‘প্রিয় সোনামণি, তুমি আমার একমাত্র সন্তান, এখানে সবাই তোমার প্রশংসা করছে। তুমি বাচ্চা থেকে ক্রমেই কিশোরী হলে। মাত্র ১৯ বছর চার মাস হলেও তুমি আমাকে অনেক কিছুই দিয়েছো। তুমি আমার চাঁদ, তুমি আমার রোদ্দুর।
অবিন্তা কবির
মেয়ের স্বপ্নযাত্রা, কাঁদলেন মা
নিজস্ব প্রতিবেদক

‘অবিন্তা কবির ফাউন্ডেশন’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রিয় সন্তান অবিন্তার উদ্দেশে এই কথাগুলো বলছিলেন রুবা আহমেদ। গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর লা মেরিডিয়ানে ছিল এ আয়োজন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত মারিও পালমা, অবিন্তার বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী, পরিচিতজন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও অবিন্তা কবিরের পরিবারের সদস্য ও পরিবার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানে অবিন্তার স্বজন ও বিশিষ্টজনরাও কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্মৃতিচারণা করেন অবিন্তার পারিবারিক বন্ধু এস এ কামাল হক, কাজী আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ‘অ্যান ইনটিমেট পোর্ট্রেট অব অবিন্তা কবির’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন অবিন্তার পরিবারের সদস্যরা। এ ছাড়া ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইট () উন্মোচন করা হয় অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানে অতিথিদের সামনে তুলে ধরা হয় অবিন্তা কবির স্মরণে এটি ভিডিও তথ্যচিত্র। এ ছাড়া তাঁর হাতের লেখা কিছু নোট ও চিঠি অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়।
‘১ জুলাই’ সম্পর্কে বলতে গিয়ে রুবা আহমেদ বলেন, ‘আমাকে সে বলেছিল রাত ১০টার মধ্যে ফিরে আসবে। আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম; কিন্তু অবিন্তা আর ফিরে আসেনি।’ একমাত্র সন্তানের বেড়ে ওঠা এবং ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘অবিন্তা মাত্র ১০ বছর বয়সে ওমরাহ করেছিল। সে ছিল আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। অবিন্তা বেঁচে থাকলে সে মানুষের জন্য অনেক কিছু করত। সে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কথা নিয়ে প্রচুর ভাবত। কখনোই সে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হতে চায়নি। ঢাকা তার প্রিয় শহর ছিল। অবিন্তা স্বপ্ন দেখত, সে একদিন মানুষের জন্য অনেক কিছু করবে। আজ সে নেই, আমরা তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য অবিন্তা ফাউন্ডেশন তৈরি করেছি। এই ফাউন্ডেশন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করবে।’
অবিন্তার নানা মঞ্জুর মুর্শেদ স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন, ‘মাত্র ১৯ বছর বয়সে সে চলে গেছে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই সে আমাদের অনেক কিছু দিয়ে গেছে। সে আমাদের পরিবারের গর্ব। অবিন্তা লেখাপড়ায় অত্যন্ত ভালো ছিল। তার হৃদয়জুড়ে ছিল বাংলাদেশ। ঢাকাকে সে খুব ভালোবাসত। এই শহরে এত ধুলাবালু, জ্যাম তার পরও নিউ ইয়র্ক থেকেও তার প্রিয় শহর ছিল ঢাকা।’
নানি নীলু মুর্শেদ বলেন, ‘শেষ গ্রীষ্মে আমরা একসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টায় ছিলাম। টুনটুনি (অবিন্তা) গ্রীষ্মের চশমা ও শাড়ি পরেছিল। তাকে অনেক বড় দেখাচ্ছিল, যেন সে কিশোরী থেকে নারী হয়ে উঠেছে। অবিন্তা তার মা ছাড়া একটি মুহূর্তও থাকেনি। সে চলে গিয়ে আমাদের শূন্য করে দিয়েছে।’
মামা তানভির আহমেদ বলেন, ‘সে সব সময় সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখত, যেখানে দারিদ্র্য থাকবে না। আমরা চেষ্টা করব তার স্বপ্নগুলো পূরণ করতে।’ তিনি আরো বলেন, “আমাকে অবিন্তা ‘বিল্লু’ বলে ডাকত। বলত, ‘বিল্লু, আমি বাংলাদেশে ফিরে আসব। এখানে গরিব ছেলে-মেয়ের জন্য কাজ করব।’”
মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট বলেন, অবিন্তা মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। সে যুক্তরাষ্ট্রের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল। সে বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কাজ করার স্বপ্ন দেখত।’ তিনি আরো বলেন, ‘অবিন্তার মতো আমরাও একটা সুখী শান্তিপূর্ণ সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি, আমাদের সেই পৃথিবীটাই গড়ে তোলার কাজ করা উচিত।’
‘অ্যান ইনটিমেট পোর্ট্রেট অব অবিন্তা কবির’ গ্রন্থে অবিন্তার নানা মঞ্জুর মুর্শেদ লিখেছেন, যে পথভ্রষ্ট যুবকগুলো এই জঘন্য অপরাধ করল, তাদের আল্লাহতায়ালা বিচার করবেন নিশ্চয়ই। আল্লাহতায়ালার কাছে আমার এই প্রার্থনা যে তিনি যেন এ রকম বিভ্রান্ত পথভ্রষ্ট যুবকদের সুমতি দেন, যেন এ ধরনের কোনো ঘটনা এই বাংলার মাটিতে না হয়।’
উল্লেখ্য, অবিন্তা নিহত হওয়ার পর তাঁর একটি ডায়েরি খুঁজে পায় তাঁর পরিবার। ডায়েরিতে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি মানুষের জন্য চিন্তা করি এবং আমার লক্ষ্য, বাংলাদেশে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করব। আমি বিশ্বাস করি, আজকের এই আমি, আমার সংস্কৃতি ও জাতীয়তার একটি অংশ। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল একটি দেশ, আর এ দেশের জন্য কিছু করা আমার নৈতিক দায়িত্ব, যদিও এনজিও প্রতিষ্ঠা করা অতি সামান্য একটি পদক্ষেপ।’
হলি আর্টিজানে নিহত হওয়ার আগে ২০১৬ সালের ২৭ জুন অবিন্তা কবির দেশে আসেন পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপনের জন্য। গুলশানে রেস্টুরেন্টে দেখা করতে গিয়েছিলেন সহপাঠীর সঙ্গে। অবিন্তা যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত বছরের ১ জুলাই রাতে ইফতারের পরপরই অবিন্তা তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আরেক বন্ধু ও এই ঘটনায় নিহত ফারাজ আইয়াজ হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে হলি আর্টিজানে যান। সেখানেই জঙ্গিদের হাতে তিনি অন্যদের সঙ্গে নির্মমভাবে খুন হন।
সম্পর্কিত খবর

এক ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানীতে দুজনসহ তিন জেলায় চার খুন
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবরে মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুজনকে হত্যা করা হয়েছে। কুমিল্লায় ঘুমন্ত নারীর মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও খুঁচিয়ে খুন করা হয়েছে। দিনাজপুরে চালককে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। কালের কণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত :
গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান ও আদাবরের নবোদয় হাউজিংয়ে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি ইফতেখার হাসান বলেন, চাঁদ উদ্যান সড়কের লাউতলায় আল আমিন (৩০) নামের একজনকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
এর এক ঘণ্টা পর আদাবরের নবোদয় হাউজিংয়ে ইব্রাহিম নামের একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আদাবর থানার এসআই আলমগীর হোসেন বলেন, গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় সজীব ও রুবেল নামের দুজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
কুমিল্লা : দেবীদ্বার পৌর এলাকার সাইলচর গ্রামে মঙ্গলবার রাতে ঘুমন্ত নারীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ঝরনা বেগমের স্বামী আব্দুল করিম জানান, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর পারিবারিক নানা বিষয়ে দূরত্ব ছিল। স্বামীর অসুস্থতার কারণে স্ত্রী তাঁকে প্রায়ই ঘুমের ওষুধ খাওয়াতেন। আগের রাতে ঝরনা তাঁকে আটটি ঘুমের বড়ি খাওয়ালে কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।
দেবীদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহীন বলেন, ‘ওই নারীর মাথায় তিনটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে, যেগুলো ইলেকট্রিক প্লায়ার্স বা স্ক্রু ড্রাইভারের আঘাত হতে পারে। হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নানামুখী, আমরা তদন্ত করছি।’
দিনাজপুর : দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ৩ নম্বর ধামইর ইউনিয়নের মাটিয়ান গ্রামে চালককে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
নিহত আসাদুল ইসলাম (৩৫) উপজেলার যুগীহারীখাড়িপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে।
নিহতের বড় ভাই মকবুল হোসেন জানান, কয়েক দিন আগে পুরনো ভ্যান বিক্রি করে নতুন ভ্যান কেনেন আসাদুল ইসলাম। মঙ্গলবার সেই ভ্যান চালাতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেননি।
রাজশাহী : রাজশাহীর পুঠিয়ায় নিখোঁজ হওয়া এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার আগলা গ্রামে ঘাসের ভেতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত মো. আবরার (৬) ওই এলাকার ডা. শওকত শরীফের ছেলে। ডা. শওকত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিকস বিশেষজ্ঞ।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কিশোরী হেফাজতে রাখা হয়েছে। আরএমপির বেলপুকুর থানার ওসি সুমন কাদেরী এসব তথ্য কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন।

সিরিজ জিতে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়, ১৯৮৬ এশিয়া কাপ দিয়ে। তখন পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। এরপর সময় গড়িয়েছে, কালের বিবর্তনে শ্রীলঙ্কায় টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। সব ফরম্যাটে জয়ও আছে।

জেতার জন্য ১৩৩ রান টি-টোয়েন্টিতে বড় লক্ষ্য নয়। তবে অলিখিত ফাইনালের চাপ, ব্যাটিংয়ের ফাঁকফোকর আর প্রেমাদাসার উইকেট বিবেচনায় এটা আবার আয়েশে পাড়ি দেওয়া দূরত্বেরও নয়।
মাস তিনেক আগে ঘটা করে তাঁকে টি-টোয়েন্টির সহ-অধিনায়ক করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম সফরে নীরবে নতুন দায়িত্বের সঙ্গে একাদশেও জায়গা হারিয়েছিলেন শেখ মেহেদী। তাই সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটায় আর সবার চেয়ে তাঁর ওপর চাপ ছিল বেশি। যদিও মাঠে সে রকম কিছু মনে হয়নি। বরং মাত্র ১১ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন মেহেদী, যা তাঁর ক্যারিয়ারসেরা টি-টোয়েন্টি বোলিংও। এর মধ্যে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে করা ২ ওভারে ২ উইকেট নিয়েছেন। নিজের কোটা পূর্ণ করেছেন ফিল্ডিং বিধি-নিষেধ উঠে যাওয়ার পর। সে স্পেলেও জোড়া শিকার মেহেদীর। আর উইকেটগুলো যথাক্রমে কুশল পেরেরা, দীনেশ চান্ডিমাল, চারিথ আশালঙ্কা ও পাথুম নিশাঙ্কার—বকলমে যাঁরা শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনআপের মেরুদণ্ড। সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাদ পড়া মুস্তাফিজুর রহমান গতকালও উজাড় করে দিয়েছেন। পাওয়ার প্লেতে নিখুঁত নিশানায় দুই ওভার করেছেন। পরের স্পেলে স্লোয়ার আর কাটারে ধন্দে রেখেছেন লঙ্কান ব্যাটারদের। তাতে ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান গুনেছেন মুস্তাফিজ, সঙ্গে আঁটসাঁট বোলিংয়ের পুরস্কার হিসেবে একটি শিকার। এর মধ্যে শামীম হোসেনকে দিয়ে দুই ওভার বোলিং করিয়ে নিয়েছেন লিটন দাস। এই সিরিজে যেন অধিনায়ককে বিমুখ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শামীম! ১০ রানের বিনিময়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠার মুখে কামিন্ডু মেন্ডিসকে থামিয়েছেন তিনি। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে কাচটি দারুণ দক্ষতায় নিয়েছেন এক ম্যাচ বিরতির পর একাদশে ফেরা তানজিম হাসান। রিশাদ হোসেন ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়েছেন। তবে এক দিনে সবার তো আর সব হয় না। বাংলাদেশের বোলিং বিভাগে যেমন শরিফুল ইসলাম রান গুনেছেন ৫০! তাতে শ্রীলঙ্কার ইনিংসও শেষ দিকে দাসুন শানাকার ঝটকায় এক শ ছাড়িয়ে যায়। ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার।
অবশ্য ম্যাচের নির্ঘণ্ট করতে গিয়ে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চারিথ আশালঙ্কা একটা কথাই বারবার করেছেন, ‘মেহেদী দারুণ বোলিং করেছে।’ টি-টোয়েন্টির একাদশে প্রত্যাবর্তনের রোমাঞ্চকর গল্প লিখলেন এই অফস্পিনার অলরাউন্ডার।

সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে এক দিনে ৫৫ জনকে পুশ ইন
নিজস্ব প্রতিবেদক ও মহেশপুর (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা

ভারত থেকে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার তিনটি সীমান্তপথে ৫৫ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তাদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ, ৩৩ জন নারী এবং ১০টি শিশু।
গতকাল বুধবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে এই পুশ ইনের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট ৪৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হক।
এর আগে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তের ভারতীয় অংশে অবৈধভাবে অবস্থান করা সাত বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অতিরিক্ত পরিচালক আবু হানিফ মো. সিহানুক স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বিজিবি।সিলেট বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন সূত্রে জানা যায়, নোয়াকোট, কালাইরাগ, তামাবিল ও শ্রীপুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত দিয়ে চারটি গ্রুপে এসব বাংলাদেশিকে পুশ ইন করা হয়। পরে সীমান্ত এলাকায় টহলরত বিজিবি সদস্যরা তাদের সবাইকে আটক করেন।
বিজিবি সূত্র জানায়, সিলেট জেলার কালাইরাগ সীমান্তে সাতটি পরিবারের ১৯ জনকে আটক করা হয়। শ্রীপুর সীমান্তের মোকামপুঞ্জি এলাকা দিয়ে পুশ ইন করা হয় ১৩ জনকে। তামাবিল বিওপির নলজুরি থেকে দুজনকে আটক করা হয়। অন্যদিকে সুনামগঞ্জ জেলার নোয়াকোট বিওপি এলাকার ছনবাড়ী সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন করা হয় ২১ জনকে।
মহেশপুর সীমান্তে ৭ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর : ঝিনাইদহের মহেশপুর বিজিবির পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অবৈধভাবে ভারতে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিক ভারত থেকে বাংলাদেশ আসার সময় বিএসএফ তাদের আটক করে। পরে মহেশপুর সীমান্তের বাগাডাঙ্গা বিওপিকে অবগত করে তারা। আটক ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বিকেলে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফের কাছ থেকে তাদের গ্রহণ করা হয়।

কুমিল্লায় ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত নারীকে, দিনাজপুরে ভ্যানচালককে হত্যা
- রাজশাহীতে শিশুর লাশ উদ্ধার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

কুমিল্লায় ঘুমন্ত নারীর মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও খুঁচিয়ে খুন করা হয়েছে। দিনাজপুরে চালককে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। রাজশাহীর পুঠিয়ায় পাওয়া গেছে ছয় বছরের এক শিশুর লাশ। কালের কণ্ঠের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত :
কুমিল্লা : দেবীদ্বার পৌর এলাকার সাইলচর গ্রামে মঙ্গলবার রাতে ঘুমন্ত নারীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ঝরনা বেগমের স্বামী আব্দুল করিম জানান, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর পারিবারিক নানা বিষয়ে দূরত্ব ছিল। স্বামীর অসুস্থতার কারণে স্ত্রী তাঁকে প্রায়ই ঘুমের ওষুধ খাওয়াতেন। আগের রাতে ঝরনা তাঁকে আটটি ঘুমের বড়ি খাওয়ালে কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।
দেবীদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাহীন বলেন, ‘ওই নারীর মাথায় তিনটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে।
দিনাজপুর : দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ৩ নম্বর ধামইর ইউনিয়নের মাটিয়ান গ্রামে চালককে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সকালে রাস্তা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত আসাদুল ইসলাম (৩৫) উপজেলার বিজোড়া ইউনিয়নের যুগীহারীখাড়িপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে।
নিহতের বড় ভাই মকবুল হোসেন জানান, কয়েক দিন আগে পুরনো ভ্যান বিক্রি করে নতুন ভ্যান কেনেন আসাদুল ইসলাম। মঙ্গলবার সেই ভ্যান চালাতে গিয়ে আর বাসায় ফেরেননি।
রাজশাহী : রাজশাহীর পুঠিয়ায় নিখোঁজ হওয়া এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার আগলা গ্রামে ঘাসের ভেতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত মো. আবরার (৬) ওই এলাকার ডা. শওকত শরীফের ছেলে। ডা. শওকত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিশেষজ্ঞ।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কিশোরী হেফাজতে রাখা হয়েছে। আরএমপির বেলপুকুর থানার ওসি সুমন কাদেরী এসব তথ্য কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে দুই কিশোরী আবরারকে খেলতে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে দুই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আবরারকে ঘাসের ভেতরে পাওয়া যাবে বলে তারা জানায়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত ১০টার দিকে লাশ উদ্ধার করে।