পেটে অস্বস্তি, ডায়রিয়া এবং বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"> </p> <p align="left" class="bodycopy" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রভাব</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সোশ্যাল ফোবিয়া ব্যক্তির কর্মক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে বা নষ্ট করে দেয়। এমনকি অনেকেই দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজ করতেও অসমর্থ হয়ে পড়ে। ফলে তার ব্যক্তিজীবন, শিক্ষাজীবন বা কর্মজীবনে ব্যাঘাত ঘটে। অনেকেই পরবর্তী সময়ে বিষণ্নতা রোগে আক্রান্ত হয়। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভীতি উদ্রেককারী সামাজিক পরিবেশে উদ্বেগের উপসর্গগুলো কখনো কখনো খুব অল্প সময়ে তীব্র আকার ধারণ করে নিয়ন্ত্রণহীন আতঙ্কে রূপ নিতে পারে। এ সময় তার এমনও মনে হতে পারে যে সে বুঝি পাগল হয়ে যাচ্ছে বা মারা যাচ্ছে। এ অবস্থাকে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্যানিক অ্যাটাক</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বলা হয়। কিছু সময় পর বা সেই পরিবেশ থেকে সরে এলে এ অবস্থার অবসান ঘটে। উল্লেখ্য, যদিও প্যানিক অ্যাটাকের কারণে ব্যক্তি অসহ্য কষ্ট বোধ করে, একসময় উপসর্গগুলো চলে যায় এবং এ থেকে মৃত্যু বা ভয়াবহ ক্ষতির আশঙ্কা নেই।</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"> </p> <p align="left" class="bodycopy" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চিকিৎসা</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সামাজিক ভীতি রোগের চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য হলো আক্রান্ত ব্যক্তির ভীতি এই পর্যায়ে কমিয়ে নিয়ে আসা, যাতে তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মক আকারে ব্যাহত না হয়। এ রোগের চিকিৎসায় </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সিস্টেমেটিক ডিসেনসিটাইজেশন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামের এক ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে ধীরে ধীরে চর্চা ও কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে ব্যক্তিকে সামাজিক পরিবেশে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত করা হয়। প্রথমে আক্রান্ত ব্যক্তিকে রিলাক্সেশন বা শিথিলায়ন পদ্ধতি শেখানো হয়। এতে ব্যক্তি চাপের পরিবেশে বা উদ্বেগে আক্রান্ত হলে কিভাবে নিজ থেকেই নিজের শরীর ও মনকে ধীরস্থির ও শান্ত রাখা যায়, সেই কৌশল আয়ত্ত করে। এরপর ব্যক্তির ভীতির বিষয়টিকে কম উদ্বেগ সৃষ্টিকারী থেকে অধিক উদ্বেগ সৃষ্টিকারী</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এভাবে পর্যায়ক্রমে ভাগ করা হয় এবং প্রথমে রোগীকে কম উদ্বেগ সৃষ্টিকারী পরিবেশের সম্মুখীন করা হয়। এ সময় উদ্বেগ তৈরি হলে রোগীকে আগে থেকে শেখানো রিলাক্সেশন পদ্ধতিতে নিজেকে শিথিলায়ন করতে উৎসাহিত করা হয়। কয়েকবারের চর্চায় রোগী ওই পরিস্থিতির উদ্বেগাবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারে। এরপর পরবর্তী ধাপের উদ্বেগের পরিস্থিতিতে তাকে নিয়ে গিয়ে আবারও রিলাক্সেশন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। এভাবে নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে কম মাত্রা থেকে বেশি মাত্রার উদ্বেগের পরিস্থিতিতে রিলাক্সেশন করিয়ে ব্যক্তির অহেতুক ও অতিরিক্ত ভীতি দূর করা বা কমিয়ে আনা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে উদ্বেগের শারীরিক-মানসিক উপসর্গ কমাতে ওষুধ ব্যবহারেরও প্রয়োজন হতে পারে। </span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"> </p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক: সহযোগী অধ্যাপক</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কমিউনিটি ও সোশ্যাল সাইকিয়াট্রি বিভাগ</span></span></span></span></span></span></p> <p align="left" class="body" style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="line-height:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা</span></span></span></span></span></span></p>