ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৪ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭

ঢাকা, বুধবার ০৯ জুলাই ২০২৫
২৪ আষাঢ় ১৪৩২, ১৩ মহররম ১৪৪৭

রাজশাহীতে আবারও অস্ত্র কেড়ে পুলিশকে পেটাল শিবির

  • নিরুত্তাপ হরতাল চট্টগ্রাম নাটোর চাঁপাইনবাবগঞ্জে
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
রাজশাহীতে আবারও অস্ত্র কেড়ে পুলিশকে পেটাল শিবির
রাজশাহীতে হরতাল চলাকালে শিবিরকর্মীরা দুই পুলিশ সদস্যকে ধরে তাঁদের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে বেধড়ক পেটায়। ছবি : সালাহ উদ্দিন

রাজশাহীতে আবারও অস্ত্র কেড়ে নিয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররা। তাদের হামলায় আহত হয়েছেন আরো দুই পুলিশ সদস্য। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে হরতাল ও অবরোধের সমর্থনে রাস্তায় নামা শিবিরকর্মীরা নগরীর আলিফ লাম মীম ভাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটায়। পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা এসে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।

ঘটনার পর ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ছয়জনকে আটক করেছে।

আহতরা হলেন- নগরীর শাহমখদুম থানার এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৬), কনস্টেবল আমজাদ আলী (৩৫), শফিকুল ইসলাম (৩৪) ও জামাল উদ্দিন (৩৫)। এর মধ্যে শফিকুল ও আমজাদ গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২০ দলীয় জোটের ডাকা গতকালের হরতালে বড় ধরনের অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি। চট্টগ্রাম নগরীতে বিএনপির কোনো নেতাকর্মীকে মাঠে নামতে দেখা যায়নি।

রাজশাহী: প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, গতকাল সকাল ১০টার দিকে ছাত্রশিবিরের ৭০-৮০ জন নেতা-কর্মী নগরীর আলিফ লাম মীম ভাটা এলাকায় বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় শাহমখদুম থানা পুলিশের একটি পিকআপ বিজিবির সদর গেট হয়ে শাহমখদুম থানা মোড় এলাকার দিকে যাচ্ছিল।

গাড়িটি আলিফ লাম মীম ভাটা এলাকায় পৌঁছামাত্র শিবিরের নেতা-কর্মীরা গাড়িটিকে লক্ষ্য করে একটি পেট্রলবোমা ও বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে আতঙ্কিত হয়ে ওই গাড়ির চালক গাড়িটি দাঁড় করান। এ সময় পুলিশ সদস্যরা নেমে শিবিরকর্মীদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ও গাড়িটিতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে শিবির ক্যাডাররা। হামলায় দুই পুলিশ সদস্য মাটিতে পড়ে যান।
একপর্যায়ে তাঁদের ফেলে রেখেই অন্য সদস্যরা গাড়িটি নিয়ে পালিয়ে যান। এরপর মাটিতে পড়ে যাওয়া কনস্টেবল আমজাদ আলী ও শফিকুল ইসলামকে ঘিরে ধরে লাঠি ও তাঁদের হাতে থাকা শটগান কেড়ে নিয়ে পেটাতে শুরু করে শিবির ক্যাডাররা। এতে গুরুতর আহত হন ওই দুই পুলিশ সদস্য। ইটপাটকেলের আঘাতে আরো দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের বহনকারী গাড়িটির সামনের কাচ ভেঙে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজিবি সদস্য জানান, দুই পুলিশ সদস্যকে পেটানোর বিষয়টি টের পেয়ে তাঁদের টহল গাড়ি নিয়ে ওইদিকে যেতে থাকলে শিবিরকর্মীরা যে যার মতো পালিয়ে যায়। পরে বিজিবি সদস্যরা অস্ত্রসহ আহত দুই পুলিশ কনস্টেবল আমজাদ আলী ও শফিকুল ইসলামকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

আহত আমজাদ আলী জানান, পুলিশের গাড়ি দেখেই শিবির ক্যাডাররা বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে। এ সময় গাড়ি থেকে নেমে প্রাণরক্ষা করতে দৌড়াতে গিয়ে তাঁর মাথার হেলমেটটিও পড়ে যায়। তখন শিবিরকর্মীরা এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে।

আহত শফিকুল ইসলাম জানান, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই শিবির ক্যাডাররা গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা করে। এতে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ফলে গাড়ি থেকে নেমে পড়ামাত্রই আবার তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় ইট ও লাঠির আঘাতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, হামলায় আমজাদের মাথা ও বাম হাতে গুরুতর জখম হয়েছে। শফিকুলের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁদের দুজনের মাথায়ই সেলাই দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এসআই জাহাঙ্গীর ও কনস্টেবল জামাল উদ্দিনের হাতে-পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

নগর পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখারুল আলম জানান, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে।

এর আগে ২০১২ সালের ৬ নভেম্বর নগরীর সাহেববাজার এলাকায় বন্দুক কেড়ে নিয়ে শিবিরকর্মীরা পুলিশকে পিটিয়ে বন্দুক ভেঙে ফেলে। এরপর ২০১৩ সালের ১ এপ্রিল নগরীর শালবাগান এলাকায় অস্ত্র কেড়ে নিয়ে পুলিশের এসআই জাহাঙ্গীর হোসেনকে পিটিয়ে জখম করে শিবিরকর্মীরা। একই বছর শিবির ক্যাডাররা নগরীর মতিহার থানার ওসি আবদুল মজিদকে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়। ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর নগরীর রাজার হাতা এলাকায় পুলিশের ওপর বোমা হামলা চালানো হয়। এতে পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ নিহত হন। আহত হন আরো ১০ পুলিশ সদস্য।

এদিকে রাজশাহীর পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকায় ৫ জানুয়ারি সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার পর বানেশ্বরসহ আশপাশের এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সোমবার রাত ১২টা থেকে এই নির্দেশনা জারি হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক।

চট্টগ্রাম : উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীসহ নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গতকাল চট্টগ্রামে দলটি সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করলেও তাতে সাড়া ছিল না নগরবাসীর। হরতালের সমর্থনে নগরীর কোথাও কোনো মিছিল-সমাবেশ হয়নি। নগরীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচল ছিল অনেকটা স্বাভাবিক। অধিকাংশ মার্কেট ছিল খোলা। অফিস-আদালত এবং ব্যাংকে লেনদেন ছিল স্বাভাবিক। হরতাল চলাকালে চট্টগ্রাম থেকে দূরপাল্লার যানবাহন ছেড়ে না গেলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।

এদিকে নগরীর কাজীর দেউড়ি ও নূর আহম্মদ সড়ক এলাকায় সোমবার পুলিশের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জোট কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ওই রাতেই মহানগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেনসহ ৫০০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : শিবগঞ্জে গতকাল ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও ২০ দলীয় জোটের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ও অবরোধ পালনকালে সোনামসজিদ-চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়কে একটি ট্রাকে আগুন এবং সড়কে গাছ কেটে সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। তবে দুপুরে সড়কে ফেলা গাছ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরিয়ে দেয়। সোমবার শিবগঞ্জের কানসাটে গুলিতে এক বিএনপিকর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার হরতালের ডাক দেয় ২০ দলীয় জোট। সোনামসজিদ স্থলবন্দর এলাকায় খালি ও পণ্যবাহী কয়েক শ ট্রাক দুই দিন ধরে আটকে পড়ে আছে। গতকাল তেমন যান চলাচলও করেনি।

এদিকে সোমবার কানসাটের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। তিন মালায় ৩৫১ জনের নাম উল্লেখসহ অন্তত ৯ হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান শিবগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) চৌধুরী জোবায়ের আহম্মেদ।

নাটোর : তেবাড়িয়ায় সোমবারের সংঘর্ষে দুজন নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বিএনপির ডাকা গতকালের হরতাল ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। শহরে অটোরিকশা চলাচল ছিল স্বাভাবিক। তবে অবরোধের কারণে কোনো ভারী যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। সকালে হরতালের পক্ষে-বিক্ষোভ মিছিল বের হলে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই বিএনপিকর্মীদের বাধা দেয় পুলিশ। পরে দুপুরে আবার সংঘবদ্ধ হয়ে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে থেকে হরতালের পক্ষে একটি মিছিল বের করেন জেলা বিএনপি নেতারা। মিছিলটি দলীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশি বাধার মুখে পড়লে সেখানেই মিছিলটি শেষ হয়।

অন্যদিকে হরতালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন। দুপুর ১২টার দিকে নাটোর প্রেসক্লাবের সামনে থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের নেতৃত্বে দলের নেতা-কর্মীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রেসক্লাবের সামনে ফিরে আসে। পরে তারা সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।

(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন : নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম; আঞ্চলিক প্রতিনিধি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর প্রতিনিধি)

 

 

 

মন্তব্য

ঘরে ঘরে জ্বর, আতঙ্ক ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া নিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ঘরে ঘরে জ্বর, আতঙ্ক ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া নিয়ে

রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁওয়ের বাসিন্দা ফারুক আহমেদ টানা তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন। ফার্মেসির ওষুধে জ্বর না কমায় তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। ফারুক জানান, প্রথমে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন, পরে তাঁর স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানও জ্বরে ভুগতে শুরু করে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের বহির্বিভাগে কথা হয় ফারুক আহমেদের সঙ্গে।

এ সময় সেখানে আরো অন্তত চারজনকে তাদের পরিবারের সদস্যদের জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার কথা বলতে শোনা যায়।

চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তন ও বাতাসে আর্দ্রতার ওঠানামার কারণে ভাইরাসজনিত জ্বর বাড়ছে। শিশুসহ সব বয়সী মানুষ এতে আক্রান্ত হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল এবং চিকিৎসকের চেম্বারে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।

বেশির ভাগ রোগীর শরীরে কাঁপুনি, গায়ে ব্যথা, মাথাব্যথা, বমি, হাত-পায়ের গিরায় ব্যথা, ঠাণ্ডা, সর্দি ও নাক দিয়ে পানি পড়ার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।

সোমবার ও মঙ্গলবার রাজধানীর ডিএনসিসি হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি শিশু এখন জ্বর নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছে।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, একসঙ্গে বিভিন্ন ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। সাধারণ ভাইরাল জ্বরের পাশাপাশি ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও রোটা ভাইরাসও বাড়ছে।

উপসর্গে মিল থাকায় অনেকেই বুঝে উঠতে পারে না যে আসলে কোনটিতে আক্রান্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়া জরুরি। জ্বর, বমি বা পাতলা পায়খানার মতো উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে ডেঙ্গু ও কভিড পরীক্ষাও করাতে হবে। সময়মতো রোগ নির্ণয় হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

রাজধানীর শিশু হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি বলে জানান হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এ বি এম মাহফুজ হাসান আল মামুন। তিনি বলেন, এখন ভাইরাল জ্বরের মৌসুম চলছে। পাশাপাশি চলছে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মৌসুমও। বেশির ভাগ রোগী তীব্র জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, চোখ লাল হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, শরীরে র‌্যাশএসব উপসর্গ নিয়ে আসছে। অনেকের ডেঙ্গুর উপসর্গ থাকলেও পরীক্ষায় ধরা পড়ছে না।

 

জ্বর কেন হয়?

চিকিৎসকরা বলছেন, জ্বর নিজে কোনো রোগ নয়, এটি একটি উপসর্গ বা সতর্কবার্তা। সাধারণ ঠাণ্ডা বা সর্দিকাশির পাশাপাশি ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণে জ্বর হতে পারে। করোনাভাইরাস, ডেঙ্গু, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়াএসব রোগের প্রাথমিক লক্ষণ জ্বর। টিকা নেওয়া, টিউমার, ফোড়া, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, প্রস্রাবের সংক্রমণ, পিরিয়ড বা মানসিক চাপ থেকেও জ্বর হতে পারে।

ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, বাইরের প্রচণ্ড গরম থেকে ফিরে অনেকেই এসির নিচে চলে যায় বা ঠাণ্ডা পানি পান করে। এই গরম-ঠাণ্ডার তারতম্য থেকেই জ্বর-সর্দি হতে পারে। প্রতিটি পরিবারেই এখন মৌসুমি জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়া বন্যাকবলিত এলাকায় টাইফয়েড ও পানিবাহিত রোগও বেড়েছে।

ডা. লেলিন আরো বলেন, এসব জ্বর সাধারণত প্যারাসিটামল খেলেই সেরে যায়। অ্যান্টিবায়োটিকের দরকার পড়ে না। তবে জ্বর যদি সপ্তাহখানেকের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

সাধারণ জ্বর কিভাবে বুঝব?

বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. ফজলে রাব্বি চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, আগে কভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে জ্বরের সঙ্গে কাশি, গন্ধ না পাওয়া, শ্বাসকষ্ট দেখা যেত। এখন অনেক কভিড রোগীও গায়ে ব্যথা ও মাথাব্যথার উপসর্গ নিয়ে আসছে। তাই পরীক্ষা ছাড়া রোগ নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ডা. ফজলে রাব্বি আরো বলেন, ডেঙ্গুতে সাধারণত মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, পেট ব্যথা ও পাতলা পায়খানা হয়। অন্যদিকে চিকুনগুনিয়ায় গায়ে বেশি ব্যথা, বিশেষ করে জয়েন্টে ব্যথা ও দ্রুত র‌্যাশ দেখা দেয়। সাধারণ ভাইরাল জ্বরে হালকা গায়ে ব্যথা ও সর্দিকাশি হয় এবং তা চার দিনের মধ্যে সেরে যায়। চার দিনের বেশি জ্বর থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

মন্তব্য

জুলাই ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জুলাই ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর

রাজধানীর শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজন গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বারডেম হাসপাতালের পাশের ওই কার্যালয়ের কক্ষে ভাঙচুর চালান।

সূত্র জানায়, হামলার শুরুতে তাঁরা প্রথমে ওই কার্যালয়ে তালা লাগান। পরে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সেখানে ভাঙচুর করা হয়।

২০ থেকে ২৫ জন জুলাই যোদ্ধা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। হামলাকারীদের অভিযোগ, দ্বিতীয় ধাপের টাকা দেওয়ার কথা বলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজনকে তিন-চারবার ঘোরানো হয়েছে। টাকা দেওয়ার তারিখ দিয়েছিল গতকাল। 

তবে রাতে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর জানান, টাকা না পেয়ে আহতরা ক্ষুব্ধ হয়ে অফিসে তালা লাগিয়ে দেন।

ফাউন্ডেশনের একজন কর্মচারী খারাপ আচরণ করলে সেখানে ভাঙচুর করা হয় বলে আহতদের কয়েকজন জানিয়েছেন।

ভাঙচুরের পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অনেক চেয়ার এলোমেলো পড়ে আছে। পানির ফিল্টার ও তিনটি দরজার গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়েছে। মেঝেতে কাচের টুকরা ছড়িয়েছিটিয়ে আছে।

গত বছর আন্দোলনে গিয়ে আহত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত চিকিৎসাধীন জানিয়ে মামুন হোসেন নামের একজন বলেন, আমার মাথার ভেতরে গুলি, ১১ মাস যাবৎ চিকিৎসাধীন। আমাদের জীবনের নিশ্চয়তা কী? তো কিসের জুলাই ফাউন্ডেশন?

সাভার সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আহত নাজমুল হোসেন বলেন, দ্বিতীয় ধাপের টাকার জন্য সাত মাস ধরে ঘুরছি। টাকা দেওয়া হচ্ছে না। জুলাই ফাউন্ডেশনের সিইও বারবার ডেট দিয়ে আমাদের টাকা দিচ্ছেন না।

জানতে চাইলে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল আকবর বলেন, জুলাই আহতদের অনেকে এখনো মানসিক ট্রমার মধ্যে আছেন।

তাঁদের রাগের একটা প্রেক্ষাপট আছে। তাঁদের বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই। তাঁরা ভেঙেছেন, তাঁরা উত্তেজিত, অবসাদগ্রস্ত। তাঁরা ভবিষ্যতে কী করবেন, সেটি নিয়ে হতাশার মধ্যে আছেন। সে কারণে তাঁরা হয়তো ভাঙচুর করেছেন।

এই ফাউন্ডেশনে সাত কোটি টাকা আছে জানিয়ে কামাল আকবর বলেন, ধারাবাহিকভাবে আহত ও শহীদ পরিবারগুলোকে অনুদান দেওয়ার চেষ্টা করছি। তা ছাড়া আহতদের তালিকা থেকে ৩৯ জন ভুয়া আহতকে বাদ দিতে এবং শহীদদের তালিকা থেকে চারজনের নাম বাদ দিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

মন্তব্য
প্রধান নির্বাচন কমিশনার

নির্বাচনের তারিখ আমি নিজেই জানি না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
নির্বাচনের তারিখ আমি নিজেই জানি না

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন এখনো জানেন না। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। পরে বিকেলে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ডেমোক্রেসি (আরএফডি) আয়োজিত ফল উৎসব ও সাংবাদিক অ্যাকসেস কার্ড প্রদান অনুষ্ঠানেও তিনি একই কথা বলেন।

এ ছাড়া সিইসি সাংবাদিকদের জানান, আগামী নির্বাচনে ভোটের প্রচারে এআইয়ের অপব্যবহার রোধ করতে চায় নির্বাচন কমিশন।

এ ছাড়া গত তিনটি বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষক গ্রহণযোগ্য বলে সাফাই গেয়েছিলেন, সেসব পক্ষপাতদুষ্ট পর্যবেক্ষককে এবার অনুমোদন দেওয়া হবে না। নির্বাচন কমিশন ভোটের প্রচারে এআইয়ের অপব্যবহারও রোধ করতে চায়।

নির্বাচন ভবনে কানাডার হাইকমিশনারের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টার সাক্ষাৎ শেষে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, মিসইউজ অব এআই আমাদের জন্যও হুমকি। এ বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে কানাডা।

কারণ কানাডার গত বছরের নির্বাচনেও তাদের এটা মোকাবেলা করতে হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আমরা তাদের পরামর্শ চেয়েছি। এ বিষয়ে আমরাও বেশ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। আশা করি, বিভিন্ন দেশের মতো কানাডার পূর্ণ সহায়তা পাব।
আমরা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কনফিডেন্ট।

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, এ পর্যন্ত আমাদের বিভিন্ন সেক্টরে যে প্রস্তুতি নিয়েছি, আগামী নির্বাচনে আমরা ঠিকমতো ডেলিভার করতে পারব কি না সে বিষয়গুলো জানতে চেয়েছেন তাঁরা। আমাদের প্রস্তুতির বিষয়টা বিস্তারিত জানিয়েছি। বিশেষ করে দেশজুড়ে ভোটার সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করতে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছি। ভোটার সচেতনতা ক্যাম্পেইনের পাশাপাশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ, এজেন্টদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক কাজে কানাডা পাশে থাকবে বলে জানিয়েছে।

সিইসি বলেন, কানাডা আমাদের সহায়তার জন্য প্রস্তুত এবং আমাদের আলোচনা অব্যাহত থাকবে। তারা চায় যে ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ইলেকশন যেন হয়। আমাদের ভোটার নিবন্ধনে নারীদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছে, পার্বত্য এলাকায় ভোটার সচেতনতামূলক কাজের বিষয়ে জানতে চেয়েছে। আমাদের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছি।

নির্বাচন কবে বা ভোটের সম্ভাব্য সময়সীমা বিষয়ে কানাডার হাইকমিশনার জানতে চেয়েছেন কি নাসাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, উনি জানতে চেয়েছেন ভোটের স্পেসিফিক ডেট হয়েছে কি না। আমি বলেছি নো। সময়সীমা নিয়ে কোনো আলাপ হয়নি। সময়সীমা সম্পর্কে আপনারা যা জানেন, আমিও তাই জানি। যেদিন ভোট হবে, তার দুই মাস আগে আমি জানিয়ে দেব।

নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আসার বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অবজারভার হিসেবে কাজ করার জন্য জিজ্ঞেস করেছি। নীতিমালাও প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। ইইউকে বলা হয়েছে, আগেই যেন জানিয়ে রাখা হয়। তাদের ২৮টি দেশের অবজারভারকে সমন্বয় করে পাঠাতে হবে, এ জন্য আগেভাগে স্বাগত জানিয়েছি।

পক্ষপাতদুষ্ট বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অনুমোদন দেওয়া হবে না বলেও জানান সিইসি। তিনি বলেন, গত তিনটি নির্বাচনকে যাঁরা সার্টিফিকেট দিয়েছেন তাঁদের (অনুমোদন) দেব কেন? যেসব পর্যবেক্ষক গত তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন খুব সুন্দর হয়েছে বলে সার্টিফিকেট দিয়েছেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে বলেছেন, তাঁদের কি আমাদের নেওয়া উচিত? আমরা দেখে-শুনেই নেব। যাঁরা অভিজ্ঞ, ডিপেন্ডেবল, রিলায়েবল এবং বিভিন্ন দেশে নির্বাচন অবজার্ভ করেছেন, তাঁদের নেব। তিনটি নির্বাচনকে যাঁরা সার্টিফিকেট দিয়েছেন, তাঁদের কোনোমতেই নেওয়া হবে না।

বিকেলে আরএফইডির অনুষ্ঠানে সিইসি বলেন, আমরা বারবার প্রমাণ করেছি; ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পেরেছিলাম। এবারও পারব ইনশাআল্লাহ। আমাদের প্রশাসন, পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে বলব, মানুষের শ্রদ্ধা পুনরুদ্ধারের এটিই সময়। ভাবমূর্তি রক্ষা ও পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ এখন এসেছে।

সিইসি বলেন, ভোটের নির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে কমপক্ষে দুই মাস আগেই সব কিছু জানিয়ে দেওয়া হবে, কোন দিন ভোট, কোন দিন মনোনয়নএসবসহ।

গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে সিইসি বলেন, আমরা আজকে যা কিছু করছি, তা আপনাদের মাধ্যমেই দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। কানাডার হাইকমিশনারের সঙ্গে আজকে আলাপের সময় দেখি উনি (কানাডার হাইকমিশনার) সব জানেনভোটার রেজিস্ট্রেশন, ইউএনডিপির সহযোগিতা, ক্যামেরা, ল্যাপটপ সব কিছু। তার মানে আমাদের সংবাদগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে। এ জন্য আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সংবাদ পরিবেশনের সময় একটু সচেতন থাকবেন। দেখেছি অনেক সময় ভেতরে পজিটিভ রিপোর্ট থাকলেও হেডলাইন বা স্ক্রলে নেগেটিভ বার্তা থাকে। এতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হয়, মন খারাপ হয়। দয়া করে শিরোনাম, ক্যাপশন এমন দিন, যাতে মানুষ পজিটিভ বার্তা বুঝতে পারে।

তিনি বলেন, সাংবাদিকদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন কমিশন সাংবাদিকদের সরাসরি অংশগ্রহণে বিভিন্ন ওয়্যারনেস রেইজিং ক্যাম্পেইন চালু করবে। আমরা সাংবাদিকদের পার্টনার করে কাজ করতে চাই। সচেতনতামূলক প্রচারে আপনাদের যুক্ত করব। ২০১৮ সালের মতো অভিযোগ আর যেন না ওঠে। প্রশাসন, পুলিশ, প্রিজাইডিং অফিসার, সব কর্মকর্তাকে বলব, এটা ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের সময়। আরএফইডির সভাপতি কাজী এমাদ উদ্দীনের (জেবেল) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

মন্তব্য
মিডিয়াকে হুমকি

ক্র্যাব, অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ক্র্যাব, অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের উদ্বেগ

জুলাই আন্দোলনের এক নেতা কর্তৃক মিডিয়াকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) ও অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স।

অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের সভাপতি হাসান শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সোহেল গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ এবং গণতান্ত্রিক কাঠামোর এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। গণমাধ্যমের কোনো প্রতিবেদনে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার প্রতিকার পাওয়ার জন্য দেশে প্রেস কাউন্সিল ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। হুমকি বা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিসর সংকুচিত করা যাবে না।

অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মুক্ত মত প্রকাশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হুমকি কিংবা ভয় দেখানোর চেষ্টা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সংবিধান প্রদত্ত অধিকার লঙ্ঘনের শামিল, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এর আগে গত সোমবার ক্র্যাব কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল এবং সাধারণ সম্পাদক এম এম বাদশাহ এক বিবৃতিতে বলেন, মিডিয়াকে হুমকি দেওয়ার ঘটনা জুলাইয়ের চেতনার সঙ্গে মানানসই নয়। যেসব কারণে জুলাইয়ের রক্তক্ষয়ী ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিল, তার অন্যতম ছিল মত প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ।

মিডিয়াকে হুমকি দেওয়া সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে সহায়ক নয়।

বিবৃতিতে ক্র্যাব নেতারা বলেন, মিডিয়ার ভূমিকায় কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার প্রতিকারের জন্য প্রেস কাউন্সিল রয়েছে। প্রচলিত আইনের বিধি অনুযায়ী আদালতেও যাওয়া যায়। কিন্তু এই হুমকি দেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশের প্রতিবন্ধক বলে আমরা মনে করি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ