<p>প্রয়োজনীয়সংখ্যক চিকিৎসক নেই। সাত মাস ধরে নেই গাইনি বিশেষজ্ঞ ও অ্যানেসথেটিস্ট। ফলে বন্ধ আছে অপারেশন। তবু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ চিত্র গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের।</p> <p>জানা যায়, উপজেলার সাড়ে তিন লাখ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিতে ৪০ বছর আগে ৩১ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হয়। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু এখনো জনবল আছে ৩১ শয্যার। ২২ জন চিকিৎসকের স্থলে কর্মরত মাত্র ৯ জন। সাত মাস ধরে নেই গাইনি বিশেষজ্ঞ ও অ্যানেসথেটিস্ট। এ কারণে অপারেশনও বন্ধ আছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনের দ্বিতীয় তলা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ছাদের রড বেরিয়ে গেছে। খসে পড়ছে পলেস্তারা। অনেক সময় পলেস্তারা খসে রোগী, নার্স ও চিকিৎসকরা আহত হচ্ছেন। এ কারণে কর্তৃপক্ষ মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডের প্রবেশদ্বারে ‘এ ওয়ার্ডের ছাদ ভেঙে পড়ছে, এখানে থাকলে নিজ দায়িত্বে থাকতে হবে’ লেখা নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়েছে। </p> <p>স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি উপজেলার লাখিরপাড় গ্রামের বিল্লাল খন্দকার বলেন, ‘টাইফয়েডে ভুগছি। নিরুপায় হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকিতে ভর্তি হয়েছি। চিকিৎসকরা ভর্তি করাতে চাননি। বাইরে ভালো চিকিৎসা পাব না। তাই এখানেই চিকিৎসা নিচ্ছি।’ চিত্রাপাড়া গ্রামের নাসরিন বেগম বলেন, ‘আগে এখানে সিজারসহ ছোটখাটো অপারেশন করা হতো। কিন্তু সাত মাস ধরে এখানে অপারেশন বন্ধ আছে। এতে প্রসূতিরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’ </p> <p>স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স জ্যাকলিন রুনু বৈদ্য বলেন, ‘কাজ করার সময় ছাদের পলেস্তারা খসে পায়ে পড়ায় আহত হয়েছি। আমাদের বসার রুমের ছাদের অবস্থা ভালো নয়। ঝুঁকির মধ্যে দায়িত্ব পালন করে যেতে হচ্ছে।’</p> <p>এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, ‘প্রকৌশল বিভাগ অনেক আগেই এ ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। আমরা এখানে রোগী রাখতে চাই না। রোগীরা জোর করে এখানে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নেন। তাই আমরাও সতর্ক নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়েছি। তিন মাসের মধ্যে এ ভবন ভেঙে নতুন আধুনিক ভবন নির্মাণকাজ শুরুর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এখানে চিকিৎসক সংকট প্রকট। এর মধ্যেও প্রতিদিন তিন শ থেকে চার শ রোগীকে আমরা চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি।’ দীর্ঘদিন অপারেশন বন্ধ থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি একাধিকবার জানানোর পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’</p> <p> </p>