ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৯ মহররম ১৪৪৭
স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার হাতে

দ্রুত সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
দ্রুত সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে
ড. মুহাম্মদ ইউনূস

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সংস্কারের এই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা পুরো প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করব। নাগরিক, বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট সবাই যাতে বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পারেন, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

গতকাল রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার হাতে এই প্রতিবেদন তুলে দেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্যরা। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, এই সংস্কারগুলো শুধু পড়ার জন্য নয়; আমার বিশ্বাস, এগুলো স্কুলের পাঠ্যক্রমেও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যাতে ছোটবেলা থেকেই শিশুদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে ওঠে।

প্রধান উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, আর দেরি নয়, এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের পথে দ্রুত অগ্রসর হতে হবে।

কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পরামর্শ, গবেষণা এবং মাঠ পর্যায়ের কাজ শেষে তাঁরা এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন। তিনি বলেন, প্রতিবেদনের প্রথম অংশে রয়েছে কাঠামোগত সংস্কার আর শেষের দিকে আমরা তুলে ধরেছি এমন একটি মূলধারার চিন্তা, যেটি অনুসরণ করলে হাজারো কার্যকর পরিবর্তন একসঙ্গে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আরো দক্ষ ও আধুনিক করে গড়ে তোলা।

প্রতিবেদনে শহরভিত্তিক স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর চ্যালেঞ্জগুলোর কথাও গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশেষ করে ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুর্বলতা।

তিনি বলেন, বিভাগীয় অদক্ষতা এবং ঘুষ-দুর্নীতি এখনো বড় সমস্যা। বড় প্রকল্প থেকে শুরু করে সাধারণ সেবা পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে দুর্নীতির ছাপ রয়েছে। প্রকল্প পর্যায়ে, সেবা পর্যায়ে এবং বিভিন্ন বিভাগীয় স্তরেও দুর্নীতি ছড়িয়ে আছে।

এগুলো সমাধান না করলে ভালো শাসনব্যবস্থা শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে।

এই বৈঠকে কমিশনের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, অধ্যাপক ফেরদৌস আরফিনা ওসমান, আবদুর রহমান, ড. মাহফুজ কবির, মহসুদা খাতুন শেফালী, অধ্যাপক মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, এলিরা দেওয়ান, অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, এ কে এম তারিকুল আলম, হেলেনা পারভীন ও মজবাহ উদ্দিন খান।

পরে সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্থানীয় সরকার কমিশনের প্রতিবেদন দাখিল-পরবর্তী ব্রিফিংয়ে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, সংস্কার না করে জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকারকোনো নির্বাচন করেই ভালো ফল পাওয়া যাবে না।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, মাত্র ৪০ দিনের একটি শিডিউলে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করা সম্ভব।

বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে ২২৫ দিন লাগে। খরচ হয় দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা। একটি শিডিউলে খরচ নেমে আসবে ৭০০ কোটি টাকায়।

 

সুপারিশে যা আছে

সুপারিশে বলা হয়েছে, গ্রামীণ স্থানীয় সরকারের তিনটি স্তর ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদ এবং নগর স্থানীয় সরকারের দুটি প্রতিষ্ঠান পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন বহাল থাকবে।

স্থানীয় সরকারের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনগুলোকে একটি সহজ, স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমজাতীয় গণতান্ত্রিক সংগঠনকাঠামো প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়। এই কাঠামোগুলো অধ্যাদেশ প্রণয়নের মাধ্যমে অবিলম্বে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয় সুপারিশে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সরকারের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক পাঁচটি আইন রয়েছে। রয়েছে শতাধিক অধস্তন আইন এবং অসংখ্য বিধি ও প্রজ্ঞাপন। এই আইনের জাল স্থানীয় সরকার কার্যকরের একটি প্রধান বাধা। তাই কমিশন এই পাঁচটি আইনকে একটি সমন্বিত আইনে একীভূত করার সুপারিশ করছে। একীভূত আইন অধ্যাদেশ আকারে জারি হলে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন একসঙ্গে করা সম্ভব বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচন একটি সুবিধাজনক ও যৌক্তিক সময়ে অনুষ্ঠান করা যায়। তবে একক তফসিলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে একটি অধ্যাদেশ বা আইনের মাধ্যমে বিদ্যমান সব স্থানীয় সরকার সংস্থা বিলুপ্ত করতে হবে।

এতে বলা হয়, ইউনিয়ন পরিষদের জনসংখ্যা ও আয়তনের ভিত্তিতে ওয়ার্ডের সংখ্যা পুনর্নির্ধারণ করা প্রয়োজন। বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের জনসংখ্যা সর্বোচ্চ চার লাখ ৭৫ হাজার থেকে সর্বনিম্ন প্রায় পাঁচ হাজার জনগোষ্ঠী পর্যন্ত বিস্তৃত। এ ক্ষেত্রে ওয়ার্ডের সীমানা ও জনসংখ্যা পুনর্নির্ধারণ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদকে কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালনা করা প্রায় অসম্ভব। তাই প্রতিটি ওয়ার্ডে জনসংখ্যা এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ জন ধরে ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে সর্বনিম্ন ৯টি থেকে সর্বোচ্চ ৩৯টি পর্যন্ত ওয়ার্ড হতে পারে।

উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচনের সুবিধার্থে উভয় পরিষদের ওয়ার্ড পদ্ধতি কার্যকর করার সুপারিশ করা হয়। এতে বলা হয়, প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ উপজেলা পরিষদের তিনটি ওয়ার্ড হিসেবে পরিগণিত হবে এবং একটি উপজেলা জেলা পরিষদের তিনটি নির্বাচনী ওয়ার্ডে বিভক্ত হতে পারে।

ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পরিষদগুলোর এক-তৃতীয়াংশ ওয়ার্ড নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে এবং তা ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে তিনটি নির্বাচনে সম্পূর্ণ হবে। এ ঘূর্ণায়মান নারীর সংরক্ষিত ওয়ার্ড ব্যবস্থা আগামী তিন নির্বাচনের পর পুনর্মূল্যায়ন হতে পারে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে কর্মরত দুটি প্রকৌশল অধিদপ্তর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে একত্র করার কথা বলা হয় সুপারিশে।

উপজেলা পর্যায়ে পূর্ণাঙ্গ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত স্থাপন এবং বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একজন সিনিয়র সহকারী জজের পদায়নের মাধ্যমে এডিআর আদালত স্থাপনের সুপারিশ করা হয়। বলা হয়, সালিসব্যবস্থাকে এডিআর অফিসারের তত্ত্বাবধানে আনতে হবে। কোনো সালিসে আপস-মীমাংসা না হলে এডিআর অফিসার তার আপিল শুনবেন। এডিআর অফিসার সালিস ব্যবস্থার তত্ত্বাবধান ও সক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। যত দিন পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে পূর্ণাঙ্গ আদালত প্রতিষ্ঠিত না হয়, তত দিন পর্যন্ত গ্রাম আদালত ব্যবস্থা বহাল থাকবে।

ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদকে কার্যকরভাবে স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সংযুক্ত করার উপায় হিসেবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে অনুমোদিত জনবল সম্পূর্ণভাবে পদায়নের জন্য কমিশন সুপারিশ করেছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আজ রাজপথে নামছে বিএনপি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যাকাণ্ডের অপপ্রচার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণভাবে আজ থেকে রাজপথে থাকবে বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজপথ দখল করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে বিএনপি। এ জন্য রাজপথে বিএনপিও শক্তি ও জনসমর্থন দেখাবে।

এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দিচ্ছে না দলটি।

এমনকি এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য দলে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতা। দলের নেতারা বলছেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত দুজনকে চিহ্নিত করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। কিন্তু বিরোধী পক্ষ একতরফাভাবে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করছে।
এর জবাব দিতে রাজপথে শক্তি দেখাবে দলটি। এরই অংশ হিসেবে আজ সোমবার ছাত্রদল ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং অন্য অঙ্গসংগঠন পৃথক শোডাউন করবে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে। জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
জনগণকে নিয়ে দেশবিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা হবে।

মাঠে নামছে ছাত্রদল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা এবং সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল করবে। গুপ্ত সংগঠন বলতে ইসলামী ছাত্রশিবির ও তাদের সহযোগী সংগঠনকে বোঝানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির।

ছাত্রদলের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সারা দেশের সব জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

কর্মসূচির বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, গুপ্ত সংগঠন হিসেবে সেসব সংগঠনকেই বোঝানো হয়েছে, যারা প্রকাশ্যে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার বদলে গোপনে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। গত ৫ আগস্টের পর একটি মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের এহেন গুপ্ত কার্যক্রম এ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে অসহনশীল করে তুলছে এবং রাজনৈতিক বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে তুলছে। এ রকম কুচক্রী কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যেন দেশবাসীকে এসব বিভ্রান্তিকর বিষয়ে সচেতন করে তোলা যায়।

গুপ্ত সংগঠন বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ছত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যারা ক্যাম্পাসগুলোতে মব সৃষ্টি করে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, তারাই গুপ্ত সংগঠন। ছাত্রশিবির এবং গুপ্তভাবে সংগঠন পরিচালনা করতে ছাত্রশিবিরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করে, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
সশস্ত্র বাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির মেয়াদ আরো দুই মাস বাড়ল

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ আরো দুই মাস (৬০ দিন) বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল রবিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ১৩ মে থেকে তাঁদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ গতকাল শেষ হয় ।

মেয়াদ বাড়ানোর আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কমিশন্ড কর্মকর্তাদের (কোস্ট গার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে নিয়োজিত সমপদমর্যাদার কর্মকর্তারাসহ) ‌‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮-এর ১২(১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এর মেয়াদ হবে ১৪ মার্চ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। সারা দেশে তাঁরা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

প্রথমে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও এর ওপরের সমপদমর্যাদার কর্মকর্তা) এই ক্ষমতা দেওয়া হয়। অর্থাৎ শুধু সেনাবাহিনী নয়, বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদেরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। তখন ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল।

সেই মেয়াদ নভেম্বরের মাঝামাঝি শেষ হয়েছিল। পরে সেই ক্ষমতার মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়ানো হয়।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ বিএনপির

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি)  বেনজীর আহমেদসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ দিয়েছে বিএনপি।

গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে এই অভিযোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য এবং তথ্য সেলের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন খান।

অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনায় ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

তাঁরা হলেনঝালকাঠির নলছিটির মোহাম্মদ আলী খান, সাবেক যুবদল নেতা মো. জিল্লুর রহমান, আকিদুল আলী, খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী, মো. বাবুল, এনামুল, এরশাদ আলী, মো. গিয়াস উদ্দিন খান, মো. কবির উদ্দিন খান ও নজরুল ইসলাম।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় এসব ভুক্তভোগীকে অপহরণের পর আয়নাঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। গত বছর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলায়নের পর মোহাম্মদ আলীকে হাত ও চোখ বেঁধে পূর্বাচলের শেষ প্রান্তে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফেলে আসা হয়। পাঁচ বছর তিন মাস ১৩ দিন পর তিনি মুক্তি পান।

এ ঘটনায় মোহাম্মদ আলী খান বিএনপি মহাসচিবের মাধ্যমে ন্যায়বিচার চেয়ে আবেদন করেন।

তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন ভুক্তভোগীর নাম উল্লেখ করে আবেদনটি করা হয় বলে জানান সালাহউদ্দিন খান।

সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, ভুক্তভোগীরা শেখ হাসিনাসহ ১৬ জন এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৩০ থেকে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন, শুধু বিএনপি করার অপরাধে বিগত সরকারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

মন্তব্য

সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনা প্রতিনিধি
শেয়ার
সোহাগের পরিবারের পাশে তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে পুরান ঢাকায় নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি। গতকাল রবিবার বিকেলে তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের সোহাগের গ্রামের বাড়িতে যান। তিনি স্থানীয় কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত সভায় বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তিনি নিহত সোহাগের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে তখন সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম মনি বলেন, এই এলাকার সন্তান ঢাকার মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগকে তাঁর ব্যাবসায়িক পার্টনার ও তাদের ভাড়াটেরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে। সম্পৃক্তদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপি কোনো অপকর্মকে প্রশ্রয় দেয় না। পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক চৌধুরী মো. ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সফিকুজ্জামান মাহফুজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ