<p>মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সশস্ত্র বাহিনী ও আরাকান আর্মির লড়াইয়ে সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া দেশটির ২৮৮ জন বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও সেনা বাহিনীর সদস্যকে ফেরত পাঠিয়েছে বাংলাদেশ।</p> <p>গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে তাঁদের কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ বিআইডাব্লিউটিএ জেটিঘাট হয়ে কর্ণফুলী জাহাজে উঠানো হয়। পরে সেখান থেকে দুপুরে সেন্ট মার্টিনসংলগ্ন সাগরে অবস্থানরত মিয়ানমারের চিন ডুইন নামক জাহাজে হস্তান্তর করা হয়।</p> <p>এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁদের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কক্সবাজারে আনা হয়। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আটটি বাস, একটি মাইক্রোবাস ও দুটি পাজেরো জিপে চড়িয়ে তাঁদের কক্সবাজারের ইনানী জেটিঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। নাইক্ষ্যংছড়িতে দায়িত্বরত ১১ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল সাহল আহমদ নোবেল নেতৃত্ব দিয়ে তাঁদের ইনানী জেটিঘাটে নিয়ে যান।</p> <p>গত ১১ মার্চ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ২৮৮ জন বিজিপি ও সেনা সদস্য পালিয়ে আসেন। এপারে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের কাছে আত্মসমর্পণের পর তাঁদের নিরস্ত্রীকরণ করে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি হেফাজতে একটি বিদ্যালয়ে রাখা হয়। পরে দুই দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনার পর তাঁদের মিয়ানমারের উদ্দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।</p> <p>গতকাল এই ফেরত কার্যক্রম চলাকালে বিজিবি, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী ও পুলিশের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী ছিল। সেখানে উপস্থিত কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন জানিয়েছেন, গত দেড় মাসে পালিয়ে আসা ২৮৮ জনকে নানা প্রক্রিয়া শেষে মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।</p> <p>বাংলাদেশে আশ্রিত মিয়ানমার বিজিপি ও সেনা সদস্যদের যাচাই-বাছাই ও অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করতে গত বুধবার দুপুরে মিয়ানমারের ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে পৌঁছায়। সঙ্গে তারা মিয়ানমারের বিভিন্ন কারাগারে সাজা শেষ হওয়া এবং ক্ষমাপ্রাপ্ত ১৭৩ জন বাংলাদেশি নাগরিককে একই জাহাজে করে ফেরত আনেন।</p> <p>প্রসঙ্গত, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ৩৩০ জনকে এভাবেই ফেরত পাঠানো হয়েছিল। তবে এবার বাংলাদেশের অনুরোধে মিয়ানমারের বিভিন্ন কারাগারে আটক থাকা ১৭৩ বাংলাদেশিকে জাহাজে করে নিয়ে এসে বুধবার বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে মিয়ানমার সরকার। এই জাহাজে করেই মিয়ানমারে ফেরত যাচ্ছে ২৮৮ জন।</p>